রবিবার সকালে প্রতিদিনের মত বিদ্যালয়ের যাচ্ছিলেন ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার মহব্বতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণীর শিক্ষার্থী রোহান (৬)। বাসা থেকে বের হয়ে বান্দুরা বাসস্ট্যান্ড ঘুরে বিদ্যালয়ে যাওয়ায় সময় সিএনজি ধাক্কায় গুরুত্বর আহত হয় সে। দ্রæত তাকে উপজেলার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নিয়ে যেতে বলেন। কিন্ত রোহানের পরিবার অর্থের অভাবে ছেলেকে ঢাকা নিতে না পেরে বাড়িতে নিয়ে যান। খবর পেয়ে শিশু শিক্ষার্থীর পাশে দাঁড়ান নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুল হাসান সোহেল। ইউএনও’র আর্থিক সহায়তায় রোহানকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। আহত রোহান মহব্বতপুর গ্রামের শাকিল আহমেদ এর ছেলে।
নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুল হাসান সোহেল জানান, রবিবার সকালে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমাকে জানান যে একজন শিক্ষার্থী স্কুলে যাওয়ার সময় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে। তখন আমি ছেলেটিকে দেখতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যেতে চাইলে জানতে পারি ছেলেটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যেতে বলেছেন চিকিৎসকরা। কিন্ত অর্থের অভাবে রোহানের পরিবার তাকে ঢাকা না নিয়ে বাসায় নিয়ে যায়। আমি সাথে সাথে রোহানের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করি এবং এ্যাম্বুলেন্স করে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করার ব্যবস্থা করি। পাশাপাশি হাসপাতালে গিয়ে ছেলেটির খোঁজখবর নিয়ে তার বাবাকে আর্থিক সহায়তা করে উন্নত চিকিৎসা করার জন্য ঢাকা পাঠানোর ব্যবস্থা করি। পরে চিকিৎসকরা তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজে প্রেরণ করেছেন।
অসহায় শিক্ষার্থীর চিকিৎসায় ইউএনও এভাবে এগিয়ে আশায় প্রশংসা করেছেন সুশীল সমাজ। নবাবগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি খালিদ হোসেন সুমন বলেন, একজন অসহায় শিক্ষার্থীর পাশে যেভাবে ইউএনও দাঁড়ালেন সেটা অবশ্যই প্রশংসনীয়। আমাদের বর্তমান সমাজে এটা উদাহরণ হয়ে থাকবেন। ইউএনও কামরুল হাসান সোহেল উদ্যোগ না নিলে অর্থের অভাবে হয়তো ছেলেটা সঠিক চিকিৎসা পেতেন না। সবারই উচিত নিজ নিজ জায়গা থেকে এভাবে অসহায়দের পাশে দাঁড়ানো।
আহত রোহানের বাবা শাকিল আহমেদ বলেন, দুর্ঘটনা তো দুর্ঘটনাই। এব্যাপারে আমার কোন অভিযোগ নেই। আর্থিকভাবে আমি অস্বচ্ছল। তাই অর্থের অভাবে ছেলেটার চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হতো। ইউএনও স্যার আমার ছেলেটার পাশে দাঁড়িয়েছেন। আমি তার প্রতি কৃতজ্ঞ। দোয়া করবেন আমার ছেলেটা যেন দ্রæত সুস্থ হয়ে উঠে।
এরআগে রোহানকে হাসপাতালে দেখতে যান নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল হাসান সোহেল। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ শহিদুল ইসলাম, ডাক্তার মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ, নবাবগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ হাসান আহমেদ, নবাবগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি খালিদ হোসেন সুমন, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী রাশেদ মামুন ও সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ মুখলেছুর রহমান।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.