1. news@priyobanglanews24.com : PRIYOBANGLANEWS24 :
শুক্রবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৫:৪৯ পূর্বাহ্ন

আতঙ্কে পদ্মার জেলেরা: জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে বজ্রপাতে আহত রাকিব

রাশিম মোল্লা
  • আপডেটের সময় : সোমবার, ১ মে, ২০২৩
  • ৫৫২ বার দেখা হয়েছে।

গত শনিবার বিকাল ৪টা-৫টা। হঠাৎ আকাশে কালো মেঘ। সবাই যে যার মতো নৌকার ছাউনিতে আশ্রয় নেয়। কিন্তু রাকিব তার নৌকাটি নিরাপদে রাখতে গিয়ে বজ্রপাতে পতিত হয়। নিমিষেই চিৎকার দিয়ে আমার ছেলে পড়ে যায়। ওর সঙ্গে যারা ছিল তারা ওকে দ্রুত পদ্মা থেকে নিয়ে আসে। দেখি ছেলের পুরো শরীর পুড়ে গেছে। নাক দিয়ে রক্ত পড়ছে। এরপর দ্রুত নিয়ে যাই হাসপাতালে। কান্নাজড়িত কণ্ঠে এসব কথা জানান আহত রাকিবের পিতা আব্দুল জলিল মিয়া।

এলাকাবাসী জানায়, রাকিব হোসেন পদ্মায় মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে। ঢাকার দোহারের নয়াবাড়ী ইউনিয়নে পানকুন্ডু গ্রামে তার বাড়ি। গত শনিবার মাছ ধরতে গিয়ে তার থেকে কিছু দূরে বজ্রপাত হয়। আর এতেই তিনি আক্রান্ত হন। শরীরের ২৫ শতাংশ পুড়ে গেছে। এ ঘটনায় তাকে প্রথমে দোহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লক্স্ে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে বেগতিক দেখে চিকিৎসকরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। এখন তিনি প্রি-আইসিউতে চিকিৎসাধীন আছে। মাঝে মধ্যে একটু আধটু কথা বলছেন। বাকি সময় জ্ঞান হারা থাকেন। এ ঘটনায় পদ্মায় মাছ ধরা জেলেদের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।

রাকিবের বাবা আব্দুল জলিল বলেন, আমরা গরিব মানুষ। পেটের দায়ে ছেলে মাছ ধতে গেলে এই অবস্থা হয়। পদ্মায় এর আগের দিন বজ্রপাত হয়। ওইদিন কেউ আহত হয়নি। পদ্মায় শতাধিক জেলে মাছ ধরে। শনিবার আমার ছেলে আহত হওয়ার পর সবার মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

বজ্রপাত সচেতনতায় কাজ করা সংগঠন সেভ দ্য সোসাইটি অ্যান্ড থান্ডারস্টর্ম অ্যাওয়ারনেস ফোরাম (এসএসটিএএফ) এর সভাপতি ড. কবিরুল বাশার মানবজমিনকে বলেন, বজ্রপাত রোধে সারা দেশে মাঠে মাঠে বজ্রনিরোধক টাওয়ার নির্মাণ করতে হবে। প্রচুর উঁচু গাছ রোপণ করতে হবে। আর হাওর অঞ্চলে যেহেতু বজ্রপাত বেশি হয়, সেখানে প্রচুর ছাউনির উপরে বজ্রপাত নিরোধক টাওয়ার নির্মাণ করতে হবে। এ ছাড়া বজ্রপাত নিয়ে মানুষের মধ্যে আরও বেশি সচেতনতা তৈরি করতে পাঠ্যপুস্তকে এ বিষয়ে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

তিনি বলেন, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গবেষণায় দেখা গেছে বাংলাদেশে প্রতিবছর গড়ে ৮৪ লাখ বজ্রপাত হয়, যার ৭০ শতাংশই হয় এপ্রিল থেকে জুনে। বজ্রপাতে মৃত্যুর ঘটনাগুলোর ৭০ শতাংশই ঘটছে কৃষিকাজের সময় এবং মারা যাওয়া ব্যক্তিদের প্রায় ৭০ শতাংশই কৃষক। মৃত্যুর ঘটনাগুলোর সাড়ে ১৪ শতাংশ হয় বাড়ি ফেরার পথে এবং ১৩ শতাংশ গোসল কিংবা মাছ ধরার সময় জলাশয়ে। বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবের কারণে বজ্রপাতে মৃত্যুর ঘটনা প্রতিনিয়ত বাড়ছে।

এখান থেকে আপনার সোস্যাল নেটওয়ার্কে শেয়ার করুন

Leave a Reply

ক্যাটাগরির আরো খবর