সামান্য বৃষ্টিতেই পানিতে তলিয়ে যায় পুরো এলাকা। ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় বছরের তিন থেকে চারমাস পানিবন্দি হয়ে থাকে ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার হাসনাবাদ গ্রামের ৬/৭ হাজার মানুষ। পানিই যেন নিত্যসঙ্গী স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবনে। প্রয়োজনীয় কাজকর্ম করতে ঘরের বাইরে বের হতে হলে পানি মাড়িয়ে যেতে হয় তাদের। জলাবদ্ধতার কারনে রোগী পরিবহন থেকে শুরু করে মালামাল আনা নেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। অন্যদিকে পানিবাহিত রোগে ভুগছেন অনেকে।
এলাকাবাসী জানান, হাসনাবাদ এলাকায় খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের মানুষের বসবাস অনেক আগে থেকেই। প্রবাসীবহুল এলাকাটির মানুষের জীবনযাত্রার মান আগে থেকেই বেশ উন্নত তবে সেই তুলনায় উন্নয়ন হয়নি এলাকার রাস্তাঘাটের। বর্তমানে স্থানীয়দের স্বাভাবিক জীবনযাপনে প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে রাস্তাঘাট। রাস্তাঘাটের বেহাল অবস্থার কারনে বাঁধাগ্রস্থ হচ্ছে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড। সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যায়। অধিকাংশ রাস্তাঘাটা কাঁচা ও নিচু হওয়ায় বছরের অধিকাংশ সময় পানিতে তলিয়ে থাকে। হাসনাবাদ জপমালা র্গিজার পাশ্ববর্তী এই এলাকাতেই রয়েছে মাদার মেরি ও সেন্ট যোসেফ নামে দুইটি কিন্ডারগার্টেন, একটি ক্যাটারিং ট্রেনিং সেন্টারসহ রয়েছে অন্যান্য একাডেমিক প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানের যাতায়াতের রাস্তাগুলো পানিতে নিমজ্জিত থাকায় ইচ্ছা থাকায় সত্ত্বেও অনাগ্রহ দেখা যাচ্ছে ভর্তিইচ্ছুরা। বছরের অন্তত চারমাস বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে থাকে রাস্তাগুলো।
এলাকার বাসিন্দারা অভিযোগ করে বলেন, বর্র্ষা মৌসুম শুরু হলে বিভিন্ন আশ্বাস দেন জনপ্রতিনিধিরা। পরে আর কোন খবর থাকে না তাদের। এছাড়া নির্বাচন আসলে প্রার্র্থীরা মিথ্যা প্রতিশ্রুতি আর আশ্বাস দিলেও পরবর্র্তীতে আর দেখা যায় জনপ্রতিনিধিদের। রাস্তা উঁচু কিংবা পয়ঃনিস্কাশনের জন্য ড্রেন নির্র্মাণ করা হলে জলাবদ্ধতার হাত থেকে প্রতিকার মিলবে বলে জানান তারা।
হাসনাবাদ গ্রামের বাসিন্দা প্রনয় আনজুস বলেন, শত শত পরিবারের বসবাস সত্ত্বেও জলাবদ্ধতার হাত থেকে মুক্তির জন্য এগিয়ে আসছে না কেউ। জনপ্রতিনিধিদের কাছে আমাদের প্রাণের দাবি এই দুর্র্ভোগ থেকে আমাদের রক্ষা করুন।
কালিপদ বিশ্বাস জানান, জলাবন্ধতার কারনে এখানকার বাসিন্দারা সপ্তাহে একদিন গির্র্জায়ও যেতে পারছে না। এছাড়া দিনে একাধিকবার পানি পায়ে মাড়িয়ে যাওয়ায় পানিবাহিত রোগে ভুগছেন অনেকে।
একই এলাকার এক গৃহবধূ বলেন, আমরা খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের অনেকে রবিবার নামাজেও (গির্জায় প্রার্থনায়) যেতে পারি না। আজও সকালে নামাজে যেতে নতুন পোশাক পরে ঘুরেছি, কিন্ত পানির কারনে যেতে পারি নাই।
স্থানীয় এক ক্যাটারিং ব্যবসায়ী বলেন, এলাকাটি প্রধান সড়কের তুলনায় নিচু। ফলে সামান্য বৃষ্টি হলেই আমরা প্রায় ৬/৭ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে থাকি। অথচ পানি নিষ্কাষণের জন্য একটি ড্রেন নির্মাণের উদ্যোগ নিলেও তা অসম্পূর্ণ। ড্রেনের মুখটা বন্ধ থাকায় পানি বের হতে পারছে না। যাদের দায়িত্ব নেওয়ার কথা তারাও কোন দায়িত্ব নিচ্ছে না।
এ বিষয়ে বান্দুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. হিল্লাল মিয়া বলেন, হাসনাবাদের খালগুলো ভরাট হয়ে যাওয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। হাসনাবাদে জলাবদ্ধতার বিষয়টি উপজেলা প্রকৌশলীকে অবগত করা হয়েছে। এক মাসের মধ্যে প্রকল্প করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠানো হবে।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.