1. news@priyobanglanews24.com : PRIYOBANGLANEWS24 :
বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৩১ অপরাহ্ন

সামুদ্রিক খাদ্য শিল্প শ্রমিকদের জন্য একটা উন্মুক্ত প্ল্যাটফর্ম দরকার: শিরীন আখতার

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : শুক্রবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
  • ২৬৯ বার দেখা হয়েছে

সামুদ্রিক খাদ্য শিল্প শ্রমিকদের জন্য একটা উন্মুক্ত প্ল্যাটফর্ম দরকার, যেখানে দাঁড়িয়ে তাঁরা অধিকারের কথা বলতে পারবেন বলে মন্তব্য করেছেন জাসদের সাধারণ সম্পাদক সংসদ সদস্য শিরীন আখতার। তিনি বলেন, ‘নারী শ্রমিকের সমস্যা আর নারীর সমস্যা দুটো আলাদা ব্যাপার। এখানে নারীরাও যেমন নির্যাতিত হন, তেমনি নারী শ্রমিকরাও কাজ করতে গিয়ে নানা নির্যাতনের স্বীকার হন। সামুদ্রিক খাদ্য শিল্প শ্রমিকেরা জানে না তাদের জন্য আরও কত সুন্দর পৃথিবী দাঁড়িয়ে আছে।’

বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর ফার্মগেটে ডেইলি স্টার ভবনের এ এস মাহমুদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সামুদ্রিক খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প শ্রমিকদের ওপর গবেষণার ফলাফল নিয়ে আলোচনা সভায় ফেনী-১ আসনের সংসদ সদস্য শিরীন আখতার এসব কথা বলেন। ক্রিশ্চিয়ান এইডের আর্থিক সহযোগিতায় এর আয়োজন করে উন্নয়ন সংগঠন কর্মজীবী নারী। সংগঠনের সহসভাপতি উম্মে হাসান ঝলমলের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন তিনি।

সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন নিম্নতম মজুরি বোর্ডের চেয়ারম্যান ও সিনিয়র জেলা জজ লিয়াকত আলী মোল্লা, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (বাজেট অধিশাখা) মোছা. হাজেরা খাতুন, শ্রম অধিদপ্তরের উপপরিচালক (উন্নয়ন, পরিকল্পনা ও পরিসংখ্যান শাখা) রোখসানা চৌধুরী, ক্রিশ্চিয়ান এইডের প্রোগ্রাম ম্যানেজার (ইকোনমিক জাস্টিস) নুজহাত জাবিন।

শ্রমিক নেত্রী শিরীন আখতার বলেন, ‘সামুদ্রিক খাদ্য শিল্প শ্রমিকদের জন্য একটা উন্মুক্ত প্ল্যাটফর্ম দরকার, যেখানে দাঁড়িয়ে তাঁরা অধিকারের কথা বলতে পারবেন। আজ আলোচনায় চিংড়ি শিল্পের ওপর ফোকাস হয়েছে। কিন্তু আমি মনে করি, ২০ বছর পরে অনেক পরিবর্তন হবে। আমরা সমুদ্রসীমা জয় করেছি, ফলে সুযোগ অনেক বেড়ে গেছে। তাই এই শিল্প অনেক প্রসারিত হবে। এখানে যারা কাজ করেন, তাঁদের পাশে দাঁড়ানো দরকার। পুরো মৎস্য প্রক্রিয়াজাতকরণের ওপর আমাদের ফোকাস করতে হবে। জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ২০ হাজার টাকা করার দাবি বহুদিন থেকে উত্থাপিত হচ্ছে। ন্যূনতম মজুরির ওপর লড়াইটা চালিয়ে যেতে হবে।’

মজুরি বোর্ড সব সময় শ্রমিকের পক্ষেই কাজ করবে বলে জানিয়েছেন নিম্নতম মজুরি বোর্ডের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী। তিনি বলেন, ‘সামুদ্রিক খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণের মধ্যে চিংড়িকে আমরা মজুরি বোর্ডের অন্তর্ভুক্ত করেছি। এই বোর্ড মালিক ও শ্রমিকের দাবিনামা নিয়ে আলোচনা ও দর-কষাকষি করে। যে হারে বাজার মূল্য বেড়েছে, সে হারে মানুষের আয় কমেছে। শ্রমিকের অবস্থা খুব খারাপ, এটা বুঝতে পারছি। এরপর মজুরি ইস্যুতে কথা উঠলে আমরা এই বিষয়গুলো তুলে ধরব।’

যুগ্ম সচিব হাজেরা খাতুন বলেন, ‘ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করলে অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। নারীরা পাচ্ছেন ৫০০ টাকা এবং পুরুষেরা পাচ্ছেন ৭০০ টাকা। এই বৈষম্য না করে বরং নারীকে দিয়ে অন্য কাজ করান, যেখানে তাদের কষ্ট কম হবে। শ্রম আইনে বলা হয়েছে, নারীর প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং সহানুভূতি দেখাতে হবে।’

রোখসানা চৌধুরী বলেন, ‘সামুদ্রিক খাতের সঙ্গে জড়িত নারীর সংখ্যা প্রায় ২ কোটি। এই শ্রমিকদের নিয়ে ট্রেড ইউনিয়ন করা গেলে ভালো হয়। শুধু কক্সবাজারে ছোট-বড় শ্রমিক কাজ করেন ১ লাখ ২০ হাজার। যারা ইনফরমাল শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন, তাঁরা অত্যন্ত খারাপ অবস্থায় আছেন। তাঁদের নিবন্ধন ও তালিকা করতে হবে। তাদের জন্য রেশনিং, বিমা ব্যবস্থা করতে হবে, দাদন ব্যবস্থা কমাতে হবে।’

সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজের অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন। সভা পরিচালনা করেন কর্মজীবী নারীর অতিরিক্ত নির্বাহী পরিচালক সানজিদা সুলতানা। সভায় আলোচক ছিলেন স্কপের যুগ্ম সমন্বয়ক চৌধুরী আশিকুল আলম, শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন, এনসিসিডব্লিউই-এর সদস্যসচিব নইমুল আহসান জুয়েল।

এ ছাড়াও বক্তব্য দেন স্কপ নেতা সৈয়দ শাহ্ মো. আবু জাফর, শাকিল আকতার, সাইফুজ্জামান বাদশা, আব্দুল ওহায়েদ, কামরুল আহসান, হামিদা খাতুন, শামিম আরা, নাহিদুল ইসলাম নয়নসহ বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতা ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা।

নইমুল আহসান জুয়েল বলেন, ‘মজুরি কোনো দয়া নয়, মজুরি কোনো ডাকাতিও নয়। দেশে সামুদ্রিক খাদ্য সংশ্লিষ্ট ১৮-২০টি কোম্পানি চালু আছে। কিন্তু সরকারি নথিতে এর পরিমাণ ১০৫টি। আমাদের কাছে রিপোর্ট আছে, এই মালিকেরা এই ফ্যাক্টরিকে দেখিয়ে ব্যাংক লোন নিয়ে অন্য ব্যবসা করছেন। ফলে শ্রমিকেরা কাজ হারিয়েছেন।’ 

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন

Leave a Reply

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ