ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলায় গরু ছাগলের হাটের ইজারা নিয়ে হাটের নির্ধারিত স্থানে বাৎসরিক চুক্তিতে বেশ কয়েকটি দোকান ভাড়া দিয়ে ভাড়া আদায় করছেন ইজারাদার।
এছাড়াও দোকানের অবস্থান বরাদ্দ দেওয়ার নামে বড় অঙ্কের অর্থ আদায় করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে ইজারাদারের বিরুদ্ধে।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার বারুয়াখালী ইউনিয়নের বারুয়াখালি বাজার এলাকায় গরু ছাগলের হাটের ইজারা নিয়ে এমন বাণিজ্য করছেন ওই ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ও বাজার কমিটির নবনির্বাচিত সভাপতি মো. তৌহিদ ভূঁইয়া।
সরজমিনে গিয়ে জানা ও দেখা যায়, বারুয়াখালিতে সাপ্তাহিক হাটের দিন শুক্রবার নির্ধারণ করা থাকলেও বেশ কয়েক বছর ধরে হাটে গরু ছাগল বিক্রির জন্য নির্ধারিত স্থানে সারাবছরের জন্য গড়ে তোলা হয়েছে হোটেল, রেস্টুরেন্ট, চটপটি, ফার্নিচার, চা, পিঠা ও কাঠের দোকান। এক সময় এই হাট জমজমাট থাকলেও বর্তমানে সাপ্তাহিক হাটে ব্যবসায়ীরা গুটি কয়েক ছাগল নিয়ে আসলেও কুরবানীর ঈদ ছাড়া গরু বিক্রেতারা আসেন না। এজন্য গরু ছাগল বিক্রির জন্য হাটে জায়গা রাখা হয়েছে খুবই সীমিত। হাটের প্রায় ৮০ ভাগ জায়গা জুড়ে গড়ে তোলা হয়েছে অন্তত ১৮টি ছোট বড় অস্থায়ী দোকান।
এছাড়াও হাটের পশ্চিম প্রান্তে বেশ জায়গা ভাড়া নিয়ে সে জায়গায় ফেলে রাখা হয়েছে গাছের বড় বড় সারি। বেশ কয়েক বছর ধরে এভাবেই হাটের নির্ধারিত স্থানে বাৎসরিক চুক্তিতে চলছে এই দোকান বাণিজ্য।
সারাবছর এভাবে চললেও কুরবানির ঈদের আগের অন্তত সাতদিন বারুয়াখালি হাট তার প্রাণ ফিরে পায়। সেসময়ে দোকানিদের দোকান সরিয়ে নিয়ে জায়গা ছেড়ে দিতে হয়। তবে ঈদের পর আবার ওই সব দোকান বসলে একই চিত্র দৃশ্যমান হয়।
হাটে দোকান নেওয়া কয়েকজনের সঙ্গে কৌশলে কথা বলে জানা যায়, হাটের নির্ধারিত স্থানে বেশ কয়েক বছর ধরে তারা বাৎসরিক চুক্তিতে দোকান তোলে কুরবানির ঈদের সাতদিন ব্যতীত সারাবছর ব্যবসা করছেন। হাটের জায়গা ভাড়া নিয়ে যারা গাছের সারি রেখেছেন শুধু তারাই বাৎসরিক ভাড়া দেন ৩০ হাজার টাকা। এছাড়াও দোকানের আকারভেদে তাদের ৩ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত বাৎসরিক ভাড়া দিতে হয় ইজারাদারকে।
বর্তমানে হাটের ইজারাদার বারুয়াখালি ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মো. তৌহিদ ভূঁইয়াকে তারা এ ভাড়া পরিশোধ করেন। তার আগে হাটের ইজারাদার ছিলেন বাজারের সাবেক সভাপতি রেজাউল করিম রাজু। তার সময়ে তাকেও ভাড়া পরিশোধ করেছেন বলে জানান তারা।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক সচেতন মহলের কয়েকজন বলেন, গরু ছাগলের হাটের ইজারা নিয়ে হাটের নির্ধারিত জায়গায় সারাবছর বেআইনিভাবে দোকান ভাড়া দিয়ে বাণিজ্য করা অবশ্যই অন্যায়।
এ বিষয়ে জানতে হাটের বর্তমান ইজারাদার ও ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মো. তৌহিদ ভূঁইয়ার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো: মতিউর রহমানের সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, বিষয়টি আমি নিজে তদন্ত করে দেখবো। এছাড়াও এসিল্যান্ডকে বলবো তদন্ত করার জন্য। তদন্তে সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.