নতুন প্রযুক্তির কাছে হার মেনে গ্রামোফোন বা কলের গান বেশ কয়েক দশক আগেই বাঙালির জীবন থেকে বিদায় নিয়েছে। কিন্তু রেখে গেছে সংগীত-সংস্কৃতির অমূল্য সম্পদ, ঐতিহ্যের এক প্রাণময় ধারা। হারিয়ে যাওয়া এই গ্রামোফোন প্রায় ৬০ বছর ধরে যত্নে রেখেছেন ঢাকার দোহার উপজেলার সুতারপাড়া ইউনিয়নের বাসিন্দা আব্দুল আলী।
যুবক বয়সে প্রথম জীবিকার শুরুটা ছিলো কলের গান দিয়েই। ঐ সময়ে দোহারে প্রথম গ্রামোফোন ও মাইক ভাড়া দিয়ে শুরু করেন জীবিকা। ঝআজ কালের বিবর্তনে অর্থের অভাবে হারিয়ে যাচ্ছে তার এই ব্যবসা। সাউন্ড সিস্টেম ও অন্যদের আধুনিক সব যন্ত্রাংসের ব্যবহারের ফলে আব্দুল আলীকে খুব কম ডাকে মানুষ। টাকার অভাবে দোকান না দিতে পেরে নিজেই থাকার কোনরকম দোচালা ঘরেই রেখেছেন মাইক, নিজের হাতে তৈরি করেন ব্যাটারী। ঘরের ভেতরে থাকার পরিবেশ নেই বল্লেই চলে। দুই মেয়ের বিয়ে দিয়ে এখন তিনি ও তার স্ত্রী কোনমতে পার করছেন দিন। তবে স্বপ্ন দেখেন এখনো আব্দুল আলী। কিছুটা অর্থ পেলে হয়তো একটি দোকান নিয়ে বাড়াতে পারবেন ব্যবসার পরিধি। দিতে পারবেন একটি বসবাসের ঘর।
আব্দুল আলী জানান, জীবন যুদ্ধে অনেক অভিজ্ঞতা থাকলেও সততার সাথে অতিবাহিত করেছেন এতগুলো বছর। সংসারে টানাপোড়ন থাকলেও বিক্রি করেননি সখের গ্রামোফোন। এখনো এই গ্রামোফোন দিয়েই কোনরকমে চালাচ্ছেন তার জীবীকা। তিনি আরও বলেন, ওয়াজ মাহফিলসহ অন্যান্য সামাজিক অনুষ্ঠানে জন্য তার বাড়ি থেকেই ভাড়া দেন ব্যাটারী ও মাইক।
প্রতিবেশীরা জানান, আব্দুল আলীর জীবন যুদ্ধ অনেক আগে থেকেই দেখছেন তারা। শুরুতে তিনিই প্রথম গ্রামোফোন দিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গান শোনাতেন। এখন অর্থের অভাবে অনেকটা সংকোচিত তার ব্যবসা।
প্রতিবেশী স্থানীয় ইউপি সদস্য শিহাবুর রহমান বলেন, আব্দুল আলী সরকারিভাবে বয়স্কভাতা পেলেও তার ব্যবসা পরিচালনার জন্য দরকার আরও অর্থ। তাহলে হয়তো ঘুরে দাড়াঁবে আব্দুল আলী।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.