ঘড়ির কাটায় তখন রাত পৌনে এগারোটা। দোহারের পদ্মানদীর তীরবর্তি মৈনটঘাটে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোবাশ্বের আলম, সাথে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা লুৎফুন্নাহার। এরই মধ্যে উপস্থিত দোহার থানা অফিসার ইনচার্জ মোস্তফা কামালের নেতৃত্বে চরমাহমুদপুর পুলিশ ফাঁড়ির এসআই অমিত হাসান, সঞ্জয় মালো সহ ১৫/২০ জনের পুলিশ সদস্যরা। সব মিলিয়ে অন্তত ৩৫ জনের একটি টিম। সবার উদ্দেশ্য ও চিন্তা ভাবনা এক। রাষ্ট্রের মুল্যবান মৎস্য সম্পদ মা ইলিশ রক্ষায় সরকারের মহৎ উদ্দেশ্যকে বাস্তবায়ন করতে রাতের এ যৌথ অভিযান। সবাই যখন একে একে উপস্থিত, এবার পদ্মানদীতে যাবার পালা। মৎস্য অধিদপ্তর কর্তৃক প্রদানকৃত একটি স্পীডবোট সাথে বড় একটি ট্রলার। দুইভাগে বিভক্ত হয়ে পদ্মানদীর চরাঞ্চল ঘিরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে শুরু হয় অভিযান।
রাত তখন সোয়া বারোটা, পদ্মা নদীর নারিশা জোয়ার এলাকায় পদ্মা নদীর তীরে চোখে পড়ে বেশ কিছু নৌকা। পাশেই বিছিন্নভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে অন্তত অর্ধশতাধিক মাছ শিকারিরা। প্রশাসনের উপস্থিত টের পেয়ে নৌকা ও মাছ ধরার সরঞ্জাম রেখে পালিয়ে যায় তারা। পুলিশ তাদের চরের মধ্যে নেমে ধাওয়া করলেও কাউকে আটক করা যায়নি।
গত ৭ অক্টোবর থেকে ২৮ অক্টোবর মা ইলিশ রক্ষায় নদীতে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন সরকার। এরই ধারবাহিকতায় বিগত কয়েকদিন যাবত দোহারের পদ্মা নদীর ৩২ কিলোমিটার জুড়ে মা ইলিশের প্রজনন নিশ্চিত করতে নদীর গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় রাতদিন চলছে উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা মৎস্য অফিস, থানা পুলিশ, নৌ পুলিশের যৌথ অভিযান।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জানান, মৎস্য অভিযানে বিগত ৬দিনে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ শিকারের অপরাধে ১৫ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড, ৩ লাখ ৩০ হাজার মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়েছে। এছাড়া ১২০ কেজি মাছ জব্দ করে তা বিভিন্ন এতিমখানা ও মাদ্রাসায় বন্টন করা হয়।
দোহার থানা অফিসার ইনচার্জ মোস্তফা কামাল জানান, মৎস্য সম্পদ রক্ষার্থে সরকারের মহৎ উদ্দেশ্যকে সফল করতে পুলিশ বদ্ধপরিকর।
মা ইলিশ রক্ষায় অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোবাশ্বের আলম।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.