হলফনামায় তথ্য গোপন করায় ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান তাবির হোসেন খান পাভেলকে অপসারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে স্থাণীয় সরকার বিভাগ।
রবিবার (৪ এপ্রিল) স্থানীয় সরকার বিভাগের (উপজেলা-২) উপসচিব মোহাম্মদ সামছুল হক স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের পদটি শূন্য ঘোষণা করা হয়।
নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এইচ এম সালাউদ্দীন মনজু মুঠোফোনে রবিবার বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, এব্যাপারে আমরা স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে একটি চিঠি পেয়েছি। পরবর্তী উপনির্বাচনের ব্যাপারে মন্ত্রণালয় ও নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নিবে।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান তাবির হোসেন খান (পাভেল) আদালত কর্তৃক দন্ডিত হওয়ায় এবং হলফনামায় তথ্য গোপন ও মিথ্যা তথ্য প্রদানের বিষয়টি বিভাগীয় কমিশনারের তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় উপজেলা পরিষদ আইন-১৯৯৮ [উপজেলা পরিষদ (সংশোধন) আইন, ২০১১ দ্বারা সংশোধিত] এর ১৩(২) ধারা এবং উপজেলা পরিষদ সদস্য ও মহিলা সদস্যদের (অপসারণ, অনাস্থা ও পদ-শূন্যতা) বিধিমালা, ২০১৬ মোতাবেক তাকে স্বীয় পদ হতে অপসারণ করে পদটি শূন্য ঘোষণা করা হলো।
জানা যায়, উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান তাবির হোসেন খানের বিরুদ্ধে অপহরণ, চাঁদাবাজি ও মারধরের অভিযোগে ২০০৯ সালের ২৪ আগস্ট নবাবগঞ্জের আলগীরচরের টিম নেটওয়ার্ক নামের ডিশ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালক মুনসুর আলী মামলা করেন। তাবির হোসেনসহ ১১ জনকে আসামি করে নবাবগঞ্জ থানায় ওই মামলা করা হয়। পরে ২০০৯ সালের ১৩ অক্টোবর তাবির হোসেনসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন উপপরিদর্শক (এসআই) রাকিবুল হক।
এ ছাড়া ২০০১ সালের ৭ মার্চ রাতে তাবির হোসেন তাঁর বাহিনী নিয়ে নবাবগঞ্জের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জালালউদ্দিনের ওপর হামলা চালিয়ে গুলি করেন। এ ঘটনায় জালাল বাদী হয়ে তাবির হোসেনসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেন।
২০১৪ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত দুইটার দিকে র্যাব-১১ এর ডিএডি খন্দকার আসলামের নেতৃত্বে র্যাব সদস্যরা নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানাধীন বাপ্পি সরণির নলুয়াপাড়ায় অভিযান চালিয়ে একটি দেশীয় শুটারগানসহ দুটি কার্তুজ তাবির হোসেনের কাছ থেকে উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় ওই দিনই তাঁর বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় খন্দকার আসলাম বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। ২০১৪ সালের ১০ মার্চ এ মামলায় তাবির হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। এ মামলায় ২০১৮ সালের ২৯ মে নারায়ণগঞ্জ জেলা আদালত বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ তাবির হোসেনকে ১৮৭৮ সালের অস্ত্র আইনের ১৯(এ) ধারায় ১০ বছরের এবং ১৯ এর ১ ধারায় ৭ বছরের কারাদ- দেন।
এদিকে ২০১৯ সালের ৩১ মার্চ অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচনে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী (বর্তমানে নির্বাচিত) তাবির হোসেন হলফনামার ফরম পূরণে ২(ক) ও ২(খ) অনুচ্ছেদের ফৌজদারি মামলাসংক্রান্ত ঘরে তিনি ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত নন মর্মে তথ্য দেন। অথচ তাবির হোসেনকে অস্ত্র আইনের মামলায় ১৭ বছরের কারাদ- দেওয়া হয়।
অপসারণের বিষয়ে জানতে তাবির হোসেন পাভেলের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেনি।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.