১৬ ডিসেম্বর স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীকে সামনে রেখে ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার পাড়া-মহল্লা ও স্কুল-কলেজ থেকে শুরু করে গ্রামের অলিগলিতে মৌসুমি পতাকা বিক্রেতারা হাঁকডাক দিয়ে বিক্রি করছেন দেশের লাল-সবুজের জাতীয় পতাকা।
রাস্তায় রাস্তায় বাঁশের সাথে ছোট বড় পতাকা বেঁধে বিক্রি করছেন মৌসুমি বিক্রেতারা। বিজয় দিবসকে সামনে রেখে পতাকা কিনছেন অনেকেই। সারাবছর অন্য পেশায় জীবিকা নির্বাহ করলেও ডিসেম্বর মাসে অনেকে পতাকা বিক্রি করে জীবন ধারণ করেন। মূলত এই মাসগুলোতে পতাকা বেশি বিক্রি হয়।
রবিবার সকালে উপজেলার বারুয়াখালী বাজারে দেখা মেলে পতাকা বিক্রেতার আবুল কালাম। জাতীয় পতাকা ভর্তি ভ্যান নিয়ে ছুটছেন এদিকে থেকে সেদিকে। বাজারের অলিতে গলিতে হ্যান্ড মাইকের সাহায্যে বিক্রি করছেন পতাকা। লাল-সবুজের এই ফেরিওয়ালার কাছ থেকে অনেকেই পতাকা কিনে নিচ্ছেন।
আবুল কালামের গ্রামের বাড়ি মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার কামারকান্দি গ্রামে। জীবিকার তাগিদে ১৬ বছর ধরে ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার কলাকোপা ইউনিয়নের আমতলা গ্রামে বসবাস করেন। সারাবছর হরেক রকমের জিনিসপত্র বিক্রি করে সংসার চালান তিনি। ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকেই প্রস্তুতি নেন পতাকা বিক্রির। ১০ ডিসেম্বর থেকে পতাকার চাহিদা বেড়ে যায়। পতাকা বিক্রি করে দিনে ৩-৪ হাজার টাকা হয় বলে জানান তিনি।
ভ্যানের চারপাশে টানানো রয়েছে ছোট এবং বড় সাইজের পতাকা। সামান্য বাতাসে উড়ছে এসব পতাকা। রয়েছে লাল সবুজের ফিতা এবং মাথার ব্যান্ড। ৬ ফুটের পতাকা প্রতি পিস ২০০ টাকা, ৫ ফুট ১৫০ টাকা, সাড়ে ৩ ফুট ১২০ টাকা, আড়াই ফুট ৬০ টাকা, দেড় ফুট ৪০ টাকা আর ১ ফুট ২০ টাকায় বিক্রি করছেন। এছাড়া ফিতা আর ব্যান্ড বিক্রি করছেন ১০ টাকা করে।
শুধু আবুল কালাম একা নয়। মাদারীপুর, ফরিদপুর সহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ডিসেম্বর মাসে অনেকে আসেন দোহার ও নবাবগঞ্জে পতাকা বিক্রি করতে। সারা বছর অন্য পেশার সাথে জড়িত থাকলেও ডিসেম্বর মাস এলেই তারা পতাকা বিক্রি করেন। জাতীয় পতাকা বিক্রি করে তারা মানসিক প্রশান্তি পান বলে জানান।
উপজেলার জয়কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ঘোষাইল গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মো ঃ হাতেম আলী মোল্লা বলেন, প্রতি বছর এসব যুবকদের হাতে পতাকা দেখে আমরা গর্বিত হই। আর গ্রামাঞ্চলে সাধারণত পতাকা তৈরি হয়না। অর্ডার দিয়ে বানাতে হয়। এদের কাছ থেকে কিনে ছোট ছোট বাচ্চারা যখন পতাকা হাতে কিংবা মাথায় ব্যান্ড লাগিয়ে চলাফেরা করে, তখন আমাদের মনটা ভরে যায়।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.