ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলায় সাত জনের শরীরে করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট সনাক্ত হয়েছে। সনাক্ত হওয়া সবাই পেশায় শ্রমিক। তাঁরা চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে নবাবগঞ্জে একটি আশ্রয়ন প্রকল্পের কাজে এসেছিলেন।
শনিবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. শহিদুল ইসলাম।
তিনি জানান, গত মাসের ১৮ তারিখে ট্রাকযোগে অন্তত ৫০ জন শ্রমিক চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে নবাবগঞ্জের কৈইলাইল ইউনিয়নের মাহতাবপুরে আশ্রয়ণ প্রকল্পের কাজের জন্য আসেন। নির্মাণাধীন ওই আশ্রয়নে মোট ৬৩ জন শ্রমিক কাজ করেন। এদের মধ্যে কয়েকজনের জ্বর, ঠান্ডা ও কাঁশিসহ করোনাভাইরাসের সংক্রমিত হওয়ার বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দেয়। ২৩ মে আমরা বিষয়টি জানতে পেরে আমরা সেখানে গেলে কেউ বিষয়টি স্বীকার করেনি। এমনকি তাদের নমুনা সংগ্রহ করে চাইলেও তারা দিতে রাজি হয়নি।
পরে ২৫ তারিখে স্থানীয় স্বাস্থ্য সহকারীদের মাধ্যমে তাদের অসুস্থ থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে সালমান এফ রহমান এমপিকে বিষয়টি অবগত করে রাতেই ইউএনও ও স্থানীয় চেয়ারম্যানের সহযোগীতায় মেডিকেল টিম গঠন করা হয়। পরের দিন আশ্রয়ণ প্রকল্পের বেশ কয়েকজনের শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হলে দশজনের ফলাফল পজেটিভ আসে।
তাদের শরীরে করোনাভাইরাসের ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া যেতে পারে বলে আশঙ্কা করে সেদিনই তাদের ঢাকার আইডিইসিআরে নিয়ে পুনরায় নমুনা পরীক্ষা করতে দেওয়া হয়। তারপর তাদের ঢাকার বক্ষব্যাধী হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে ভর্তি করা হয়। এখনও তারা সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
পরে ওই দশজন থেকে সাতজনের শরীরে করোনাভাইরাসের ভারতীয় ধরণের ভ্যারিয়েন্ট পাওয়ার বিষয়টি আমরা শুক্রবার রাতে নিশ্চিত হয়েছি। এটি বিপদ সংকেত। এজন্য সকলকে সর্বাত্মক সর্তকতা অবলম্বনসহ সরকার নির্ধারিত সকল স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য বলেন ডা. শহিদুল।
তবে শনিবার দুপুরে মাহতাবপুর আশ্রয়ণ প্রকল্প-১ এ সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শ্রমিকরা সবাই কাজে ব্যস্ত। স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে সবাই উদাসিন। বেশিরভাগ শ্রমিকের মুখে ছিলনা মাস্ক। প্রশাসন থেকে তাদের স¦াস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে নির্দেশনা দেওয়া হলেও তারা তা মানছে না। এতে চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে স্থানীয় বাসিন্দারা।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের শ্রমিক চাপাইনবাবগঞ্জের মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, আমরা এক সাথেই কয়েকজন এখানে কাজ করতে এসেছিলাম। ওদের শারিরীক সমস্যা দেখা দেওয়ায় পরীক্ষার করার পর করোনা ধরা পড়েছে। আমরাও টেনশনে আছি।
আরেক শ্রমিক মিজানুর বলেন, মাস্ক মুখে দিয়ে কাজ করতে কষ্ট হয় তাই মাস্ক খুলে রেখেছি।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুর রহমান বলেন, শুনেছি প্রকল্পের কয়েকজনের করোনা হইছে। কিন্ত ওরা তো কিছুই মানছে না। সবাই মাস্ক ছাড়াই ঘোরাফেরা করছে।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.