১৫ জানুয়ারি সকাল সাতটা। প্রতিদিনের মতো ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয় মো. রাকিব (১৯)। তখন তার সাথে ছিল ইয়াসিন নামে এক যুবক। বাড়ি থেকে বের হওয়ার পরপরই বন্ধ পাওয়া যায় রাকিবের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি। ওই দিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করে সন্ধান না পেয়ে পরদিন নবাবগঞ্জ থানা সাধারণ ডায়েরি করে রাকিবের বড় ভাই রবিউল হোসেন। ঘটনাটিকে গুরুত্ব দিয়ে অনুসন্ধানে নামে নবাবগঞ্জ থানা পুলিশ। শুক্রবার রাতভর সন্ধান চালিয়ে নবাবগঞ্জ উপজেলার আগলা পূর্বপাড়ার একটি নির্জন চক থেকে রাকিবের লাশ উদ্ধার করে নবাবগঞ্জ থানা পুলিশ।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে হত্যাকান্ডের বিষয়ে নবাবগঞ্জ থানায় সংবাদ সম্মেলন করেন দোহার সার্কেলের সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার মো. আশরাফুল আলম।
তিনি জানান, ঘটনাটি রাকিবের সাথে একসাথে বাড়ি থেকে বের হওয়া ইয়াসিন নামের ওই যুবককে আটক করে পুলিশ। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, ইয়াসিন জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে জানায় তার স্ত্রী ফাতেমা আক্তারের সাথে অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত ছিল রাকিব। বিষয়টি নিয়ে ইয়াসিনের সাথে রাকিবের একাধিকবার বাকবিতন্ডা হয়। এ ঘটনার জের ধরে পরিকল্পিতভাবে সেদিন রাকিবকে বাড়ি থেকে নিয়ে বের হয় ইয়াসিন। পরে ইয়াসিন তারা মামাতো ভাই আব্দুর রহমানের সহযোগিতায় রাকিবকে নৃশংসভাবে ধারালো অস্ত্র দিয়ে ঘাড়ে ও মাথায় কুপিয়ে হত্যা করে।
এএসপি আশরাফুল আলম বলেন, হত্যার পর লাশ গুমের উদ্দেশ্যে নবাবগঞ্জের আগলা পূর্বপাড়া চকের নির্জন একটি মাছের খামারের পাশে কচুরিপানা দিয়ে ঢেকে রাখা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে ইয়াসিনের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবারে রাতে ওই নির্জন চক থেকে রাকিবের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। গ্রেপ্তার করা হয় আব্দুর রহমান নামে আরেক যুবককে।
গ্রেপ্তারকৃত ইয়াসিন নবাবগঞ্জ উপজেলার আগলা গ্রামের মো. আনিছের ছেলে ও আব্দুর রহমান একই উপজেলার কৈলাইল ইউনিয়নের মেলেং গ্রামের মো. শহিদের ছেলে। এ ঘটনায় নবাবগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে নিহত রাকিবের বড় ভাই মো. রবিউল হোসেন। হত্যার সাথে জড়িতদের শাস্তি দাবি করেন তিনি। নিহত রাকিব নবাবগঞ্জ উপজেলার গালিমপুর ইউনিয়নের ছাতিয়া গ্রামের মোক্তার হোসেনের ছেলে।
নবাবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুমিনুল ইসলাম জানান, ঘটনার সাথে আরও কেউ সম্পৃক্ত আছে কিনা তা জানতে রিমান্ড আবেদন করে শনিবার আসামীদের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.