বর্ষা মৌসুম এলে গ্রামগঞ্জের নিচু জমির পানিতে জন্মে বাংলাদেশকে জাতীয় ফুল শাপলা। বর্ষার পানিতে শাপলা ফুটে তৈরি হয় এক অপরূপ দৃশ্যের। ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলায় সর্বত্রই চোখে পড়ে শাপলা। উপজেলার ডুবে যাওয়া বিভিন্ন ইরি জমি, আমন ধান ও পাট খেতে শাপলা জন্মায়।
এলাকার শাপলা সংগ্রহকারী কৃষকরা ভোর থেকে নৌকা নিয়ে ডুবে যাওয়া জমিতে ও বিলের মধ্যে ঘুরে ঘুরে শাপলা সংগ্রহ করেন। তারপর সেগুলো বাজারে বিক্রি করেন। শাপলা দেশের মানুষের কাছে রান্নার সবজি হিসেবে এবং শাপলা ভাজি করে ভাতের সাথে দেশ মুখরোচক একটি খাবার।
তাই এই মৌসুম এলে শাপলা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে অনেকেই। তাদেরই একজন উপজেলার কলাকোপা ইউনিয়নের বড় রাজপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মো: রবিউল ইসলাম। পেশায় দিনমজুর রবিউল বর্ষা মৌসুম শেষে বিল থেকে শাপলা সংগ্রহ করে পাড়া মহল্লায় ঘুরে ও বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে।
অন্য সময় গাছ কাটা সবজি বিক্রি করা প্রধান জীবিকা হলেও বর্ষা শেষ থেকে নভেম্বর পর্যন্ত শাপলা বিক্রি করে চলে তার জীবিকা। অন্য সময়ের চাইতে একটু বেশি আয় হয় শাপলা বিক্রিতে। এক আটি শাপলা ১০ টাকায় বিক্রি করে দিন শেষে ৮শ থেকে ১২ শ টাকা নিয়ে ঘরে ফিরে রবিউল। এ পেশায় কোনো পুঁজির প্রয়োজন হয় না। তাই বিভিন্ন বয়সের লোক এ পেশায় অংশ নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছে।
মৌসুমি শাপলা বিক্রেতা মো: রবিউল ইসলাম বলেন, প্রতিদিন ভোরে দক্ষিণ চকে নৌকা দিয়ে বা বুক পর্যন্ত পানিতে নেমে শাপলা তুলি। পরে সেই শাপলা এলাকায় ঘুরে ঘুরে বিক্রি করি। সব বিক্রি না হলে বাগমারা বাজারে গিয়ে বিক্রি করি। প্রতিদিন ৮-১২শ টাকা আয় হয় আমার। অন্য সময় গাছ কাটা, সবজি বিক্রি সহ যখন যে কাজ পাই তাই করে জীবন চলাই। প্রতিদিন এই চকে অনেকেই ঘুরে বা হাঁটতে আসা লোকেরা শাপলা কিনে নিয়ে যায়।
ঘুরতে আসা বাগমারার বাসিন্দা সজীব আহমেদ বলেন, আমি স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে প্রায় সময় একই বিলে ঘুরতে আসি। আর এই বর্ষার মৌসুমি টাটকা শাপলা পেলে কিনে নিয়ে যাই। শাপলা আমাদের পরিবারের সবাই পছন্দের খাবার।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.