উৎসব মুখর পরিবেশে ঢাকার দোহার পৌরসভার নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। বুধবার সকাল ৮টা থেকে বিরতিহীন ভাবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে ভোট গ্রহণ। পরে ফলাফল ঘোষণা করা হলে আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক কাউন্সিলর আলমাছ উদ্দিন (জগ) মেয়র নির্বাচিত হন। অপরদিকে দীর্ঘ ২২ বছর পর ভোট দিতে পেরে খুশি ভোটাররা।
সরেজমিনে বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, উৎসবমূখর প্রতিবেশে প্রতিটি কেন্দ্রই শান্তিপূর্ণভাবে ভোগ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। কেন্দ্রগুলোতে পুরুষ ভোটারের পাশাপাশি নারী ভোটারদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত। দীর্ঘদিন পর ভোট দিতে এসে খুশি ছিলেন প্রবীণ ভোটাররা। এছাড়া প্রথমবারের মতো ভোট দিয়ে উৎফুল্ল ছিল তরুন ভোটারটাও।
নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, পৌরসভায় মোট ভোটার সংখ্যা ৪৩ হাজার ৬৬ জন। আওয়ামী লীগ নেতা মো. আলমাছ উদ্দিন (জগ) ৬ হাজার ৬শ ৯৪ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে মেয়র নির্বাচিত হয়েছে। তার নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম বাবুল (হেলমেট) পেয়েছেন ৫ হাজার ২৩ ভোট। এছাড়া আব্দুর রহমান আকন্দ (নারিকেল গাছ) পেয়েছেন ৪,৫৬৬ ভোট, জামাল উদ্দিন আহমেদ (মোবাইল) ২,৬০৯ ভোট, মো. জাহাঙ্গীর আলম (চামচ) ২,৩০৫ ভোট, মো. নুরুল ইসলাম (ইস্ত্রি) ২৫৫০ ভোট, আমজাদ হোসেন (হাতপাখা) ১,০৩৮ ভোট ও মো. ফরহাদ হোসেন ৭৩২ ভোট পেয়েছেন। নির্বাচনে বৈধ ভোট পড়েছে ২৫ হাজার ৫শ ১৭টি, বাতিল হয়েছে ৪৯টি। ভোট পড়েছে শতকরা ৫৯.৩৬%।
এছাড়া কাউন্সিলর হিসেবে ১নং ওয়ার্ডে আলমগীর মুবিন চৌধুরী (টেবিল ল্যাম্প), ২নং ওয়ার্ডে শওকত হোসেন (উটপাখি), ৩নং ওয়ার্ডে আব্দুস সালাম শুকুর (টেবিল ল্যাম্প), ৪নং ওয়ার্ডে পাপেল মাহমুদ নিজাম (ব্রীজ), ৫নং ওয়ার্ডে ওয়াসিম চোকদার (পানির বোতল), ৬নং ওয়ার্ডে মো. হুমায়ুন কবির (ডালিম), ৭নং ওয়ার্ডে উদয় হোসাইন (উটপাখি), ৮নং ওয়ার্ডে জাফর ইকবাল জাহিদ বেপারী (বø্যাক বোর্ড) ও ৯নং ওয়ার্ডে মোহাম্মদ মোরাদ (ডালিম) বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
এছাড়া সংরক্ষিত মহিলা আসন ১ এ ইসরাত জাহান বনানী (চশমা), সংরক্ষিত মহিলা আসন-২ এ স্মৃতি আক্তার (জবা ফুল)ও সংরক্ষিত মহিলা আসন-৩ এ ফরিদা ইয়াছমিন (আনারস) বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
নির্বাচনী এলাকায় চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। একাধিক ম্যাজিস্ট্রেটের পাশাপাশি পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, আনসার ও গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন দায়িত্ব পালন করেছেন।
দোহার থানার ওসি মোস্তফা কামাল বলেন, নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হওয়ার লক্ষ্যে পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ মাঠে করেছে।
আইনি জটিলতা কাটিয়ে দীর্ঘ ২২ বছর পর নির্বাচন হওয়ায় এবং শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট দিতে পেরে স্থানীয় সংসদ প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানকে ধন্যবাদ জানান পৌরবাসি।
এবার নির্বাচনে পৌরসভার ২১টি কেন্দ্রের ১৩৪টি ভোটকক্ষে ২০১টি ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৬১ এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১২ জন প্রার্থী প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন।
জানা যায়, ২০০০ সালে গঠিত হয় দোহার পৌরসভা। ২০০০ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হয় প্রথম নির্বাচন। এরপর সীমানা জটিলতাসহ নানা কারনে আর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি প্রথম শ্রেণির এই পৌরসভার।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.