ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলায় জুনায়েদ নামে ১৫ দিনের এক নবজাতক শিশুকে নদীতে ফেলে হত্যা করার দায়ে শিশুটির মা জুলি আক্তার (১৯) কে গ্রেফতার করেছেন নবাবগঞ্জ থানা পুলিশ। শিশুটির মা জুলি আক্তারের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে উপজেলার বারুয়াখালী ইউনিয়নের পাশ্ববর্তী ইছামতি নদীর আলালপুর (রতনপুর) এলাকা থেকে ঐ নবজাতকের মরদেহটি উদ্ধার করেন পুলিশ।
ঘাতক জুলি আক্তার বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার ইস্টিকাটি গ্রামের জুবায়ের হোসেন রনি স্ত্রী। তারা ঢাকা থাকতেন। তবে সন্তান হওয়ায় জুলি বাবা বাড়িতে এসেছিলেন।
জিজ্ঞাসাবাদে জুলি তার সন্তানকে নদীতে ফেলে হত্যা করেছেন বলে স্বীকারোক্তি দেয়ায় বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় নবাবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সিরাজুল ইসলাম শেখ এক প্রেস বিফিং এর মাধ্যমে হত্যাকান্ডের বিষয় সাংবাদিকদের অবহিত করেন।
প্রেস বিফিংতে ওসি জানান, ছেলে নিখোঁজ রয়েছে জানিয়ে শিশুটির বাবা শনিবার রাতে থানায় একটি জিডি করেন। ঘটনাটি ব্যাপারে আমরা শিশুটির মা জুলিকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে জানান, বুধবার বেলা ৩টা ১০মিনিটে তিনি নবজাতক জুনায়েদকে ঘরের বিছানায় রেখে টয়লেটে যায়। ফিরে এসে দেখেন ছেলে বিছানায় নেই। কিন্ত জুলির কথাবার্তা এবং ব্যবহার আমাদের সন্দেহ হয়। পরে আমরা তাকে একাধিকবার জিজ্ঞাসাবাদ করি। একপর্যায় তিনি স্বীকার করে পারিবারিক কলহের জেরে হতাশা হয়ে তিনি নিজের সন্তানকে বাড়ির পাশ্ববর্তী ইছামতি নদীতে ফেলে দিয়েছে। সকালে তার তথ্যের ভিত্তিতে সকাল ৯টায় জেলেদের দিয়ে নদীতে জাল ফেলে শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওসি আরও জানায়, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
শিশুটির বাবা জুবায়ের হোসেন রনি জানান, আমি পালিয়ে বিয়ে করায় আমার পরিবার আমাদের মেনে নেইনি। এই নিয়ে আমরা হতাশ ছিলাম। তবে সন্তান হওয়ার পর পরিবার আমাদের মেনে নিতে রাজি হয়। আগামী মাসের ১ তারিখে আমাদের বাড়িতে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্ত ওর গতকাল আমার সন্তানকে পানিতে ফেলে দেয়।
ঘাতক জুলির মা’র দাবি, জামাইয়ের সাথে তার মেয়ের কোন ঝামেলা ছিল না। তবে মেয়ের শাশুরি সব সময় খারাপ ব্যবহার করতো। অভিমানেই মেয়ে এমন কাজ করেছে বলে মনে করেন তিনি।
এবিষয়ে নবাবগঞ্জ থানার উপ-পরির্দশক আব্দুল জলিল বলেন, নবজাতকের বাবা জুবায়ের বাদী হয়ে তার স্ত্রী জুলিকে আসামী করে নবাবগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। মামলার পর আসামী জুলি আক্তারকে পাঁচদিনের রিমান্ড চেয়ে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.