ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের আহবায়ক কমিটি নিয়ে তালগোল সৃষ্টি হয়েছে। ১৬ ফেব্রƒয়ারী দলীয় প্যাডে উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক মিজানুর রহমান কিসমত উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের আহবায়ক কমিটির অনুমোদন দেন। দলের কার্যক্রমকে গতিশীল করার জন্যই প্রতিটি ওয়ার্ডে নতুন কমিটি দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। তবে ইউনিয়নের নতুন আহবায়ক কমিটি গঠন সংক্রান্ত খবরটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট বলে নিজের ফেসবুকে মন্তব্য করেছে একই কমিটির যুগ্ম আহবায়ক দেওয়ান আওলাদ হোসেন। বিষয়টি নিয়ে তৃণমূল নেতাকর্মীরা বিভ্রান্ত।
জানা যায়, ১৬ ফেব্রুয়ারী উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক মিজানুর রহমান কিসমত ১৪টি ইউনিয়নের আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করে। কমিটির তালিকা যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দ্রুত বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠে। সাথে সাথে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক দেওয়ান আওলাদ হোসেন নিজের ফেসবুকে একটি স্ট্যাটার্স দেন। তিনি লিখেন, নবাবগঞ্জ উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটি ভেঙে নতুন আহবায়ক কমিটি গঠন সংক্রান্ত খবরটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। এব্যাপারে নবাবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ এর নেতা কর্মীদের বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য অনুরোধ করা হলো। মাননীয় সাংসদ, কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও জেলা নেতৃবৃন্দের নির্দেশক্রমে নিয়ম অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।” ক্ষোভ প্রকাশ করেছে কমিটির আরেক যুগ্ম আহবায়ক ইঞ্জিনিয়ার আরিফুর রহমান। এছাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক কমিটির অনেক সদস্যও ক্ষোভ করেছে এভাবে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আহবায়ক কমিটি গঠন করায়।
উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের নতুন আহবায়ক কমিটি গঠন হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশের পাশাপাশি অনেকে অভিনন্দনও জানিয়েছে নতুন কমিটিকে। তবে তাদের মধ্যে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলার সর্বোচ্চ নেতাদের মতবিরোধকে তারা অশনি সংকেত বলে মনে করছেন। দলের স্বার্থে কমিটি নিয়ে ধোঁয়াশা দ্রুত নিষ্পত্তির আহবান জানান তারা। প্রয়োজনে জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও ঢাকা-১ আসনের সংসদ সদস্য সালমান এফ রহমানের হস্তক্ষেপ কামনা করেন নেতাকর্মীরা।
এব্যাপারে নবাবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক মিজানুর রহমান কিসমত প্রিয়বাংলা নিউজ২৪’কে বলেন, আমাদের সংগঠনকে শক্তিশালী করার জন্য ইউনিয়ন কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। আমাদেরকে ৬ মাসের মধ্যে নতুন কমিটির করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ইতিমধ্যে তিন মাস চলে গেল, সম্মেলন করতে হবে তো। তাই প্রতিটি ইউনিয়নকে সুসংগঠিত করার জন্য কমিটি দিয়ে দিয়েছি। এক প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, অনেকে অনেক কথা বলতে পারেন, এমপি সাহেব নির্দেশ দেওয়ার পর মিটিং এ সবার সাথে আলোচনা করেছি। আপনি সাফিলকে জিজ্ঞাসা করেন। সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক নিয়মতান্ত্রিকভাবে তো সাফিল। কেউ দাবি করলো এক নম্বর তাহলে তো হবে না। আমি সবাইকে নিয়ে কাজ করতে চাই।
এব্যাপারে আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক এ্যাড. সাফিলউদ্দিনের মোবাইলে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেনি।
উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক দেওয়াল আওলাদ হোসেন প্রিয়বাংলা নিউজ২৪’কে বলেন, এটা আহবায়ক সাহেবের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কমিটি। উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক কমিটির কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। ৬৮ সদস্য কমিটি ও আহবায়ক এবং তিনজন যুগ্ম আহবায়কদের সাথেও কোন মিটিং হয়নি। তিনি ব্যক্তিগতভাবে পারিবারিক এবং অসৎ উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করার জন্য ষড়যন্ত্র করে সালমান ভাইয়ের ইমেজ নষ্ট করার জন্য তিনি ষড়যন্ত্র করেছেন। তিনি বিশেষ লোকদের এজেন্ট এবং সেই এজেন্ট বাস্তবায়ন করার জন্য, আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করার জন্য বিএনপি ও জামায়াত এবং জাতীয় পার্টি দ্বারা কমিটি ঘোষণা করেছেন। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আহবায়ক একা ইউনিয়নের কমিটি দিতে পারেন না। আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রে তা কভার করে না, ওয়ার্কিং কমিটির মিটিং ছাড়া কমিটি দিতে পারেন না।
উপজেলা আওয়ামী লীগের আরেক যুগ্ম আহবায়ক ইঞ্জিনিয়ার আরিফুর রহমান বলেন, ১৪টি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নতুন আহবায়ক কমিটির ব্যাপারে আমি অবগত নই। আমার দলকে সুসংগঠিত করার জন্য কাজ করছিলাম। কমিটির ব্যাপারে আলোচনা চলমান ছিল। কিন্ত আহবায়ক গতকাল হঠাৎ করে কমিটি ঘোষণা করে দিয়েছে। কার্যকরী মিটিং সিদ্ধান্ত হবে এই কমিটি বৈধতা পাবে কি না! আমার বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছি।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.