পুলিশ প্রশাসনের প্রতি করা হুঁশিয়ারি দিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা-১ আসনের এমপি প্রার্থী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম। তিনি পুলিশ প্রশাসনকে নিরপেক্ষ ভূমিকায় থেকে সোজা পথে চলার আহ্বান জানান। না হলে কিভাবে আঙ্গুল বাকা করতে হয়, তা আমরা ভালো করেই জানি বলে বিক্ষোভ সমাবেশেএমন বক্তব্য রাখেন। শুক্রবার বিকালে জামায়াতে ইসলামীর নবাবগঞ্জ শাখার সেক্রেটারি মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়েরের প্রতিবাদে পাইলট স্কুলের সামনে বিক্ষোভ পরবর্তী সমাবেশে এমপি প্রার্থী ব্যারিস্টার নজরুল ইসলাম এই হুশিয়ারী দেন। এ সময় তিনি অবিলম্বে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান। অন্যথায় কঠোর কর্মসূচী দেওয়ার হুশিয়ারি করেন।
ঢাকা ১ আসনের এমপি প্রার্থী ব্যারিস্টার নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা একটি কথা প্রশাসনের উদ্দেশ্যে পরিষ্কার করে বলতে চাই, জুলাই আন্দোলনের মাধ্যমে যে সরকার ক্ষমতায় এসেছে এবং তাদের অধীনে যে প্রশাসন চলছে, সেই প্রশাসনের উদ্দেশ্যে আমরা বলতে চাই – গত ৫ই আগস্ট বাংলাদেশের ছাত্র- জনতা রক্ত দিয়েছে, জীবন দিয়েছে, পঙ্গুত্ব বরণ করেছে- একটি নতুন বাংলাদেশ পাওয়ার জন্য। বাংলাদেশের ছাত্র- জনতা রক্ত দিয়েছে মিথ্যা মামলার কবর রচনা করার জন্য, বাংলাদেশের ছাত্র জনতা রক্ত দিয়েছে বৈষম্যের কবর রচনার জন্য। বাংলাদেশের ছাত্র জনতা রক্ত দিয়েছে মিথ্যা মামলার মাধ্যমে ফায়দা হাসিলের পথ চিরতরে বন্ধ করে দেয়ার জন্য। কিন্তু আমরা অবাক বিস্ময়ে লক্ষ্য করলাম -আমার বন্ধু প্রতীম প্রতিপক্ষ একটি রাজনৈতিক সংগঠন কোন ধরনের অভিযোগ ছাড়াই গত ১লা অক্টোবর সাংবাদিকদের নিয়ে চিহ্নিত একটি হাসপাতালের সামনে তিনি একটি দলের ( নবাবগঞ্জ উপজেলা জামায়াতে ইসলামী) সেক্রেটারিকে জড়িয়ে মিথ্যা বক্তব্য দিলেন। আমরা বিস্ময় হতভাগ, কোন অভিযোগ দায়ের হলো না, কোন তদন্ত হলো না, কোন মামলা হওয়ার আগেই কিভাবে একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি একটি দলের উপজেলা সেক্রেটারিকে জড়িয়ে ব্রিফিং করতে পারেন!
ব্যারিস্টার নজরুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় আমরা প্রশাসনের কাছে গিয়েছিলাম, তাদেরকে ভেরি ক্লিয়ারলি বলেছি, কোন রাজনৈতিক হীন উদ্দেশ্য যদি অভিযোগ দায়ের করা হয় এবং তদন্ত ছাড়াই যদি আপনারা তা গ্রহণ করেন তার কনসিকোয়েন্স কিন্তু ( ফলাফল) ভালো হবে না। আমরা প্রশাসনকে বলেছিলাম, কোন অন্যায়ের কাছে আপনারা মাথা নত করবেন না। যদি সেটা করেন আমরা কিন্তু তা মেনে নেব না। কিন্তু আমরা দেখতে পেলাম রাতের অন্ধকারে একটি মহলের ইশারায় টাকার বিনিময়ে মাওলানা মোহাম্মদ আলীর মত একজন আলেমে দ্বীনের বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা দেওয়া হল। সেই মিথ্যা মামলাটা অত্যন্ত জঘন্য একটি মামলা। সেই মামলার প্রতিটি শব্দ নয় শুধু প্রতিটি অক্ষর মিথ্যা। আমাদের বিরুদ্ধে যত কথাই বলা হোক না কেন আমরা আমাদের ইতিবাচক রাজনীতির অব্যাহত রাখব। কিন্তু কোন অন্যায় যদি আমাদের বিরুদ্ধে চাপিয়ে দেওয়া হয় সেটা কিন্তু আমরা সহ্য করব না। রাজপথেই তার যথাযথ জবাব দেবো। কোন ঘটনার প্রেক্ষিতে মামলা হয়েছে, কিভাবে মামলা সাজানো হয়েছে তা কিন্তু আমরা সবই জানি। বলা হয়েছে, ২৩ শে সেপ্টেম্বর ঘটনা ঘটানো হয়েছে। অথচ ওই তারিখে ওই সময়ে তিনি ( মাওলানা মোহাম্মদ আলী) আমার সঙ্গে নির্বাচনী গণসংযোগে ছিলেন। তিনি তখন নবাবগঞ্জেই ছিলেন না। তিনি আমার সঙ্গে সকাল থেকেই দোহারের সুতার পাড়ায় নির্বাচনী প্রচারনায় ব্যাস্ত ছিলেন। তার প্রমাণও রয়েছে। সেদিনের নির্বাচনী প্রচারণা সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লাইভ প্রচারিত হয়েছে। আপনার সেগুলো দেখলেই তো বুঝতে পারেন মাওলানা মোহাম্মদ আলী এই ঘটনা সঙ্গে জড়িত কিনা। অত্যন্ত জঘন্যতম মিথ্যাচার করা হয়েছে। যে ঘটনা সাজানো হচ্ছে সেটি বড়ই কাচা ঘটনা হয়েছে। আপনারা ধরা খেয়ে গেছেন। এর প্রায়শ্চিত্ত আপনাদের ভোগ করতে হবে। কোন ছাড় দেওয়া হবে না। অবিলম্বে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। না হলে তখন আপনারা যারা এর সঙ্গে জড়িত তাদেরেকে পিছনের দরজা দিয়ে পালাতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের ধৈর্যের পরীক্ষা নিবেন না দয়া করে। আমরা যেমন ধৈর্যের পাহাড় হতে পারি, ঠিক তেমনি আমাদের উত্তপ্ত করলে উন্মাদের সমুদ্র হয়ে সব কিছু ভাসিয়েও দিতে পারি। তাই প্রশাসনের প্রতি আমাদের উদাত্ত আহ্বান, আপনারা নিরপেক্ষ ভূমিকা ভূমিকা পালন করুন। আপনারা সোজা পথে চলুন। আর না হলে কিভাবে আঙ্গুল বাকা করতে হয়, তা আমরা ভালো করেই জানি। আমরা কিন্তু সবই জানি। আমাদের কাছে সকল ইনফরমেশন আছে। কিভাবে মিথ্যা মামলার প্রক্রিয়ায় সিন্ডিকেট করে মামলা দেয়া হয় এবং তাদের কাছ থেকে কিভাবে টাকা আদায় করা হয়। শত শত মানুষকে কষ্ট দেওয়া হয়। এই ঘটনার ইতি টানতে হবে। আজ থেকে আর কোন মিথ্যা মামলা আশ্রয় নিবেন না। মানুষকে কষ্ট দিবেন না। রাজনৈতিক হয়রানিমূলক কোন মামলা দিবেন না।
ঢাকা- ১ আসনের এমপি প্রার্থী নজরুল ইসলাম বলেন, দোহার ও নবাবগঞ্জের রাজনৈতিক পরিবেশ শান্ত রাখার ক্ষেত্রে আপনারা ভূমিকা রাখবেন। কোন অবস্থাতেই পরিবেশ অশান্ত করতে দেওয়া হবে না।
নবাবগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের আমীর এডভোকেট ইব্রাহিম খলিলের সভাপতিত্বে বিপুল সংখ্যক জামায়াত- শিবিরের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা উপস্থিত ছিলেন। বক্তব্য রাখেন ঢাকা জেলা জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি মো. কামাল হোসেন, ঢাকা জেলা ইসলামী ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি মামুনুর
মন্তব্য করুন