1. news@priyobanglanews24.com : PRIYOBANGLANEWS24 :
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:০৩ পূর্বাহ্ন

দোহারে দুষ্টুমির ছলে প্রাণ গেল স্কুলছাত্রীর!

শামীম হোসেন সামন.
  • আপডেট : বুধবার, ১৫ মে, ২০২৪
  • ১৩৭ বার দেখা হয়েছে

নদীপারে কাজ করতে থাকা মা-বাবাকে ভাত দিতে গিয়ে অনাকাঙ্খিত এক ঘটনায় প্রাণ গেল জান্নাতুল নামে স্কুল ছাত্রীর। ১৪ বছরের ওই কিশোরী, মায়ের হাতে খাবার তুলে দিয়ে প্রতিবেশী বান্ধবীদের সাথে যায় নদীপারে। সেখানেই ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্খিত এক ঘটনায় পদ্মায় ডুবে মৃত্যু হয় জান্নাতুলের। অনেকটা মায়ের চোখের সামনেই জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটে সন্তানের। যে কারনে কোনভাবেই এমন মৃত্যুকে মেনে নিতে পারছেন না মা শুকুরী বেগম। ঢাকা জেলার দোহার উপজেলার মিনি কক্সবাজার খ্যাত মৈনট পদ্মাপারে ঘটে যাওয়া এমন ঘটনায় শোকার্ত পুরো গ্রাম।

নিহত জান্নাতুল দোহার উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নের শ্রীকৃষ্ণপুর গ্রামের শেখ আনোয়ারের মেয়ে। সে চর হোসেনপুর স্কুলের সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থী।

পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সোমবার বেলা চারটার দিকে মায়ের হাতে খাবারের থলে দিয়ে প্রতিবেশী বান্ধবীদের সাথে পদ্মা নদীর পারে যায় জান্নাতুল। বান্ধবীরা নদীতে গোসল করতে নামলেও জান্নাতুল না নেমে নদীপারে দাঁড়িয়ে ছিল। একইসময় সেখানে গোসল করতে থাকে শাকিল নামে ১১/১২ বছরের এক কিশোরসহ আরো দুইজন। নদী থেকে শাকিলের ছেটানো পানিতে অনেকটা ভিজে যায় জান্নাতুল। একপর্যায়ে নদীতে নেমে সবার সাথে গোসল করতে থাকে সে। এরপরই সাতার না জানার কারনে নদীর গভীর পানিতে তলিয়ে যায় জান্নাতুল। খবর পেয়ে মাহমুদপুর নৌ-পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে স্থানীয়দের সহায়তায় জান্নাতুলকে নদী থেকে উদ্ধার করে। গুরুত্বর অবস্থায় দ্রæত তাকে দোহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলেও দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে জান্নাতুলকে। সোমবার রাতে জান্নাতুলের মৃতদেহ বাড়িতে নেয়া হলে সেখানে হৃদয়বিদারক পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

অনেকটা নিজেদের চোখের সামনেই সন্তানের এমন মৃত্যুকে কোনভাবেই মেনে নিতে পারছেন না জান্নাতুলের মা-বাবা। জান্নাতুলের মায়ের অভিযোগ, দুষ্টুমির ছলে, তার মেয়েকে একাধিকবার ধাক্কা দেয় শাকিল।

জান্নাতুলের মা শুকুরী বেগম বলেন, আমার মেয়ে আমাকে ও আমার স্বামী ভাত দিয়ে নদীর পারে দাঁড়িয়ে শাকিল ও অন্যদের গোসল করা দেখছিল। কিছুক্ষণ পরে আমার ভাতিজি ও ভাগ্নি আমাকে জানায় শাকিল আমার মেয়েকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছে। আমি সবাই অনেক অনুরোধ করেছি আমাকে মেয়েকে সাহায্য করার জন্য কিন্ত কেউ এগিয়ে আসেনি। তিনি আরো অভিযোগ করে বলেন, এসময় ঘটনাস্থলে শাকিলের বাবাও ছিল। আমি তার পায়ে ধরে সাহায্যের আবেদন জানাই কিন্ত তিনি কোন কর্ণপাত করেনি। আমার মেয়েকে বাঁচানোর কোন চেস্টাই করেনি শাকিলের বাবা। এঘটনায় জড়িত শাকিলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন শুকুরী বেগম।

এঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী জান্নাতুলের মামাতো ও খালাতো বোন লামিয়া ও নওরিন বলেন, আমরা তিন বোন গোসল করার সময় শাকিল অনেক দুষ্টামি করছিলো। কিছুক্ষণ পর সামান্য বিষয়ে কথাকাটি হলে শাকিল জান্নাতুল ধাক্কা দিলে জান্নাতুল পানিতে তলিয়ে যায়। পরে আমাদের ডাকচিকিৎসা পদ্মাপারে থাকা লোকজন এগিয়ে আসে। দুষ্টমির ছলে হলেও প্রাণহানির এমন ঘটনাকে মেনে নিতে পারছেন না জান্নাতুলের স্বজন সহ এলাকাবাসীরা।

এঘটনায় অভিযুক্ত কিশোর শাকিল দোহারের কুতুবপুর নৌ পুলিশের হেফাজতে রয়েছে বলে জানা যায়।

ঢাকা অঞ্চলের নৌ পুলিশ সুপার, নৌ-পুলিশ গৌতম কুমার বিশ্বাস বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে জান্নাতুলের মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য ঢাকা পাঠানো হয়েছে। এঘটনায় জান্নাতুলের পরিবার এখনও লিখিত কোন অভিযোগ দেয়নি। ঘটনার তদন্ত করে পরবর্তী আইগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন

Leave a Reply

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ