ঢাকার নবাবগঞ্জে “আশ্বাস” মানব পাচার হতে উদ্ধারপ্রাপ্ত নারী ও পুরুষদের জন্য প্রকল্প অবহিতকরণ সভা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলা পরিষদের সভা কক্ষে এ অনুষ্ঠান করা হয়। সুইজারল্যান্ড দূতাবাসের অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেন ওয়্যারবী ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন। প্রকল্পটি উইনরক ইন্টারন্যাশনাল দ্বারা পরিচালনায় সুইজারল্যান্ড দূতাবাসের অর্থায়নে ৭টি সহযোগি সংগঠনের মাধ্যমে বাংলাদেশের ১০টি জেলায় বাস্তবায়ন করছে।এতে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল হাসান সোহেল।
উক্তসভায় সভাপতিত্বকরেন ওয়্যারবী ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের পরিচালক জেসিয়া খাতুন।
প্রকল্প অবহিতকরণ সভায়ওয়্যারবী ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন থেকে প্রকল্প ব্যবস্থাপক শাহমারুফ এহসান সিদ্দিকী এর সঞ্চালনায় সভায় স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন সংগঠনটির পরিচালক জেসিয়া খাতুন। এরপরবর্তীতেউদ্ধারপ্রাপ্তনারী-পুরুষদের উপর নির্মিত তথ্যচিত্র“প্রেরণার আলোক শিখা“প্রদর্শিত হয়। পরবর্তীতে প্রকল্পের লক্ষ্যও উদ্দেশ্য নিয়ে আলোচনা করেন উইনরক ইন্টারন্যাশনালের রিজিওনালকো-অর্ডিনেটর অসিত কুমার ব্যানার্জীএর পর প্রকল্প পরিচিতির পরে মুক্তআলোচনায়উপস্থিত সকলেইঅংশগ্রহণ করেনএবং তাদের মতামত তুলে ধরেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে কামরুল হাসান সোহেল বলেন, মানব পাচারের শিকার হয়েছেন এমন লোকদের মানসিক ও আর্থিক ভাবেস্বাবলম্বী করতে যারা উদ্যোগ নিয়েছেন তাদের আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তবে অনেকেই এই ব্যাপারে স্বীকার করতে চায়না। ফলে কারা সত্যিকার অর্থে মানব পাচারের শিকার তা যথাযথ ভাবে নিশ্চিত হয় না। প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তিদের নির্বাচিত করতে না পারলে প্রকল্পের যে লক্ষ্য উদ্দেশ্য তা যথাযথ ভাবে বাস্তবায়িত হবে না। আমি আশা করবো, যারাএই প্রকল্পের সাথে আছেন তারা সঠিকভাবে উপকারভোগী নির্বাচন করতে কাজ করবেন।আরএক্ষেত্রে যে কোন ধরনের সহযোগিতা প্রয়োজন হলে আমরা তা প্রদানে সর্বদা প্রস্তুত আছি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, আশ্বাস প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের তালিকা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রেরণ করলে তাদের পক্ষে সাহায্য সহযোগিতা কর সহজ হবে। তাছাড়া উক্ত উপজেলার সকল এনজিওদের মধ্যে সমন্বয় এর মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করতে তিনি আহŸান ানান। আশ্বাস প্রকল্পের মাধ্যমে জনসাধারনকে সচেতন করার প্রয়াসকেও তিনি সাধুবাদ জানান।
সভাপতির বক্তব্যে সংগঠনটির পরিচালক জেসিয়া খাতুনবলেন,উপযুক্তকর্মসংস্থান ও সচেতনতা না থাকায় এ অঞ্চলের বেশিরভাগ মাানুষ বিদেশমুখী।
যারা যান তাদের বেশিরভাগ অল্পশিক্ষিত কিংবা সংশ্লিষ্ট কাজের অভিজ্ঞত নাই। ফলে তারা সরকারি ভাবে না গিয়ে বিভিন্ন দালালের মাধ্যমে বিদেশে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তারা যেন কোন ধরণের প্রতারণা বা পাচারের শিকার না হন এবং তারা যেনএদেশে মর্যাদার সাথে বসবাস করতে পারেন সেই লক্ষ্যেই আমাদেরএইপ্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়। আমরা আশাকরি, সকলের সহযোগিতায় নবাবগঞ্জ উপজেলায় মানব পাচারের ক্ষতিগ্রস্থদের আর্থসামাজিক উন্নয়নে সহায়ক ভ‚মিকা পালন করতে পারব।
অবহিতকরণ সভায় অন্যান্যদের মধ্যেউপস্থিতছিলেন, নবাবগঞ্জ উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা, মাহমুদা মান্না উপজেলা যুবউন্নয়ন কর্মকর্তা, নজরুল ইসলাম শেখ সহ বিভিন্নসংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ।
উল্লেখ্য যে মানবপাচার হতে উদ্ধারপ্রাপ্তপ্তনারী এবং পুরুষদের মর্যাদাও কল্যাণ পুনরুদ্ধার করা এবং স্বনির্ভর করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ২৩সালের ডিসেম্বরে ওয়্যারবীএর মাধ্যমে নবাবগঞ্জ উপজেলায় ৩০০জনসারভাইভার (৬৫% নারী) নিয়েএই প্রকল্পের যাত্রা শুরু হয়।এই প্রকল্প গ্রহণের মূলউদ্দেশ্য, মনোসামাজিক কাউন্সিলসেবা এবং অন্যান্যপুনঃএকত্রীকরণ সেবাপ্রদানের মাধ্যমে মানবপাচার হতে উদ্ধারপ্রাপ্ত নারীও পুরুষদের শারীরিক, সামাজিক ও অর্থনৈকি কল্যাণ নিশ্চিতকরা এবং মানব পাচার হতে উদ্ধারপ্রাপ্ত নারীও পুরুষদের সেবা প্রদানে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান সমূহের দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করাএবং কার্যকরী করে তোলা।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.