গ্রাম বাংলার শত বছরের ঐতিহ্য নৌকা বাইচকে কেন্দ্র করে পুরো বিকেল জুড়ে ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার নয়নশ্রী ইউনিয়নের খানেপুর ইছামতী নদীতে হেঁইয়ো হেঁইয়ো ধ্বনি ও টান টান উত্তেজনা বিরাজ করে। রেববার খানেপুর গ্রামবাসীর উদ্যোগে এ নৌকা বাইচ অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন আয়োজক কমিটির সভাপতি আব্দুল আজিজ বেপারীর এবং সঞ্চালনা করেন আয়েজক কমিটির সাধারণ সম্পাদক সজল আহমেদ।
দুটি করে নৌকার টান হয়। বাইচ দেখে দর্শকরা খুব উৎফুল্ল প্রকাশ করেছেন দর্শকরা এমনটই জানিয়েছেন। নৌকা বাইচে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে আগলার লিটন-২ এবং রানার্সআপ হয়েছে সুলতানা এক্সপ্রেস। পরে চ্যাম্পিয়ন নৌকাকে মোটর সাইকেল এবং রানার্সআপকে ফ্রিজ পুরস্কার দেয়া হয়েছে।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামন তরুন এবং উদ্বোধক ছিলেন নবাবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মিজানূর রহমান ভূইয়া কিসমত।
বিশেষ অতিথি ছিলেন দোহার সার্কেলের এএসপি আশরাফুল আলম, নবাবগঞ্জ থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম শেখ, নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এর মেডিকেল অফিসার ডা. হরগোবিন্দ সরকার অনুপ।
নৌকা বাইচ ঐতিহ্য রক্ষা জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাশিম মোল্লা বলেন, আমাদের এই ক্রীড়া সংগঠন দেশের বিভিন্ন জেলা, উপজেলায় যেসব স্থানে আগে নৌকা বাইচ হতো। কিন্তু এখন নানা কারণে বন্ধ হয়ে গেছে। সেসব এলাকার আয়োজকদের বাইচ আয়োজনে উদ্বুদ্ধ করি। তিনি বলেন, বাইচ আয়োজন এখন অনেক ব্যয় বহুল।সরকারের পক্ষ থেকে ফুটবল, ক্রিকেট খেলার আয়োজন করলেও নৌকা বাইচ আয়োজনও করা হয় না।এমনকি কোনো সহযোগিতাও করে না। তবে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় এখনো নৌকা বাইচ আয়োজন করা হচ্ছে। আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে দাবি করছি প্রতিটি জেলা উপজেলায় একটি করে নৌকা বাইচ আয়োজনের।
সাধারণত বর্ষা মৌসুমে অনেক পানি থাকে কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে নদীতে পর্যাপ্ত পানি নেই। নানা কারণে বিলুপ্তির পথে হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ। আবহমান গ্রাম বাংলার এই ঐতিহ্য ধরে রাখতে সরকারের পক্ষ থেকে তেমন কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ে না। তবে গ্রামবাসীর উদ্যোগে এখনো হচ্ছে সুস্থ বিনোদনের এই উৎসব। এক সময় বর্ষায় নৌকা বাইচ ছিল দেশের প্রধান উৎসব। প্রতি বছর বর্ষাকালে ভরা ভাদ্রে এ উৎসব পালিত হয়।
সরজমিন নৌকা বাইচ উপলক্ষে নদীর দুই তীরে লাখ দর্শনার্থীর উপস্থিতি দেখা গেছে। সেখানে বসেছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী মেলা। স্থানীয়রা বলছেন, নৌকা বাইচ উপলক্ষে তাদের বাড়িতে এসেছে নতুন অতিথি। বাড়িতে বাড়িতে আয়োজন করা হয়েছে নানা মুখরোচক খাবারের। এমন আয়োজনে খুশি তারা।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.