ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার শিকারীপাড়া ইউনিয়নের বেড়িবাঁধ থেকে সোনাতলা বাজার ও বিষমপুর যাওয়ার একমাত্র রাস্তাটির চলাচলের অনুপযোগি হয়ে পড়েছে। এতে ইউনিয়নের ভদ্রকান্দা, শিবপুর, সোনাতলা, নুরপুর, নট্টি, বিষমপুর, মনিকান্দা ও শেখরনগর সহ আশপাশের গ্রামের জনগণ চরম ভোগান্তিতে পড়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ৪/৫ বছর আগে রাস্তাটির কিছু অংশে ইট দিয়ে সম্প্রসারণ করা হলেও এখন কোনো ইটের চিহ্ন নেই। দীর্ঘদিনেও সংস্কার না হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতেই কাদা পানিতে একাকার। সড়কের মাঝখানে সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য ছোট-বড় গর্তের। আর তাতে প্রতিনিয়ত জমছে পানি। যানবাহন তো দূরের কথা পায়ে হেটে চলাচল করাও এখন কষ্টসাধ্য। কয়েকদিনের বৃষ্টিতে এখন আবার সড়কের কিছু কিছু অংশে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। এতে সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার এলাকাবাসী। এছাড়া সড়কটি দিয়ে প্রতিনিয়ত আশপাশের দুটি মাধ্যমিক, দুটি উচ্চ মাধ্যমিক, ৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কয়েক ষত শিক্ষার্থী যাতায়াত করছে চরম দুর্ভোগে। শুষ্ক মৌসুমে কোন রকমে চলাচল করলেও বর্ষা আর বৃষ্টির দিনে চলাচল করা অসম্ভব।
শিবপুর গ্রামের আবুল হোসেন বলেন, ‘সড়কটি সংস্কারে মাঝে মাঝে কিছুটা উদ্যোগ নেয়া হলেও সামান্য বৃষ্টিতেই পুরনো চেহারা ফিরে পায়। সামান্য বৃষ্টি হলেই হাটু পানি জমে। আর পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় কাদা মাড়িয়ে চলাচল করতে হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা আনছার আলী বলেন, রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী। আমরা খুবই অবহেলিত। কোন রোগী হাসপাতালে নিতে গেলেও অটোরিক্সা বা গাড়ি পাওয়া যায় না। জনপ্রতিনিধিরা আমাদের শুধু আশ্বাই দেন, কাজ তো হয় না। বৃদ্ধা জমিলা খাতুন বলেন, কষ্ট মানে বাবা অনেক কষ্ট। এই রাস্তাটির কারনে চলাচল করা যায় না। এতটুকু রাস্তা কিন্ত ভাড়া দ্বিগুণ।
সোনাতলার আনছার আলী বলেন, আমাদের কপালে দুঃখ আছে তাই এত ভোগান্তি। চেয়ারম্যানকে বললে শুধু বলে রাস্তা হবে কিন্ত আর হয় না। জানি না কবে এ দুঃখ লাঘব হবে। একাধিক শিক্ষার্থী জানান, রাস্তাটির কারনে স্কুলে যেতে তাদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। বিশেষ করে বৃষ্টি দিনে কাদা মাড়িয়ে স্কুলে যেতে গেলে অনেক সময় পড়ে গিয়ে দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, একের পর এক চেয়ারম্যান আর মেম্বার পরিবর্তন হলেও তাদের সড়কে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। বর্ষা আর বৃষ্টির দিনে প্রয়োজনের তাগিদে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয় তাদের। জনপ্রতিনিধিরা বারবার আশ^াস দিলেও কথা রাখেনি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক স্কুল শিক্ষক বলেন, ‘ বর্তমান চেয়ারম্যান প্রায় দুই যুগ ধরে ক্ষমতায় আর একাধিক মেম্বার পরিবর্তন হলেও তাদের সড়কে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। রাস্তাটি পাকা করার দাবি দীর্ঘদিনের। তবে নির্বাচনের আগে জনপ্রতিনিধিরা পাকা রাস্তা নির্মাণের আশ্বাস দিলেও নির্বাচনের পর তা কথার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। এতেই যেন বছরের পর বছর ভোগান্তিতে পড়তে হয় স্থানীয়দের।
এ ব্যাপারে শিকারীপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আলীমুর রহমান খান পিয়ারার জানান, রাস্তাটির সংস্কার করার খুবই প্রয়োজন। আমি একাধিকবার চেষ্টা করেছি রাস্তাটি সংস্কারের জন্য। রাস্তাটি সংস্কারে আরো উদ্যোগ নেওয়া হবে।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.