দোহার উপজেলার নারিশা পশ্চিমচর এলাকায় একটি পরিত্যক্ত চালের চাতালে আশ্রয় নেওয়া একটি পরিবারের এক কিশোরীকে শ্লীলতাহানীর চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে এক বখাটের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় প্রতিবাদ করায় ওই কিশোরীর নানী বৃদ্ধা সখিনা (৯০) কে মারাত্বক জখম করেছে স্থানীয় জিয়ারত বেপারী। সে নারিশা পশ্চিমচর এলাকার জালাল বেপারীর ছেলে।
স্থানীয় ও ঘটনার শিকার পরিবার জানায়, পদ্মা নদীতে বাড়িঘর বিলিন হওয়ায় বেশ কয়েক বছর আগে নারিশা পশ্চিমচরের নুরু হাওলাদারের পরিত্যক্ত চালের চাতালে আশ্রয় নেয় ভুক্তাভোগী পরিবারটি। বসবাস শুরু করার পর থেকেই বিভিন্ন সময়ে ওই কিশোরীকে উত্যক্ত করতো বখাটে জিয়ারত বেপারী। কিন্তু জিয়ারত বেপারীরর পরিবার ক্ষমতাধর হওয়া কিশোরীর পরিবারটি কখনো স্থানীয়ভাবে বিচার পাইনি। গত শনিবার খুব সকালে ওই কিশোরী চাতালের একটি কক্ষে ঘুমিয়ে ছিল। এ সুযোগে জিয়ারত ওই ভাঙ্গাচোরা কক্ষের বেড়া সরিয়ে কিশোরীর হাত চেপে ধরে। এক পর্যায়ে তার শরীরের আপত্তিকর স্থানে হাত দেয়। কিশোরীকে জিয়ারত তার বাসায় যেতে বলে। এতে কিশোরী যেতে অনিহা প্রকাশ করে চিৎকার দেয়। তার ডাকচিৎকারে বৃদ্ধ নানী সখিনা ছুটে এসে জিয়ারতকে ঘটনাস্থলে পেয়ে বাধাঁ দেয়। এতে জিয়ারত কিশোরীর নানীকে বুকে লাথি দিয়ে ফেলে দিলে ইটের সাথে মাথায় আঘাত লেগে আহত হন সখিনা বেগম।
ঘটনাটি এলাকার অনেকে জানলেও বিষয়টি নিয়ে কেউ কোন প্রতিবাদ করেনি। উল্টো ঘটনাটি কাউকে না জানাতে জিয়ারত ওই অসহায় পরিবারটিকে বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দিচ্ছে।
এ বিষয়ে গত রবিবার ঘটনাস্থলে এই প্রতিবেদক গেলে ঘটনার সাথে জড়িত জিয়ারত এই প্রতিবেদককে নিউজটি না করতে হুমকি দেন।
নারিশা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ আবুল কালাম বলেন, ঘটনাটি যদি সত্যি হয় তবে এর কঠিন বিচার করা উচিত যাতে এ ধরনের কর্মকান্ড করতে কেউ পূনরায় সাহস না পায়। তবে স্থানীয় অনেকেই জিয়ারত বেপারীকে একজন মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে চিনেন। তার নৈতিক অবক্ষয়ের কথাও অনেকে স্বীকার করেছেন। তবে সামাজিক ভাবে ওই পরিবারটির অনেক প্রভাব থাকায় প্রকাশ্যে কেউ কিছু বলতে সাহস পান না।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন ঢাকা জেলা (দক্ষিণ) আঞ্চলিক এর সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন পল্লব বলেন, ঘটনাটি শুনার পর আমরা ঢাকা জেলা দক্ষিণ এর পক্ষ থেকে একটি টিম পাঠাই। ঘটনাটি গভীর তদন্ত চলছে। ভিকটিমের পাশে আমরা আছি। ভিকটিমের মানবাধিকার সুরক্ষায় যা যা করনীয় আমরা তাই করবো।
এব্যাপারে দোহার উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সাবরিনা লাকী জানান, ঘটনাটির ব্যাপারে আমরা অবগত নই। ভিকটিম বা ভিকটিমের পরিবারে অভিযোগ করলে আমরা বিষয়টি দেখবো।
দোহার থানার অফিসার ইনচার্জ মোস্তফা কামাল বলেন, ভিকটিম বা তার পরিবার অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.