রবিবার সাজ সকালেই ঢাকার দোহারের রাস্তা দাপিয়ে বেড়ানো পরিবহন ‘নগর’ ছুটেছে নগরের উদ্দেশ্যে। পিছনে সুনশান নিরবতায় পিছু নিয়েছে আরেক যাত্রী সেবা পরিবহন ‘আরাম’। জয়পাড়া থানার মোড় থেকে ঢাকার উদ্দেশ্য রওনা হওয়া পরিবহন দুইটি নুরপুর এলাকায় গেলে পিছন থেকে নগর পরিবহনের আরেকটি বেপরোয়া বাস সামনে থাকা আরাম ও নগরের আরেকটি বাসকে পিছে ফেলে যাবার জন্য জোড়ে টান দিতে গিয়ে রাস্তার পাশ্ববর্তি একটি খাবার হোটেলের উপর আচড়ে পরে। ঘটনাস্থলে থাকা ওই হোটেলের মালিক আব্দুল ওহাব রুটি বানানো অবস্থায় বিকট শব্দে আতকে উঠেন। প্রাণে বেঁচে যাওয়া এই বয়োজৈষ্ঠ ব্যক্তির স্বজনরা শুনে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। কান্নাজড়িত কন্ঠে তাদের প্রিয় মানুষটি অল্পের জন্য বেঁচ যাওয়ায় সৃষ্টিকর্তার কাছে শুকরিয়া জানান।
হোটেল মালিক আব্দুল ওহাব বলেন, সকালে হোটেলে রুটি তৈরি করছিলাম। হঠাৎ ২০/২৫ হাত দূর থেকে একটি বাস এসে আমার দোকানটা তছনছ করে দিল। আমি তো ভাবছিলাম আমি আর নাই। অল্পের জন্য বেঁচে গেলাম। এই দোকানটা দিয়ে আমার সংসার চলে। আমি নিঃস্ব হয়ে গেলাম।
গাড়িতে একজন যাত্রী ছিল বলে জানান ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী। এ বিষয়ে ওই পথে চলাচলকারি বেশ কয়েকজন যাত্রীর অভিযোগ, বারবার প্রশাসনের জরিমানার পরেও এ দুটি পরিবহন তাদের স্বেচ্ছাচারিতা চলিয়ে যাচ্ছে। তবে অভিযোগের তীর সব চাইতে বেশি নগর পরিবহনের দিকে। তারা বলছে এই পরিবহনটি সব সময় আগে ছেড়ে পিছনের কোন গাড়িকে সাইড দিতে চায় না। যেন রাস্তার রাজা তারাই। সকালের ঘটনাটিকে নিছক দুর্ঘটনা হিসেবে দেখছেন না স্থানীয়রা।
তারা বলছেন, কোন সুস্থ্য স্বাভাবিক ড্রাইভার হলে সামনে দুটি বাস থাকা স্বত্বেও এমন বেপরোয়া ভাবে গাড়ি টেনে ওভারটেকিং করতো না। নিশ্চই নগরের ওই চালক শাররীকভাবে সুস্থ্য নয়। এছাড়া হেলপার দিয়েও নগর পরিবহন মাঝে মধ্যে যাত্রী সেবা দিচ্ছেন এমন অভিযোগ রয়েছে এই পরিবহনের বিরুদ্ধে। ক্ষতিগ্রস্ত দোকানটির মালিককে উপযুক্ত ক্ষতিপূরন দেওয়ার দাবিও জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
এদিকে এই পথের র্দীঘদিনের যাত্রী পরিবহন করা আরাম পরিবহন নামে হলেও যাত্রী সেবায় কতটুকু আরাম পেয়েছে এ পথে চলা যাত্রীদের তা নিয়ে সংশ্রয় রয়েছে। পরিবহনটির বিরুদ্ধেও রয়েছে বিভিন্ন অভিযোগ। এছাড়া নগর পরিবহন দোহারের রাস্তাই শুধু নয় ঢাকার রাস্তায়ও দাপিয়ে চলে বীর দর্পে, কিন্তু সেবার নামে ঠন ঠন এই পরিবহনের। অনেকটা এ সড়কে আতংকের নাম নগর পরিবহন। র্দীঘদিনের পরিবহন ব্যাধিতে আক্রান্ত দোহারের এ দুটি পরিবহনের যাত্রীসেবার মান কবে ঠিক হবে সেই প্রশ্নের উত্তর জানা নেই কারো। এব্যাপারে যাত্রীরা দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.