1. news@priyobanglanews24.com : PRIYOBANGLANEWS24 :
রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:৩২ পূর্বাহ্ন

যে দেশের নাগরিকদের হাতে হাতে অস্ত্র!

রিপোর্টার:
  • আপডেট : রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৯
  • ৮৩৭ বার দেখা হয়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক। প্রিয়বাংলা নিউজ:
গোলাগুলির ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়েছে যুক্তরাষ্ট্রে । শুধু তাই নয়, পরিস্থিতি উদ্বেগজনক অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে। গত বছর ৪১টি হত্যাকা-ের ঘটনায় নিহত হয়েছে মোট ২১১ জন মার্কিনী। এরমধ্যে আল পাসোতে ২২ জন, ভার্জিনিয়া বিচে ১২ জন এবং আরো দু’টি ঘটনায় সবচেয়ে বেশি নিহতের ঘটনা ঘটেছে।

বার্তাসংস্থা এসোসিয়েটেড প্রেস, ইউএসএ টুডে এবং নর্থ-ইস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।

ওই গবেষণায় দেখা গেছে, গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি নিহতের ঘটনা ঘটেছে। গত কয়েক বছরে যুক্তরাষ্ট্রে অস্ত্র নির্মাণ কোম্পানিগুলোর রমরমা ব্যবসা জমে উঠেছে। নজিরবিহীনভাবে হাল্কা ও অন্যান্য আগ্নেয়াস্ত্রের বিক্রি বহুগুণে বেড়ে গেছে। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৩ কোটি অস্ত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। অর্থাৎ গড়ে প্রায় প্রতিটি নাগরিকের কাছে একটি করে অস্ত্র আছে।

আরেকটি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ১০০ নাগরিকের কাছে মোট ১২০টি আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে। সাধারণ মানুষের কাছে অস্ত্র মজুদের দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান বিশ্বে এক নম্বরে।

বলা হচ্ছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বর্ণবাদী নীতি, অস্ত্র বহনের অবাধ স্বাধীনতার প্রতি ট্রাম্পের সমর্থন, সাধারণ মানুষের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা ও আতঙ্ক কিংবা যেকোনো হামলার আশঙ্কা প্রভৃতি কারণে সাধারণ মানুষ অস্ত্র সংরক্ষণে উৎসাহী হয়ে পড়ছে।

সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে সহিংসতার মাত্রা অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেড়েছে। দেশটিতে গণহত্যা অর্থাৎ একবারে চারজনের বেশি মানুষ নিহত হওয়ার ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় এটাকে মার্কিন সমাজের জন্য বিপদঘন্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে। তাও আবার এমন একটি দেশে এ পরিস্থিতি বিরাজ করছে যে দেশটি কিনা মানবাধিকার ও ব্যক্তি স্বাধীনতার দাবি করে থাকে।

যুক্তরাষ্ট্রের মেট্রোপলিটন স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ জেমস ডেন্সলি বলেছেন, ক্ষোভ ও হতাশা থেকে মার্কিন সমাজে এ উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বলা যায়, বর্তমান সময়ে প্রায় সবার হাতে হাতে অস্ত্র রয়েছে।

হতাহতের সংখ্যা থেকে বোঝা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে এবং প্রতিটি নাগরিকের জীবন হুমকির সম্মুখীন। এ ছাড়া, অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাসবাদের হুমকি বেড়ে যাওয়ায় শুধু মার্কিন নাগরিকরাই নয় একইসঙ্গে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মানুষও উদ্বিগ্ন না হয়ে পারছে না। এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রে নিহতের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় মানবাধিকার কর্মীরা অস্ত্রআইন সংশোধনের দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু অস্ত্র ব্যবসা ব্যাপক লাভজনক হওয়ায় মার্কিন কংগ্রেস প্রতিনিধিরা অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের বিরোধিতা করছেন। তারাই এ সংক্রান্ত আইন প্রণয়নে বাধা সৃষ্টি করছেন। কারণ এ অস্ত্র ব্যবসার সঙ্গে মূলত তারাই জড়িত। তাই যুক্তরাষ্ট্রের জনগণও জানে সরকার ও কংগ্রেস নেতাদের কারণেই মার্কিন সমাজে ধারাবাহিক হত্যাকা-ের ঘটনা বেড়েই চলেছে। খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অস্ত্র সংক্রান্ত প্রচলিত আইনের কট্টর সমর্থক।

যুক্তরাষ্ট্রে গত বছর নিহতের সংখ্যা অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। এ পরিস্থিতি থেকে আশু মুক্তির কোনো সম্ভাবনা নেই, কোনো পদক্ষেপও নিতে দেখা যায় না। এ অবস্থায় আগামী বছর মার্কিনীদের জন্য আরো কঠিন পরিস্থিতি অপেক্ষা করছে বলে বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন

Leave a Reply

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ