1. news@priyobanglanews24.com : PRIYOBANGLANEWS24 :
শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১০:১২ পূর্বাহ্ন

নবাবগঞ্জে রাতের আধাঁরে কৃষি জমির মাটি যাচ্ছে ইটভাটায়

সিনিয়র প্রতিবেদক:
  • আপডেট : বৃহস্পতিবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২২
  • ৭৬৮ বার দেখা হয়েছে

ঢাকার নবাবগঞ্জে রাতের আধাঁরে কৃষি জমির মাটি কেটে বিক্রি করা হচ্ছে। সন্ধ্যার পর থেকে ভোর পর্যন্ত মাটি কেটে গাড়ি ভর্তি করে বিভিন্ন ইটভাটা ও জায়গা ভরাট করা হচ্ছে। মাটি পরিবহনে অতিরিক্ত ও ওভারলোড ট্রাক চলাচলের কারণে নষ্ট হচ্ছে রাস্তা এবং পার্শ্ববর্তী কৃষি জমি। অথচ সরকারের পাশাপাশি ঢাকা-১ আসনের সংসদ সদস্য সালমান এফ রহমানও কৃষি জমি রক্ষায় কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন। কিন্ত মাটিখেকোরা কোন নির্দেশনাই তোয়াক্কা করছে না। যদিও প্রশাসন একাধিক অভিযান চালিয়ে কয়েকজনকে জেল ও জরিমানা করেছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার বান্দুরা ইউনিয়নের মাঝিরকান্দা চালনাই বিলের বিদুৎ গ্রীডের পাশে রাতের আঁধারে বিস্তীর্ণ মাঠের মাঝখান থেকে এস্কেভেটর মেশিন দিয়ে চলছে মাটি কাটার কর্মযজ্ঞ। ট্রাকের পর ট্রাক ভর্তি করে উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় নেওয়া হচ্ছে এই মাটি। সন্ধ্যা থেকে শুরু হয়ে ভোর পর্যন্ত চলে মাটি কাটা ও মাটি পরিবহন। একই চিত্র দেখা যায়, বান্দুরা ইউনিয়নের কোঠাবাড়ি চকে, শোল্লা, বক্সনগর, নয়নশ্রী, শিকারীপাড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে দেদার কাটা হচ্ছে ফসলি জমির মাটি। সন্ধ্যার পর থেকে এসব এলাকায়ও মাটি কাটতে নেমে পড়েন মাটিখেকোরা।

মাটি কাটা বন্ধে প্রশাসন ইতিমধ্যে অভিযান চালিয়েছে বিভিন্ন স্থানে। গত এক সপ্তাহে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে ৫ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড ও ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন উপজেলা প্রশাসন। পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসন যৌথভাবে এ অভিযান পরিচালনা করে। তবে অভিযানের পরও বন্ধ হচ্ছে অবৈধভাবে মাটি কাটার মহোৎসব।

স্থানীয়রা জানান, মাটি ব্যবসায়ীদের ভয়াল থাবায় প্রতিদিন নষ্ট হচ্ছে কৃষিজমি। আর এভাবে প্রতিনিয়ত নষ্ট হওয়া কৃষিজমি নিয়ে ভাবনায় পড়েছে এই অঞ্চলের কৃষকরা। কোন ভাবেই বন্ধ হচ্ছেনা অবৈধ মাটিকাটা। জেল, জরিমানা করার পরও লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছেনা মাটি কাটা সিন্ডিকেটদের।
একাধিক কৃষক আক্ষেপের সাথে বলেন, সরকারি নিষেধাজ্ঞা ও সালমান এফ রহমান এমপি নির্দেশনা অমান্য করে কৃষি জমির মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে। যারা এমপি’র নির্দেশ অমান্য করছে দেখা উচিত তাদের ক্ষমতার উৎস কোথায়? তাহলে কি আমাদের এমপি চেয়ে তাদের ক্ষমতা বেশি প্রশ্ন করেন কৃষকরা।

কৃষকরা আরো জানান, এভাবে প্রতিনিয়ন কৃষি জমি থেকে মাটি কেটে নেওয়ার ফলে কমে যাচ্ছে কৃষি জমি। এতে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে প্রকৃত কৃষকরা। মাটি ব্যবসায়ীরা জমি এমন ভাবে কাটে যাতে পাশের জমিটিও ভেঙে যায়। ফলে বাধ্য হয়ে পাশের জমির মালিকও মাটি ব্যবসায়ীদের কাছে তার জমি বিক্রি করতে বাধ্য হয়। পাশাপাশিা মাটি পরিবহনের কারনে পাশে জমির সব ফসল নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়া পুকুর সংস্কার ও খননের নামে দিব্যি মাটি বিক্রি করা হচ্ছে।

অন্যদিকে ইটভাটার মালিকদের দাবি টাকা দিয়ে তারা মাটি কিনে নিচ্ছে। কোথায় থেকে মাটি আসে এটা তাদের দেখার বিষয় নয়। এক ইটভাটার মালিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, পত্রিকায় লিখলে মাটি ব্যবসায়ীদের কোন ক্ষতি না হলেও তাদেরকে বেশি দামে মাটি কিনতে হয়। যত নিউজ হয়, মাটির দাম ততো বাড়ে বলে জানান তিনি।

বান্দুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হুমায়ন কবির বলেন, আমি শুনেছি আমার ইউনিয়নের চালনাই চক ও কোঠাবাড়ি চকে রাতের আধাঁরে ভেকু দিয়ে মাটি কাটা হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নবাবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জকে জানিয়েছি। এদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে কৃষি জমি বিপন্ন হবে। আমাদের এমপি মহোদয় কৃষি জমি রক্ষায় কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন ।

এবিষয়ে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) অরুন কৃষ্ণ পাল গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা বিভিন্ন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে জেল জরিমানা করেছি। অভিযান চলমান রয়েছে। কোথাও এরকম ঘটনা হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন

Leave a Reply

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ