দেশের সামুুদ্রিক মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে নৌ পুলিশ প্রতিবছর ২০ মে হতে ২৩ জুলাই পর্যন্ত মোট ৬৫ দিন সমুদ্রসীমায় অভিযান পরিচালনা করে থাকে। এবারও ৬৫ দিন সফলতার সাথে অভিযান চালিয়েছে নৌ পুলিশ। সামুদ্রিক মাছের জন্য অভয়ারণ্য সৃষ্টি করা, নিষিদ্ধকালীন সময়ে সমুদ্রে মৎস্য আহরন বন্ধ করা, সমুদ্রসীমায় অবৈধভাবে যান চলাচল, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই সহ আইন-শৃঙ্খলা পরিপন্থী বিভিন্ন কাজ বন্ধে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
নৌ পুলিশ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান, এবছর ২০ মে হতে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিনে ৪৪ টি থানা ও ফাঁড়ির ৩২১ জন পুলিশ সদস্যের সমন্বয়ে ৩ হাজার ৪৩ টি অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে ২৬ জনের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করা হয়। এছাড়া ১৪০ জনকে ৮ লাখ ৪৯ হাজার ৭শ’ টাকা, ৮টি ট্রলার মালিককে ২ লাখ ১৩ হাজার টাকা, ১৫ টি নৌকার মালিককে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং ৮ টি বরফকল মালিককে ৪২ হাজার ৫শ টাকা জরিমানা করা হয়।
২০২০ সালে ৬৫ দিনের অভিযানে ১ কোটি ৮ লাখ ৮০ হাজার ৪শ’ ৩৯ মিটার অবৈধ জাল এবং ৭ হাজার ৬শ ২৮ কেজি মাছ উদ্ধার করা হয়। আর ২০২১ সালে ৬৫ দিনের অভিযানে উদ্ধার করা হয় ৩ কোটি ৪৩ লাখ ৪১ হাজার ১শ ৮০ মিটার অবৈধ জাল এবং ১ হাজার ৯শ ৫৫ কেজি মাছ।
এছাড়া শুধুমাত্র আইন প্রয়োগকরে মামলা ও জরিমানা দিয়ে নয় বরং সচেতনতার মাধ্যমে জনগনের স্বতঃস্ফুর্ত অংশগ্রহনকে কাজে লাগিয়ে সামুদ্রিক মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্যেও নৌ পুলিশ কাজ করছে। সচেতনতার লক্ষ্যে নিয়মিত পরিদর্শন করা হয়েছে বরফকল, আড়ৎ, বাজার, ফিসিংবোট ঘাট, মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ও মাছ ঘাট। বরফকল মালিক সমিতি, ফিসিংবোট মালিক সমিতি ও জেলেদের সাথে সচেতনতামূলক সভার আয়োজনের মাধ্যমে তাদেরকে নিষিদ্ধকালীন সময়ে সমুদ্রসীমায় মৎস্য আহরন না করার জন্য সচেতন করা হয়। যার ফলে নৌ পুলিশের কর্মতৎপরতা এবং জনগনের সম্পৃক্ততায় এ বছর নিষিদ্ধকালীন সময়ে সমুদ্রসীমায় মৎস্য আহরনের পরিমান উল্লেখ্যযোগ্য হারে কমে গিয়েছে বলে জানান নৌ পুলিশ।
সমুদ্রসীমায় ৬৫ দিনের অভিযান প্রসঙ্গে নৌ পুলিশ প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোঃ আতিকুল ইসলাম বিপিএম (বার), পিপিএম(বার) বলেন, “সামুদ্রিক জলসীমানায় নিষিদ্ধকালীন সময়ে মাছ শিকার বন্ধে নৌ পুলিশ গতানুগতিক পুলিশিং এর বাইরে সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকায় অবস্থিত সকল বরফকল বন্ধ রাখার ব্যবস্থা গ্রহন করে, যাতে কেউ বরফ নিয়ে সমুদ্রে যেতে না পারে। এছাড়া ইন্টিলিজেন্স বেইসড পুলিশিং তথা জেলেপল্লী হতে যাতে কেউ গোপনে সমুদ্রে যেতে না পারে এবং কোন ট্রলার ঘাট ছেড়ে যেতে না পারে কিংবা কোন সংঘবদ্ধ দল সরকারী নিষেধাজ্ঞা অমান্য করতে না পারে সে ব্যবস্থা গ্রহন করেছে। এতে বিগত বছরগুলোর তুলনায় সমুদ্রে ইলিশ, চিংড়ি ও চিংড়ি জাতীয় মাছসহ সামুদ্রিক মাছের পরিমান ব্যপকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রোটিনের অন্যতম উৎস এই সামুদ্রিক মাছ বাংলাদেশের মানুষের আমিষের চাহিদা পূরণ করে বর্হিবিশ্বে রপ্তানির মাধ্যমে বাংলাদেশের “ব্লু ইকোনমিতে” এক নতুন সম্ভাবনার ক্ষেত্র সৃষ্টিতে ভূমিকা পালন করবে।”
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.