1. news@priyobanglanews24.com : PRIYOBANGLANEWS24 :
বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:১৩ পূর্বাহ্ন

সরকারি নিদের্শনা অমান্য করে বান্দুরা হলিক্রশ স্কুল এন্ড কলেজে পরীক্ষা!

শওকত আলী রতন:
  • আপডেট : শনিবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২০
  • ১০৫৩ বার দেখা হয়েছে

সরকারি নিদের্শনা অমান্য করে করোনা ঝুঁকির মধ্যেই ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার অন্যতম বিদ্যাপীঠ বান্দুরা হলিক্রশ স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়েছেন। আগামী ৯ নভেম্বর থেকে ৭ম শ্রেণি থেকে ৮ম শ্রেণির বিশেষ শাখায় উন্নীত হওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে এসে পরীক্ষা দিতে হবে বলে জানা যায়। দেওয়া হয়েছে পরীক্ষার রুটিন। এছাড়া একের পর এক পরীক্ষার আয়োজন করছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। যেখানে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে বেতন ফি আদায়, প্রশ্নপত্র সংগ্রহ ও খাতা জমা দিতে হচ্ছে। করোনা ঝুঁকি নিয়ে বিদ্যালয়ে যাতায়াতে উদ্বিগ্ন শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা। অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের অভিযোগ পরীক্ষার নামে অর্থ আদায়ে নেমেছে প্রতিষ্ঠানটি।

দেশে করোনার ভাইরাসের শুরু থেকেই সরকার দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কোচিং সেন্টার বন্ধের ঘোষনা করে। মার্চ থেকে এখন পর্যন্ত সেই সিদ্ধান্তে অটল রয়েছে সরকার। ইতমধ্যেই চলতি বছরের জেএসসি ও পিইসি পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। সবশেষ বুধবার শিক্ষামন্ত্রী ঘোষনা দিয়েছে এবারের মাধ্যমিকেও বার্ষিক পরীক্ষা হবে না। অ্যাসাইনমেন্ট মূলায়নের মাধ্যমে তাদের পরবর্তী শ্রেণিকে উত্তীর্ণ করা হবে। তবে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য শুরু থেকেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে অনলাইন ক্লাসের প্রতি তাগিদ দিয়ে আসলে সেদিকে ভ্রুক্ষেপ করছে না। সরকারের নির্দেশনাকে অমান্য করে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মনগড়াভাবে পরীক্ষা আয়োজন করছে।

বিদ্যালয়ে এসে প্রশ্ন সংগ্রহ ও জমা দেওয়ার সময় মানা হচ্ছে না সামাজিক দুরত্ব কিংবা মাস্ক পরিধানের মতো গুরুত্বপূর্ণ আরো অনেক বিষয়। এতে শিক্ষার্থীরা করোনা ঝুঁকি নিয়েই স্কুলে যাতায়াত করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

জানা গেছে, গত ১ মাসের ব্যবধানে ইন হাউজ পরীক্ষা নামে দুটি পরীক্ষা আয়োজন করে স্কুলটি। যেখানে শিক্ষার্থীরা স্কুলে উপস্থিত হয়ে প্রশ্নপত্র সংগ্রহ ও পরীক্ষা শেষে আবার খাতা জমা দেওয়ার জন্য স্কুলে যেতে হয়েছে। যেই পরীক্ষায় মানা হয়নি নিয়ম কানুন। ছিল না সময়সূচী মেনে পরীক্ষা দেওয়া কিংবা অভিভাকদের সামনে পরীক্ষার দেওয়ার বিষয়টি। পরীক্ষার বিষয়টি এখন স্কুল শিক্ষার্থীদের কাছে তুচ্ছ বিষয়ে পরিনত হয়েছে। পরীক্ষার দেওয়ার আগে যে ভয় কাজ করতো সেটিও কেটে গেছে।

বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা এ মাসের অনুষ্ঠিত পরীক্ষার খাতা জমা দেওয়ার জন্য স্কুলে যায়। শ্রেণিকক্ষে জড়ো হয়ে সবাই খাতা জমা দেয়। সেখানে অনেক শিক্ষার্থীদের মাস্ক ব্যবহার করতে দেখা যায়নি। মাস্ক পরিধানের বিষয়ে শিক্ষকদের তেমন ভূমিকা চোখে পড়েনি।

এক শিক্ষার্থী জানায়, মাস্ক পড়ার ব্যাপারে স্যাররা আমাদের কিছু বলে না। কিন্তু বেতন আদায়ের ব্যাপারে তারা খুবই কঠোর। তারা বারবার তাগিদ দেয় যে কারনে করোনার মধ্যেই আমাদের স্কুলে আসতে হচ্ছে। পরীক্ষায় অংশগ্রহন না করলে প্রমোশনের ভয় দেখায় বলে অভিযোগ রয়েছে।

এক শিক্ষার্থীরা জানান, রুটিনে পরীক্ষার খাতা সকাল ১০টা থেকে ১২টার মধ্যে জমা দেওয়ার জন্য বলা হলেও আমি ১১টায় খাতা জমা দিতে গেলে সুজীত সরকার স্যার আমাকে মারধর করেছে।

কথা হয় সপ্তম শ্রেণির কয়েকজন ছাত্রের সাথে। বন্ধের দিনে বিদ্যালয়ে কেন? প্রশ্ন করা হলে তারা জানান, বিদ্যালয়ের ম্যাগাজিন বের হবে। তাই ছবি তুলতে এসেছি। প্রতিটি ক্লাশের গ্রুপ ছবি। একসাথে বসে ও দাঁড়িয়ে মাস্ক ছাড়াই গ্রুপ ছবি তুলতে হয়েছে বলে জানান তারা।

একটি সুত্রে জানা গেছে, আগামী ৯ নভেম্বর থেকে সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মুল্যায়ন পরীক্ষার আয়োজন করা হয়েছে। সব বিষয়ের পরীক্ষা স্কুলে গিয়ে দিতে হবে বলে জানা গেছে। ইতিমধ্যে শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয়েছে রুটিন। এতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের মনে।

এ ব্যাপারে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক অভিভাবক জানান, করোনার মধ্যে পরীক্ষার নাম করে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বেতন আদায় করছে। একসাথে বেতন এতগুলো টাকা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে অনেক পরিবারকে। এছাড়া স্কুলে গিয়ে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিলে স্বাস্থ্য ঝুঁকি থেকেই যায়। তাই এ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা উচিত।

নবাবগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সিদ্দিকী নুর আলম বলেন, শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে এনে ম্যাগাজিনের জন্য ছবি তোলা এবং পরীক্ষা নেওয়া ঝুঁকিপূর্ণ। আমি প্রতিষ্ঠানের প্রধানকে বলে দিয়েছি এসব করা যাবে না। এখন শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে এনে পরীক্ষা নেওয়ারও কোন সুযোগ নেই। সরকারের নির্দেশনা অমান্য করলে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে বান্দুরা হলিক্রশ স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ ব্রাদার আলবার্ট রতœ এর মোবাইলে কল দিলেও তিনি রিসিভ করেনি।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন

Leave a Reply

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ