আঁতকে উঠার মতো নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে মিনি কক্সবাজার খ্যাত ঢাকা জেলার দোহার উপজেলার মৈনট পদ্মাপারে। পদ্মায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় গেল এক সপ্তাহ ধরে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে মৈনটঘাট ও এর আশপাশের এলাকায়।
এদিকে, ভাঙনের তীব্রতা ভয়াবহ হওয়ায় ভাঙন প্রতিরোধে বৃহস্পতিবার থেকে দ্রæত গতিতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে সেনাবাহিনী। দুপুরে ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন দোহার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোবাশ্বের আলম সহ স্থানীয় জনপ্রতিধিরা। তারা জানান, ঢাকা-১ আসনের সংসদ সদস্য সালমান এফ রহমানের নির্দেশে ভাঙন প্রতিরোধে দ্রুত গতিতে কাজ শুরু হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় সেনাবাহিনীর তত্ত¡াবধানে রাবার ড্যাম্পিং ও জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন প্রতিরোধে চলছে ব্যাপক তোড়জোড়। তবে পদ্মা নদীতে স্রোতের তীব্রতা থাকায় ভাঙন আতঙ্কে দোকানপাট ও স্থাপনা সড়িয়ে নিতে দেখা গেছে স্থানীয়দের।
নদীপারের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা জানান, হঠাৎ পদ্মায় পানি বৃদ্ধি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে গেল কয়েকদিনে মৈনটঘাট সংলগ্ন মসজিদ, ভাসমান রেষ্টুরেন্ট, লঞ্চঘাট, কৃষিজমি সহ বেশ কয়েকটি দোকানপাট চলে গেছে নদীগর্ভে। ভাঙন আতঙ্কে রাতভর দোকানপাটের মালামাল সড়িয়ে নিচ্ছে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।
স্থানীয় ব্যবসায়ী শেখ কামাল বলেন, তিন চারদিন ধরে আতঙ্কে আছি। সারারাত ঘুমাতে পারি না। দোকানেই বসে থাকি। কখন আমার স্বপ্নের পদ্মা বিলাস হোটেলটি ভেঙে যায়। এভাবে ভাঙতে থাকলে দোকানপাটের পাশাপাশি আমাদের বসতবাড়িও ভেঙে যাবে।
দেলোয়ার নামে আরেক ব্যবসায়ী বলেন, তিনদিনে তিনবার দোকান সরিয়েছি, এখন আমরা ক্লান্ত। সেনাবাহিনী আজ থেকে ভাঙন রোধে কাজ করছে। আশাকরি, আল্লাহর রহমতে ভাঙন এখন রোধ হবে।
ব্যবসায়ী আব্দুল আজিজ জানান, পদ্মার ভাঙনে মানুষ দিশেহারা। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ব্যবসায়ীরা, ভেঙে গেছে একাধিক দোকানপাট। এমপি সালামান এফ রহমান উদ্যোগ নেয়ায় সেনাবাহিনী কাজ শুরু করেছে। আশা করি, তীব্র ভাঙন থেকে রক্ষা পাবো।
মৈনটঘাট এলাকার একাধিক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বলেন, পদ্মায় তীব্র স্রোতের ফলে নদীর পাড় বড় বড় চাপ ধরে নিমিষেই ভেঙে যাচ্ছে। দোকানপাট নিয়ে চিন্তিত আমরা। মৈনট ঘাট এলাকার তীর সংরক্ষণ ও ভাঙনরোধে স্থায়ী ব্যবস্থা না নিলে অচিরেই নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে মিনি কক্সবাজার খ্যাত এই পর্যটন এলাকাটি। এতে বেকার হয়ে পড়বেন কয়েকহাজার ব্যবসায়ী ও শ্রমিক।
দোহার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আলমগীর হোসেন বলেন, মৈনটঘাট এলাকার ভয়াভব ভাঙনের কথা সালমান এফ রহমান এমপিকে জানালে তিনি দ্রæত পানি উন্নয়ন বোর্ড সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। বৃহস্পতিবার থেকে ভাঙন এলাকায় কাজ শুরু করেছে সেনাবাহিনী। আশা রাখি, দ্রæতই ভাঙনের তীব্রতা কমে আসবে।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.