কাউকে এখন আর ছুটতে হয় না মিল বাড়িতে। ভ্যান, রিক্সা বা মাথায় বহন করতে হয় না ধান বা চালের বস্তা। আর যেতেও হয় না ধান ভাঙানোর জন্য বাজারে। আধুনিকতার ছোঁয়ায় এখন পাল্টে গেছে সে চিত্র । ফোন করলে বাড়িতেই যাচ্ছে ধান ভাঙার কল। অল্প সময়েই গেরস্থের বাড়িতেই ধান ভেঙে চাল করে দিচ্ছে ভ্রাম্যমান ধান ভাঙার মেশিনের মাধ্যমে। সময়ও লাগছে কম। খরচও হচ্ছে অল্প।
ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে এই ভ্রাম্যমান ধান ভাঙ্গার কলের বিস্তার ঘটেছে এবং দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আগে ধান ভাঙানোর জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা বিদ্যুতের অপেক্ষায় বসে থাকতে হতো। রিক্সা অথবা মাথায় বহন করেই ধান নিয়ে যেতে হতো মেশিনের কাছে। সময়ের সাথে সাথে বদলে গেছে সে চিত্র। ভ্রাম্যমান ধান ভাঙার কলের মাধ্যমে খুব অল্প সময়ে বাড়িতেই ধান থেকে চাল বের করা যাচ্ছে। গ্রামাঞ্চলেও দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ধান ভাঙার ভ্রাম্যমান কল।
উপজেলার জৈনতপুর গ্রামের ধান ভাঙানোর কলের মালিক শামীম হোসেন বলেন, দীর্ঘ এক যুগ ধরে মানুষের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে ধান ভাঙানোর কাজ সেরে দিচ্ছেন তিনি। ফোন করলেই এই ধান ভাঙার মেশিন নিয়ে হাজির হচ্ছে। আর খুব অল্প সময়েই ধান ভেঙে চাল করে দেওয়া হচ্ছে।
একসময় বাড়িতে কৃষি কাজের জন্য পাওয়ার টিলার ব্যবহার করতেন শামীম হোসেন। সময়ের ব্যবধানে ধান ভাঙানোর সহজ উপায় হিসেবে পাওয়ার টিলের মাঝেই হলার স্থাপন করেন। আর তা দিয়েই বর্তমানে মানুষের বাড়িতে বাড়িতে গিয়েই ধান ভাঙানোর কাজ করছেন অনায়াসে।
জানা গেছে, একসময় ধান ভাঙানোর মেশিনের জন্য অনেকদূর যেতে হতো ধান নিয়ে। কেউ কেউ ঢেঁকি দিয়েও চাল গুঁড়োর কাজ করতেন। অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ না থাকায় শ্যালো মেশিনে হলার বসিয়ে ধান ভাঙানোর কাজ করা হতো।
উপজেলার বারুয়াখালী ইউনিয়নের জৈনতপুর ছবুরা খাতুন বলেন, এখন আর ধান ভাঙানোর সমস্যা নাই। যেতে হয় না আর বাজারে। ফোন করলেই বাড়িতে চলে আসে ভ্রাম্যমান ধান ভাঙানো মেশিন। বাজারের চাইতে ভ্রাম্যমান কলে ধান ভাঙ্গালে আমাদের খচর, কষ্ট ও সময় কম লাগে।
দীর্ঘগ্রাম এলাকার হাসিনা বেগম বলেন, কয়েক বছর আগেও ধান ভাঙানোর জন্য বাজারে নিয়ে যেতে হতো। এখন ফোন করলেই মেশিন বাড়িতে এসে ধান থেকে চাল বের করে দিচ্ছে। আমাদেরও কষ্টও কমছে। খরচও অল্প।
সময়ের বিবর্তনে প্রযুক্তির কল্যাণে শ্যালো মেশিনের মধ্যেই হলার স্থাপন করে এখন ধান ভাঙানোর কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছে অনেকেই।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.