1. news@priyobanglanews24.com : PRIYOBANGLANEWS24 :
শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১১:০৬ পূর্বাহ্ন

আজ ঈদের দিন

প্রিয়বাংলা নিউজ২৪
  • আপডেট : সোমবার, ২৫ মে, ২০২০
  • ১১৫৭ বার দেখা হয়েছে

রমজানের ওই রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ/আপনাকে তুই বিলিয়ে দে, শোন আসমানি তাগিদ/তোর সোনাদানা, বালাখানা সব রাহে লিলস্নাহ দে যাকাত/মুর্দা মুসলিমের আজ ভাঙাইতে নিঁদ/ও মন রমজানের ওই রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ…. বছর ঘুরে রমজান শেষে আবারও ফিরে এসেছে মুসলিম উম্মাহর সবচেয়ে বড় উৎসব ঈদুল ফিতরের কাঙ্খিত সেইদিন। আজ ঈদের দিন। তবে বিশ্বব্যাপী মরণব্যাধি করোনা মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ায় বরাবরের মতো সে আনন্দ এবার যেন অনেকটাই ফিঁকে হয়ে গেছে। নিম্নবিত্ত থেকে শুরু করে উচ্চবিত্ত পর্যন্ত সর্বস্তরের ধর্মপ্রাণ মুসলমান এবার শুধু জামায়াতে ঈদের নামাজ আদায়ের মধ্য দিয়ে ধর্মীয় এ উৎসবের দিনটুকু পার করছে।

করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার সারাদেশে ঈদের নামাজের জামাত খোলা ময়দানে না করে শুধুমাত্র মসজিদে আদায় করার জন্য সরকারি নির্দেশনার কারণে ঈদ আনন্দ আরও খানিকটা ম্লান হয়ে গেছে। কেননা ইসলামী শরীয়তে ঈদগাহ বা খোলা জায়গায় পবিত্র ঈদুল-ফিতরের নামাজের জামাত আদায়ের ব্যাপারে উৎসাহিত করা হয়েছে। যুগ যুগ ধরে প্রধানত ঈদগাহেই ঈদের নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।

এছাড়া এবার শিশু, বয়োবৃদ্ধ, অসুস্থ ব্যক্তি এবং তাদের সেবায় নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গকে ঈদের নামাজের জামাতে অংশগ্রহণ না করার এবং জামাত শেষে কোলাকুলি এবং পরস্পর হাত মেলানো পরিহার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে এবার ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। ফলে ঈদের জামাত ঘিরে ধর্মপ্রাণ মুসলিস্নদের মাঝে যে আনন্দের শ্রোতধারা বয়ে যায়, তাতেও ভাটা পড়েছে।

অন্যদিকে সারদেশে অঘোষিত লকডাউন এবং বাস-ট্রেন-লঞ্চসহ সব ধরনের গণপরিবহণ বন্ধ থাকায় শহরের কর্মস্থল থেকে লাখ লাখ মানুষ গ্রামে ফিরতে পারেনি। প্রবাসীদের কাছ থেকে আসেনি আত্মীয়-স্বজনদের জন্য ঈদ খরচার অর্থ। বেতন-বোনাস হয়নি চাকরিজীবী অনেকের; কেউবা করোনা পরিস্থিতির এই দুঃসময়ে চাকরিচ্যুত হয়েছেন; কর্মহীন হয়ে পড়েছেন লাখ লাখ পেশাজীবী মানুষ। অনেকের ঘরে করোনায় সংক্রমিত অসুস্থ রোগী; কারো স্বজন মৃত্যু যন্ত্রণায় হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছেন। করোনার উপসর্গ নিয়ে বিপুল সংখ্যক মানুষ রয়েছে হোম কোয়ারেন্টিন ও প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে। এ মরণব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে অতি সম্প্রতি অনেকের ভাই-বোন-মা-বাবাসহ নিকটাত্মীয়-স্বজন মারা গেছেন। এসব পরিবারে ঈদ আনন্দ অনেকটা নিরানন্দে রূপ নিয়েছে।

তবে এ কঠিন দুঃসময়ের মাঝেও অনেকে পরিবারের শিশু সন্তানদের মুখের দিকে চেয়ে ঈদ আনন্দকে কিছুটা হলেও জিইয়ে রাখার প্রাণবন্ত চেষ্টা চালিয়েছেন। করোনা সংক্রমণের ভীতি ও আর্থিক দৈন্যতা উপেক্ষা করে অনেকে পরিবারের অন্যান্য বাজেট কিছুটা কাটছাঁট করে শিশু-সন্তানদের জন্য নতুন পোশাক কিনেছেন। আত্মীয়-স্বজন প্রতিবেশীদের দাওয়া দিতে না পারলেও ঈদের দিন পরিবারের সদস্যরা যাতে ভালো কিছু খেতে পারে এজন্য অনেকে কমবেশি সেমাই, পোলাওয়ের চাল, মাংস কিনেছেন। কেউ কেউ এসব খাদ্যদ্রব্য কিনে গরিব আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে পাঠিয়েছেন। সামর্থ্যবানরা অনেকে ঈদ উপলক্ষে নতুন জামা-কাপড় না কিনে সে টাকায় বিভিন্ন উপহারসামগ্রী কিনে দুস্থ অসহায় মানুষের মাঝে বিলিয়ে আত্মতৃপ্তি খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করেছেন। সরকারিভাবেই নিম্নবিত্তের মাঝে ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।

এদিকে প্রতিবছর ঈদের আগে গ্রামীণ অর্থনীতি যেভাবে চাঙ্গা হয়ে ওঠে, এবার দেশের কোথাও সে চিত্রের দেখা মেলেনি। গ্রামের হাটে-ঘাটে ঈদ কেনাকাটা একরকম হয়নি বললেই চলে। সংশ্লিষ্টরা জানান, ১৫ রোজার পর থেকেই গ্রামের মানুষের কাছে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের পাশাপাশি শহরে চাকরিজীবী বাবা-মা, ভাইবোনসহ নিকটাত্মীয়-স্বজনদের বেতন বোনাসের টাকা আসতে শুরু করে। সে টাকায় নতুন কাপড়-চোপড়, মিষ্টান্ন, সেমাই, পোলাওয়ের চাল ও মাংসসহ নানা উপাদেয় খাবার কেনার ধুম পড়ে যায়। এছাড়া ঈদের আগে শহর থেকে কর্মজীবী স্বামী-সন্তান গ্রামে ফিরে এলে তাদের কী খাওয়ানো হবে তার প্রস্তুতিতে কর্মচাঞ্চল্য বাড়ে প্রতিটি পরিবারে। অথচ করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার এসব প্রস্তুতি নেই বললেই চলে।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন

Leave a Reply

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ