রাত পোহালে শুরু হবে বড়দিনের আনুষ্ঠানিকতা। খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় এই ধর্মীয় উৎসব উপলক্ষে দোহার-নবাবগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানের ৫টি গির্জা ও ১৮টি গ্রামের খ্রিষ্টান পল্লীগুলোতে সাজ সাজ রব। গীর্জা থেকে খ্রিস্টান বাড়ি বাড়ি সবখানেই এখন বড়দিন পালনের প্রস্ততি সম্পন্ন। বাড়িগুলোর সামনে সাজানো হয়েছে ক্রিসমাস ট্রি। অতিথি আপ্যায়নের জন্য বাড়িতে বাড়িতে তৈরি করা হচ্ছে রকমারি পিঠা।
গির্জা ও উপধর্মপল্লিগুলোকে সাজানো হয়েছে দৃষ্টিনন্দন ঝলমলে আলোকসজ্জায়। গির্জার ভেতরে দৃষ্টিনন্দন ডিসপ্লের পাশাপাশি প্রাঙ্গণে কুঁড়েঘর নির্মাণ করা হয়েছে। তাতে রাখা হয়েছে মাতা মেরির কোলে যিশুখ্রিষ্টের মূর্তি।
নবাবগঞ্জ উপজেলার হাসনাবাদ, গোল্লা, তুইতাইল, বক্সনগর ও সোনাবাজু সহ ১৮টি গ্রামের উদযাপিত হবে বড়দিন। প্রতিটি গ্রামেই এখন উৎসবের আবহ, চলছে নানা আয়োজন। তবে উৎসব আনন্দ নিজেদের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সবার মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার প্রত্যয় খ্রিস্ট ধর্মালম্বীদের।
গোল্লার বাসিন্দা শিশিলিয়া গমেজ বলেন, শেষ মুহূর্তে মা মেরির প্রতিকৃতি ছাড়াও গোয়ালঘরে শিশু যীশুকে ফুটিয়ে তোলা কাজ শেষ হয়েছে। সবচেয়ে বেশি আনন্দ এখন শিশু-কিশোরদের। ঘরে ঘরে আলোকসজ্জা করা হয়েছে।
হাসনাবাদ গ্রামের রতন ডি কস্তা বলেন, বাড়িতে বাড়িতে কেক, আর পিঠাপুলির আয়োজন করা হয়েছে। উৎসবের আলোয় নিজেকে রাঙিয়ে তুলতে শেষ মুহূর্তে ব্যস্ত সবাই। এসব কাজে ছোট শিশু থেকে শুরু করে যুবক, বৃদ্ধ সবাই সহযোগিতা করছে। বড়দিনের উৎসবের ঢেউ লাগতে শুরু করেছে অন্য ধর্মাবলম্বীদের মাঝেও। কারণ ধর্মীয় সম্প্রীতিও বড়দিনের একটা শিক্ষা।
হাসনাবাদ সেন্ট ইউফ্রেজীস বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ সিস্টার মেবেল কস্তা বলেন, বড়দিনে আমাদের বড় প্রার্থনা হচ্ছে মানুষের মধ্যে যেন ভ্রাতৃত্ববোধ গাঢ় হয়, পৃথিবী থেকে যেন অস্থিরতা দূর হয় এবং সবার মধ্যেই যাতে শান্তি বিরাজ করে।
নবাবগঞ্জের হাসনাবাদ জপমালা রানির গীর্জার পাল-পুরোহিত ফাদার স্ট্যানিসলাউস বলেন, বড়দিনের শিক্ষায় আলোকিত হয়ে উঠবে সমাজ। সব জরা পেছনে ফেলে শান্তিময় এক পৃথিবীর প্রার্থনা থাকবে এবারের বড়দিনে।
নবাবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সিরাজুল ইসলাম শেখ ও দোহার থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মোস্তফা কামাল বলেন, বড় দিনকে ঘিরে সর্বাত্মক নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিটি গীর্জায় পুলিশ পাহাড়া থাকবে ও টহল পুলিশও থাকবে। আশা করি নির্বিঘ্নে বড় দিনের উৎসব সম্পন্ন হবে।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.