PRIYOBANGLANEWS24
৩ মার্চ ২০২২, ১২:০১ অপরাহ্ন
অনলাইন সংস্করণ

প্রাচীন পদ্ধতিতে কৃষি সেচ

দোলনা সেচনি,সিয়ানি বা সেঁউতি পানি উত্তোলনের একটি প্রাচীন কৌশল। কালের পরিক্রমায় ও আধুনিক বিজ্ঞানের কল্যাণে সেচ পদ্ধতির বিবর্তন ঘটেছে। গ্রাম বাংলায় বিভিন্ন পদ্ধতিতে কৃষি জমিতে সেচ যন্ত্র ছিল যা আজ শুধু স্মৃতি বা মাঝে মাঝে দুই একটি সেচ পদ্ধতি চোখে পরে। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন সেচ পদ্ধতি বা যন্ত্রের নাম হলো দোন দিয়ে সেচ, দোলনা সেচনি, দোংগা বা জাঁত, ডায়ফ্রাম পাম্প, ট্রেডল পাম্প বা ঢেঁকিকল ইত্যাদি।
নবাবগঞ্জ উপজেলার কৈলাইল ইউনিয়নের মেলেং গ্রামে বৃহস্পতিবার দুই্জন কৃষক ইরি ধান ক্ষেতে দোলনা সেচ পদ্ধতিতে সেচ দিচ্ছে। তাদের জমির আশপাশে কোন সেচ পদ্ধতি না থাকার কারণে তারা জমির পাশের পুকুর থেকে প্রাচীন পদ্ধতিতে সেচ দিচ্ছে।

দোলনা সেচনি/ সেঁউতি/ সিয়ানি


প্রাচীনকালে পানি নেওয়ার বা রাখার পাথরের বা কাঠের বালতি থেকে মানুষ এ যন্ত্রের ধারণা পেয়েছে বলে ধারণা করা হয়ে থাকে। কোনো পানির আধার (নদী, খাল, বিল ইত্যাদি) থেকে চিকন/সরু খাল/নালা/দাড়া কেটে অনেক দূরে পানি নিয়ে যাওয়ার পদ্ধতি, বহু প্রাচীন একটি পদ্ধতি। আর পানির আধার হতে বালতি দিয়ে চিকন/সরু খাল/নালা/দাড়ায় পানি দিলে সেই পানি নালা বেয়ে নির্দিষ্ট ফসলের জমিতে গিয়ে পড়ত। বালতি দিয়ে নালায় পানি দেওয়া খুব সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। পরে সেই কাঠের বা লোহার বা আধুনিক টিনের চৌকোনা বা গোল বালতিকে দড়ি দিয়ে বেঁধে এই সরল যন্ত্রটি তৈরি করে সেচ ব্যবস্থাকে আরও সহজ করে তোলে।

তৈরির নিয়ম.

এ জন্য প্রথমে দরকার একটি টিনের( মুড়ির টিন/তেলের টিন) বালতি। কিছু বাঁশের লাঠি আর লম্বা দড়ি/সুতলি। হাতাওয়ালা একটি ঝুড়ি বা বেলচার মতো সেচনিতে ৪টি রশি বাঁধা থাকে। দুজন লোক মুখোমুখি দাঁড়ায় এবং প্রত্যেকে দুই হাতে ঝুড়ির এক পাশের দুটি রশি ধরে। উভয়ে একই সময়ে সেচনি দুলিয়ে পানি ভরে এবং তা টেনে তুলে জমিতে পানি সেচে দেয়। যন্ত্রটি বাঁশ বা পাতলা টিনের তৈরি, বানানো সহজ এবং চালাতে তেমন কোন প্রশিক্ষণ প্রয়োজন হয় না। এটি দিয়ে জলাশয়ের ও শস্যক্ষেতের ০.৯-১.২ মিটার (৩-৪ ফুট) নিচ থেকে সেচ দেওয়া যায়। পরিবারের মহিলা এবং অল্পবয়সীরাও যন্ত্রটি চালাতে পারে।

ব্যবহার কৌশল.

এই দোলনা সেচনি দিয়ে পানি সেচ দিতে দুই জন মানুষ দরকার হয়। দুই পাশের দুই করে চারটি দড়ি দুই হাতে করে দুই পাশে পানির আধারের (নদী, খাল, বিল, পুকুর) কাছে দুজন লোক মুখোমুখি দাঁড়ায় এবং প্রত্যেকে দুই হাতে ঝুড়ির এক পাশের দুটি রশি ধরে। উভয়ে এক সময়ে সেচনি দুলিয়ে পানি ভরে এবং তা টেনে তুলে জমিতে পানি সেচে দেয়। হাতে ধরা একটি রশিকে একবার ঢিল (লুজ) দিয়ে উপরের রশিকে টেনে ধরে বালতিকে পানিতে কাত করে ফেলা হয় এবং দড়িতে টান দিয়ে পানি ভর্তি বালতিকে টেনে উপরের খালে ফেলা হয়। এই বালতির রশি টানার মাঝেই রয়েছে একে ব্যবহারের সমস্ত কলাকৌশল। দুজনের মধ্যে ছন্দে না মিললে পানি তোলা সম্ভব নয়।

Facebook Comments Box

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ফেব্রুয়ারিতেই জাতীয় নির্বাচন হবে: আমানউল্লাহ আমান

নবাবগঞ্জে বিএনপির একাংশের ত্যাগী নেতাদের মতবিনিময় সভা

৫ শিশু শিক্ষার্থীকে বলাৎকারের অভিযোগে শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা

ফেসবুকে অপপ্রচারের প্রতিবাদে নুরনগর মীরেরডাঙ্গী এলাকাবাসীর সংবাদ সম্মেলন

নবাবগঞ্জে প্রতারণার ফাঁদে পড়ে নিঃস্ব ব্যবসায়ী হাবিবুর

নবাবগঞ্জে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উদযাপন

নবাবগঞ্জে কাবাডি প্রতিযোগিতায় বারুয়াখালীকে হারিয়ে চূড়াইন তারিনীবামা চ্যাম্পিয়ন

আ.লীগ নেতার সাথে ছবি ভাইরাল করার অভিযোগে নবাবগঞ্জে প্রবাসীকে কুপিয়ে জখম

দোহার ব্যারিস্টার নজরুল ইসলামের নির্বাচনী উঠান বৈঠক

নবাবগঞ্জে ইয়ুথ ব্লাড ডোনার্স ক্লাবের সপ্তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

১০

দোহারে চালু হলো সরকারি অনুমোদিত ভূমিসেবা সহায়তা কেন্দ্র

১১

নবাবগঞ্জে শরৎকালীন নাড়ু উৎসব ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান

১২

নবাবগঞ্জ উপজেলা এসএসসি ৮৭ কমিটি গঠন: সভাপতি খন্দকার সবুজ, সম্পাদক মিলন

১৩

নবাবগঞ্জে কোরআন অবমাননাকারীর ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল

১৪

নবাবগঞ্জে বন্ধুর স্মরণে বন্ধুদের স্মরণ সভা

১৫

নবাবগঞ্জে জাতীয় কন্যাশিশু দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা

১৬

নবাবগঞ্জে আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস পালিত

১৭

ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী হাফেজ মাওলানা নুরুল ইসলামের গণসংযোগ

১৮

নবাবগঞ্জে ৪ দফা দাবীতে ইসলামী ব্যাংকের গ্রাহকদের মানববন্ধন

১৯

নবাবগঞ্জে বিশ্ব শিক্ষক দিবসে শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা

২০