ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলায় ট্যানারীর বর্জ্যে দূষিত হচ্ছে কালিগঙ্গা নদীর পানি। কেরানীগঞ্জ ও সাভার উপজেলার সীমান্তবর্তী হরিণধরা এলাকায় গড়ে ওঠা ট্যানারীর বর্জ্যে কয়েক মাস ধরে নদীর বিশাল অংশ জুড়ে পানি দূষিত হচ্ছে।
সরেজমিনে জানা যায়. বর্তমানে সাভার এলাকায় ট্যানারী গড়ে ওঠায় ট্যানারীর বর্জ্য ধলেশ্বরী নদী হয়ে বুড়িগঙ্গায় মিশছে। বুড়িগঙ্গার হয়ে কেরানীগঞ্জের হযরতপুর খালের সাথে কালিগঙ্গার সংযুক্ত থাকায় নদীতে বর্জ্য ঢুকে পড়ছে কালিগঙ্গা নদীতে। ফলে কালিগঙ্গা নদীর পানির রঙ কালো হয়ে দূর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। এতে নদীর মাছ মরে ভেসে উঠছে। র্দুগন্ধের কারনে গোসলসহ আনুসাঙ্গিক কাজ করতে পারছে না স্থানীয়রা। নদীতে গোসল করার ফলে অনেকের শরীরে চুলকানি হচ্ছে বলে জানান এলাকাবাসী।
স্থানীয়রা জানান, কালিগঙ্গার পানি বর্ষা মৌসূমের আগে খুব টলটলে থাকে। এ অঞ্চলের বেশীর ভাগ মানুষ কৃষি কাজের উপর নির্ভরশীল। এ নদীর পানি দিয়ে তারা কৃষি কাজ করে থাকেন। তা ছাড়া নিজেদের গোসল থেকে শুরু করে রান্না ও গবাদিপশুকেও গোসল করিয়ে থাকেন নদীর পাড়ের মানুষেরা। জেলেরা মাছ শিকার করে জীবিকা উপার্জন করে থাকেন। নদীর এই মিঠা পানিতে মাছের স্বাদও ভিন্ন রকমের। কয়েক মাস যাবত নদীতে ট্যানারীর বর্জ্য ঢুকে পরিবেশকে দূষিত করছে সব মিলিয়ে বর্তমান নদীর অবস্থা খুবই খারাপ। এলাকাবাসী জানান, কর্তৃপক্ষ এখনি যদি এর কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করে ভবিষ্যতে আরও এর প্রভাবে পরিবেশকে দূষিত করে এ নদীর আরও ভয়াবহ অবস্থা ধারণ করবে।
নদীর পাড়ে বসবাসকারী মো. সাহালম বলেন, কালিগঙ্গা নদীর পানি দিয়ে এ অঞ্চলের কৃষকেরা তাদের চাহিদা মিটায়। দুই মাস যাবত দেখছি পানির রঙ কলো হয়ে দূর্গন্ধ বের হচ্ছে। পানি পঁচে যাওয়া মাছ মরে ভেসে ওঠছে।
শোল্লা ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার মো. মোহন বলেন, ট্যানারীর বর্জ্যে যে ভাবে নদীর পানি দূষিত হয়ে পরছে। সংশ্লিষ্ট কর্র্তৃপক্ষ যদি যথাযথ ব্যবস্থা না নেয় তা হলে এ অঞ্চলের কৃষকরা অর্থনৈতিক ভাবে পঙ্গু হয়ে পড়বে।
স্থানীয় যুবলীগ নেতা হানিফ খান বলেন, এমনিতেই এলাকার মানুষ কালিগঙ্গা নদী ভাঙ্গনে দিশেহারা স্থানীয়র বাসিন্দারা। তার মধ্যে বর্জ্য ঢুকে পানিকে দূষিত করছে এর একটা বিহিত না করলে খুবই সমস্যা হবে।
কৃষক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এ নদীর পানি আমাদের কৃষিকাজসহ দৈনন্দিন অনেক কাজে আসে। পানির যে অবস্থা এতে করে জমির ফসলাদি থেকে শুরু করে সব কিছু ঝুঁকির মধ্যে পড়বে।
শোল্লা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান দেওয়ান তুহিনুর রহমান বলেন, কালিগঙ্গা নদীর পাড়ের বেশীর ভাগ মানুষ কৃষির উপর নির্ভরশীল। বর্জ্য ঢুকে নদীর পানিকে যে ভাবে দূষিত করে পরিবেশ নষ্ট করছে এতে করে এখানকার কৃষির উপর একটা বড় ধরণের চাপ পড়বে ফসল উৎপাদন সংকট দেখা দিবে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেন দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করেণ। তিনি এব্যাপারে ঢাকা-১ আসনের সংসদ সদস্য সালমান এফ রহমানের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
পরিবেশ অধিদপ্তর ঢাকা জেলার উপপরিচালক মো. জহিরুল ইসলাম তালুকদার বলেন, ব্যাপারটা আমি আপনার কাছ থেকে শুনলাম। আমার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে সরজমিন পরিদর্শন করবো। সরজমিনে গিয়ে পরিস্থিতি দেখে আমি আপনাদের জানাতে পারব।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.