ঢাকার দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলায় ঢিলেঢালা ভাবে চলছে লকডাউন। লকডাউন চলাকালে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া জনসাধারণের ঘর থেকে বের হওয়া নিষেধ থাকলেও তা মানছে না অনেকেই। তবে জনসাধারণের মাঝে খুব একটা সচেতনতা দেখা না গেলেও লকডাউন মানাতে তৎপর রয়েছে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
টানা আট দিনের লকডাউনের প্রথম দিন থেকেই নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করেছে দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। চলাচলে পুলিশি জেরার মুখে পরতে হচ্ছে সাধারণ মানুষদেরকে। উপজেলা জুড়ে টহল দিচ্ছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। তবে বেশিরভাগ মানুষই মুভমেন্ট পাস ছাড়াই চলাচল করছে।
সর্বাত্মক লকডাউনের ৭ম দিনে মানুষের ভিড় ছিল চোঁখে পড়ার মতো। প্রশাসনের নির্দেশনা অমান্য করে খোলা রয়েছে অনেক দোকান, এতে করোনা সংক্রমণ ঝুঁকি বাড়ছে। তবে পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিত টের পেলেই দোকান বন্ধ করে দেয় তারা।
উপজেলা সদরে মানুষের আনাগোনা কিছুটা কম থাকলেও প্রত্যন্তঞ্চলের বাজারগুলোতে ছিল মানুষের উপচে পড়া ভিড়। যেখানে নেই সামাজিক দূরত্বের বালাই। কাঁচা বাজারেও স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই চলছে বেচাকেনা। কারো কারো মুখে নেই মাস্ক। অনেকে মাস্ক রাখছে পকেটে বা হাতে। করোনা সংক্রমণ রোধে মানুষের মাঝে তেমন কোনো সচেতনতা ছিল না। সেখানে প্রশাসনের তেমন কোনো তৎপরতা না থাকায় অনেকেই দোকান খোলা রেখেছেন। এতে দোকানের সামনে ভিড় করছে ক্রেতারা। কেউ মানছে না সামাজিক দূরত্ব। স্বাস্থ্যবিধি না মেনে সেখানে ভিড় করায় বাড়ছে করোনা সংক্রমণ ঝুঁকি।
সরজমিনে মঙ্গলবার দেখা যায়, সড়কে যানবাহন এবং মানুষের উপস্থিতি বেড়েছে। সড়কজুড়ে রিক্সা ও অটোরিক্সার দাপট। বেড়েছে মোটর সাইকেলের আনাগোনা। কাঁচাবাজারেও মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। হাট বাজারে ছিলো মানুষের ভিড় জটলা। লোকজন স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই কেনাকাটা করছে। শারীরিক দূরত্ব তো দূরের কথা ক্রেতা-বিক্রেতাদের অনেকের মুখে ছিলো না মাস্ক। দেখে বুঝার উপায় নেই দেশে লকডাউন চলছে। কিশোর যুবকেরা রাস্তায় আড্ডাবাজি করছে। লোকজন বলছে কতক্ষণ ঘরে বসে থাকা যায়। তাই খোলা হাওয়ায় ঘুরতে বের হওয়া।
একই দিন দোহারে জয়পাড়া, বাংলাবাজার সহ বিভিন্ন বাজারে ও নবাবগঞ্জের বারুয়াখালী বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে বেশকিছু বস্ত্রালয় ও জুতার দোকানও খুলতে দেখা গেছে। সেই সাথে বিভিন্ন দোকানপাটও খোলা রয়েছে। প্রতিটি দোকানে ক্রেতাদের ভিড়ও লক্ষ্য করা গেছে। স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই এসব দোকানে কেনাকাটা করছেন ক্রেতারা। তবে প্রশাসনের উপস্থিত টের পেলেই দোকান বন্ধ করে দিচ্ছে ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীরা জানান, করোনার কারনে তাদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। রমজান মাসে লকডাউন দেওয়ায় তারা আরো ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছেন। তাই বাধ্য হয়ে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান খুলছেন তারা।
এধরনের ঢিলেঢালা লকডাউনে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয় বলে মনে করেন সচেতন মহল। তারা মনে করেন, এই লকডাউনে শুধু ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাই ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। বেশিরভাগ ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ও দোকান বন্ধ থাকলেও অযথা রাস্তাঘাটে ঘুরাফেরা করতে দেখা গেছে মানুষজনকে। এভাবে লকডাউন পালন করা হলে করোনার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। সাধারণ জনগণকে আরো সচেতন হওয়ার আহবান জানান তারা।
এদিকে দুই উপজেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা নিয়মিত অভিযান অব্যাহত রেখেছেন। এসব অভিযানে স্বাস্থ্যবিধি না মানায় জরিমানা করা হচ্ছে। বিতরণ করা হচ্ছে মাস্ক।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.