1. news@priyobanglanews24.com : PRIYOBANGLANEWS24 :
শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:২১ পূর্বাহ্ন

দোহারের অদম্য মেধাবী মাসুদের পাশে ইউএনও

নিজস্ব প্রতিবেদক । প্রিয়বাংলা নিউজ২৪
  • আপডেট : শনিবার, ৬ জুন, ২০২০
  • ৩১৬৬ বার দেখা হয়েছে

খানসামার কাজ করেও এবারের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পাওয়া দোহারের মাসুদ ইসলাম ও তার পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা সহ বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতা দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পদোন্নতি পাওয়া অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আফরোজা আক্তার রিবা।

শনিবার (৬ মে) দুপুরে দোহারের কাটাখালী গ্রামে মাসুদের বাড়িতে যান আফরোজা আক্তার। তিনি মাসুদকে লেখাপড়ার জন্য ব্যক্তিগতভাবে আর্থিক সহযোগিতা ও পরিবারের সবাইকে নতুন পোশাক প্রদান করেন। পাশাপাশি সরকারিভাবে খাদ্য সামগ্রী প্রদান করা হয়। একইসাথে ভবিষ্যতে মাসুদের পড়াশোনার জন্য সব ধরণের সহযোগিতার আশ্বাস দেন ইউএনও আফরোজা আক্তার।
এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র ও কাটাখালী মিছের খান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অহিদুল ইসলাম অনু।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফরোজা আক্তার রিবা বলেন, হতদরিদ্র পরিবার থেকে যুদ্ধ করে উঠে আসা মাসুদের মতো ছেলেমেয়েরাই প্রকৃত মেধাবী। ওদেরকে সামনে উঠিয়ে আনতে আমাদের সবার সহযোগিতা থাকা উচিত। আমার দায়িত্ববোধ থেকেই মাসুদের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। মাসুদের স্বপ্নপূরণে ভবিষ্যতেও সহযোগিতা থাকবে।

গত ২ জুন প্রিয়বাংলা নিউজ২৪ অনলাইনে মাসুদকে নিয়ে প্রতিবেদক শামীম আরমান ও তানজিম ইসলামের করা একটি সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে বিষয়টি ইউএনও আফরোজা আক্তার সহ অনেকের দৃষ্টিতে আসে। সে ধারাবাহিকতায় শনিবার মাসুদের পরিবারের পাশে দাঁড়ান তিনি।

এছাড়া মাসুদের লেখাপড়ায় সহযোগিতা করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন জার্মান প্রবাসী রোমান মিয়া ও ব্যবসায়ী মো. আইয়ূব আলী।

উল্লেখ্য যে, হতদরিদ্র পরিবারে জন্ম নেয়া তিন ভাইয়ের মধ্যে মাসুদ ইসলাম দ্বিতীয়। বাবা খাদেমুল ইসলাম পেশায় একজন রিকশাচালক। প্রায় ত্রিশ বছর ধরে রিকশার প্যাডেলে ঘুরিয়ে চলে তার সংসারের চাকা। বাবার মত মাসুদের জীবনও সংগ্রামে ঘেরা। সারাদিন রিকশা চালিয়ে বাবা যা আয় করতেন তা খুবই নগণ্য। অভাবের সংসারে একটু হলেও স্বচ্ছলতা আনতে পড়াশোনার পাশাপাশি সুযোগ পেলেই মাসুদ করতেন খানসামার কাজ। স্কুল বন্ধের দিনগুলোতে ছুটে যেতেন বিয়ে সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের বাড়িতে। মাসুদের পরিশ্রম ও ইচ্ছাশক্তি তাকে আজ সাফল্য এনে দিয়েছে। ঢাকা জেলার দোহার উপজেলার কাটাখালী মিছের খান উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে মাসুদ। মাসুদ এখন পড়তে চায় ঢাকার সেন্ট যোসেফ কলেজে। মাসুদ স্বপ্ন দেখে বড় হয়ে সে ডাক্তার হবে।
তিন ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে মাসুদের পিতা খাদেমুল ইসলামের কষ্টের সংসার। বিশ বছর আগে জীবিকার তাগিদে পঞ্চগড় সদর উপজেলার মালকাডাঙ্গা থেকে দোহারে আসেন তিনি। এরপর বাড়ি ভাড়া নিয়ে উঠেন কাটাখালী গ্রামের মেজর আলমাসের বাড়িতে। সেখানে ছিলেন দীর্ঘ ১২ বছর। তারপর ভাড়া আসেন মাহবুব খানের বাড়িতে। এখানে স্ত্রী ও সন্তানদেরকে নিয়ে একটি ঘরের দুটি রুম ভাড়া নিয়ে থাকেন তিনি। অনেক কষ্টে ধার দেনা ও কিস্তি নিয়ে একটি ব্যাটারিচালিত রিকশা ক্রয় করেছেন খাদেমুল। যার কিস্তি এখনো বয়ে বেড়াতে হচ্ছে তাকে। দারিদ্রতার সাথে তীব্র লড়াই করে জীবিকা নির্বাহ করলেও তিন সন্তানকেই করাচ্ছেন পড়াশোনা। কাটাখালী মিছের খান উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে তার মেঝ ছেলে মাসুদ এ প্লাস পেলেও বড় ছেলে নয়ন ব্যবসায় শিক্ষা শাখা থেকে পেয়েছেন এ গ্রেড। ছোট ছেলে সাগর হোসেনও পড়াশোনা করছেন একই বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণিতে।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন

Leave a Reply

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ