1. news@priyobanglanews24.com : PRIYOBANGLANEWS24 :
বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ১২:৪১ অপরাহ্ন

সৌদিতে এসে বেকার হাজারো বাংলাদেশি

তানজিম ইসলাম, রিয়াদ, সৌদি আরব
  • আপডেটের সময় : শনিবার, ২ জুলাই, ২০২২
  • ৭৩৮ বার দেখা হয়েছে।

মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব বাংলাদেশের একটি প্রধান শ্রমবাজার। বর্তমানে দেশটিতে রয়েছে প্রায় ১৪ লাখেরও বেশি বাংলাদেশি সেখানে তারা বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত রয়েছে । বাংলাদেশ ছাড়াও দেশটিতে বিভিন্ন পেশায় কর্মরত আছে ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, মিশর, ইয়েমেন, বাহরাইন, সিরিয়া, সুদান, মরক্কো সহ দক্ষিণ আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের মানুষ।

কিন্তু বর্তমানে তীব্র কাজের সংকটে পড়েছেন সৌদিতে নতুন করে আসা বাংলাদেশিরা। এর অন্যতম প্রধান কারন হিসেবে দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশ থেকে সৌদিতে আসা বেশিরভাগ মানুষই অদক্ষ। অর্থাৎ তারা কোন পেশার উপর কোন প্রকার দক্ষতা অর্জন না করেই দালালদের খপ্পরে পড়ে চলে আসছেন সৌদিতে। ফলে এখানে এসে তারা কোন কাজ পাচ্ছে না।

শরিয়তপুর থেকে আসা মো. সাকিব নামক একজন বলেন, কোন একটি নিদিষ্ট পেশায় দক্ষতা অর্জন করে আসলে কোন না কোন ভাবে কাজের সন্ধান মিলে। কিন্তু একেবারেই অদক্ষ হয়ে আসার ফলে বর্তমানে অনেক বাংলাদেশিরাই বেকার হয়ে খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছে।

সৌদিতে বৈধভাবে কাজ করতে চাইলে ইকামার মেয়াদ থাকতে হয়। আমেল আইদি ইকামা বানানোর খরচ সবচেয়ে বেশি বছরে যার পরিমাণ বাংলাদেশি টাকায় প্রায় সাড়ে তিন লাখ। একসাথে এতো টাকা দিয়ে ইকামা বানানোর সামর্থ্য অনেকেরই থাকে না। তাই সৌদি সরকার ৩ মাস, ৬ মাস ও ৯ মাসের ইকামা বানানোর সুযোগ দিচ্ছে। আর এ সুযোগটিই লুফে নিচ্ছে এক শ্রেণির দালাল চক্র। তারা উচ্চ বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক এনে ১৫ মাসের ইকামা দেয়ার কথা বলে ৩ মাস কিংবা ৬ মাসের ইকামা ধরিয়ে দিচ্ছে। বাংলাদেশ সহ অন্যান্য দেশ থেকে প্রচুর শ্রমিক প্রবেশের ফলে তীব্র কাজের সংকট দেখা দিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের এ দেশটিতে । ফলে কাজ না পেয়ে বেকার হয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরতে দেখা যায় অনেক বাংলাদেশি শ্রমিকদের। তারমধ্যে আবার ইকামা বানানোর চিন্তা। অনেকেই দেশ থেকে টাকা এনে খাওয়া থাকার খরচ চালাচ্ছেন।

প্রবাসী বাংলাদেশিরা বলছেন দালালদের খপ্পরে পড়ে সৌদিতে এসে বিপাকে পড়ছেন বাংলাদেশির শ্রমিকেরা। উচ্চ বেতনের চাকরির কথা বলে জনপ্রতি ৩ থেকে সাড়ে ৪ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে দালালচক্র। কিন্তু সৌদিতে এনে কথামতো কাজ দিচ্ছে না দালালরা। অনেকের আবার মাস শেষে বেতনের টাকাও দিচ্ছে না ঠিকমতো।

টাংগাইলের বাসাইলের বাসিন্দা মো. রোমান বলেন, আমি সৌদিতে এসেছি প্রায় ১ বছর হলো। আমাকে যে কাজের কথা বলে আনা হয়েছিলো সেই কাজ দেয়া হয়নি। ফলে আমার কাজ জানা না থাকায় বাধ্য হয়েই আমাকে সীমিত বেতনে কাজ করতে হচ্ছে।

দোহারের কুসুমহাটি ইউনিয়নের বাসিন্দা জামিল বলেন, আমাকে একটি কফিশপে ২৫০০ রিয়াল বেতনে চাকরি দেয়ার কথা বলে প্রায় ৪ লাখ টাকা নেয় দালাল। কিন্তু সৌদিতে আসার পর আমাকে হাউসকিপিং এর কাজ করতে দেয় একটি হোটেলে। বেতন ১১০০ রিয়াল দিতে চাইলেও ৩ মাস ধরে বেতন দিচ্ছে না। এদিকে আমার ইকামার মেয়ারও প্রায় শেষের দিকে। ধার দেনা করে ভাগ্য বদলানোর আসায় সৌদিতে এসে এখন খুবই বিপদে আছি।

সূত্র জানায়, প্রতিদিন বাংলাদেশে প্রায় ৬ হাজার ভিসা ইস্যু করছে সৌদি আরর। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, সৌদিয়া, এমিরেটস এয়ারলাইন্স কিংবা অন্য কোন এয়ারলাইন্সের বিমানের মাধ্যমে কিংবা ট্রানজিট হয়ে প্রতিদিন সৌদিতে প্রবেশ করছে হাজারো বাংলাদেশি শ্রমিক। কিন্ত এদের বেশিরভাগই অদক্ষ। ফলে তারা সৌদিতে এসে কর্মহীন বেকার হয়ে দিন যাপন করছে। এমন পরিস্থিতিতে নতুন করে সৌদি আরবে আসার আগে ভালভাবে সিধান্ত নেয়ার কথা বলছেন রিয়াদের সিফা সানাইয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা।

এখান থেকে আপনার সোস্যাল নেটওয়ার্কে শেয়ার করুন

Leave a Reply

ক্যাটাগরির আরো খবর