তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে চুলা, হাঁড়িপাতিল, মোম নিয়ে রাজধানীতে বিক্ষোভ-সমাবেশ করেছে কর্মজীবী নারী নামে একটি উন্নয়ন সংস্থা। এতে বাজারে অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে নিত্যপণ্যের দাম কমানোর জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানানো হয়।
সোমবার বিকালে মিরপুর ১ নম্বরের সনি সিনেমা হল গোল চত্বরে এই সমাবেশ হয়। পরে একটি বিক্ষোভ মিছিল বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এতে সংগঠনের কর্মী ছাড়াও সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণ করে। সোমবার সংগঠনের প্রোগ্রাম সমন্বয়ক দেওয়ান আব্দুস সাফির পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ সব জানানো হয়েছে।
কর্মজীবী নারীর সহসভাপতি উম্মে হাসান ঝলমলের সভাপতিত্বে কার্যক্রম পালিত হয়। এতে বক্তব্য দেন সংগঠনে অতিরিক্ত নির্বাহী পরিচালক সানজিদা সুলতানা, সমন্বয়ক হাছিনা আক্তার; জাতীয় শ্রমিক জোট-বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক রাজীব আহমেদ, ঢাকা মহানগরের যুগ্ম-আহ্বায়ক শেখ শাহানাজ।
সমাবেশে উম্মে হাসান ঝলমল বলেন, ‘দফায় দফায় গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানির দাম বাড়ানো হচ্ছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসহ পরিবহন ব্যয়, বাসাভাড়া, শিক্ষা খরচ বেড়েছে। করোনাকালীন দুই বছর পার হতে গিয়ে দেশের মানুষের প্রায় সর্বস্ব হারিয়েছে। এত বড় সংকট কাটিয়ে উঠতে মানুষ যখন সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে, তখন সরকার তাদের পাশে না দাঁড়িয়ে আরও বেশি দ্রব্যমূল্যের বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছে।’
রাজীব আহমেদ বলেন, ‘২ বছরে ভোজ্যতেলের দাম ৭৯ শতাংশ বেড়েছে। দ্রব্যমূল্যর এই ঊর্ধ্বগতি জনগণের জীবনে নাভিশ্বাস তুলেছে। লোকসানের দোহাই দিয়ে সরকার সব সময় জনগণের পকেট কাটছে। একদল অসৎ মানুষ দেশের অর্থ পাচার করে বিদেশে সম্পদের পাহাড় গড়ছে। সরকারের দুর্বল বাজার মনিটরিংয়ের জন্য বাজারে সিন্ডিকেট বারবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। দেশের সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে অবিলম্বে রেশনিংয়ের ব্যবস্থা চালু করতে হবে।’
হাছিনা আক্তার বলেন, ‘জ্বালানি তেলের সঙ্গে সরাসরি পরিবহন খরচ যুক্ত। তেলের দাম আরও বাড়লে এর প্রভাব সব খাতেই পড়বে। প্রস্তাবিত বাজেটে জ্বালানি তেলে ভর্তুকিতে কোনো অর্থ বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়নি। অপরদিকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ক্যাপাসিটি চার্জের নামে সরকার বছরে হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েই চলছে, যা জনগণের পকেট কাটার শামিল।’
বক্তারা যথাযথ বাজার মনিটরিংয়ের পাশাপাশি সব ধরনে ভ্যাট কমানো দাবি জানান। তেল-গ্যাস-বিদ্যুৎ ও পণ্যের দাম জনগণের আয়ত্তের মধ্যে রাখার আহ্বান জানান বক্তারা।
কর্মজীবী নারীর প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা আল জাহিদের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন সংগঠনের প্রকল্প কর্মকর্তা হুরমত আলী, শ্রমিক নেত্রী নার্গিস আক্তার, শারমিন আক্তার প্রমুখ।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.