ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের আব্দুল্লাহপুর বাজারে দিনে-দুপুরে ফিল্মি কায়দায় আল-আমিন জুয়েলার্সের মালিককে গুলি করে স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে গেছে সংঘবব্ধ ডাকাত দল। স্বর্ণ লুট করে পালিয়ে যাওয়ার সময় জনগনের রোষানল এড়ানোর জন্য একাধিক গুলি ও হাতবোমা ফাঁটায় ডাকাতরা। এছাড়া কিছু স্বর্ণ সাধারন জনগনের মাঝে ছুড়ে দিয়ে যায়, যাতে করে মানুষ স্বর্ন কুঁড়াতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে আর সেই সুযোগে তারা পালিয়ে যেতে পারে।
বুধবার দুপুর পৌনে দুইটার দিকে আব্দুল্লাহপুর বাজারের হাজী নাসির উদ্দিন সুপার মার্কেটে প্রকাশ্যে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আল-আমিন জুয়েলার্সের মালিক গুলিবিদ্ধ হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এদিকে ঘটনার পর পরই দক্ষিন কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ, র্যাব, ডিবি ও সিআইডির ক্রাইম সিন টিম ঘটনাস্থলে হাজির হয়। তবে এই ঘটনায় কাউকে আটক করতে না পারলেও ডাকাতদলের ছোঁড়া কিছু স্বর্ণ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
দোকানে থাকা কর্মচারি ও মালিকের ভাগিনা দুর্জয় জানায়, আনুমানিক দুপুর পৌনে দুইটার দিকে দোকানের সামনে ২ টা মোটরবাইক থামিয়ে ৪ জন পুরুষ দোকানে প্রবেশ করে। কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই আমাকে ও দোকানে থাকা মালিক স্বপন মামা ও বাবু মন্ডলকে বন্ধুক দেখিয়ে জিম্মি করে ফেলে। তখন স্বপন মামা অর্থাৎ দোকানের মালিক চেঁচামেচি ও ডাকাতিতে বাঁধা দিতে গেলে তার ডান পাঁয়ের হাঁটুর উপর গুলি করে। শুধু তার পায়েই নয় একাধিক গুলি এলোপাতারি করে, দোকান থেকে প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০ ভরি স্বর্ন লুটে নিয়ে যায়।
দোকানে থাকা আরেক কর্মচারি বাবু মন্ডল বলেন, দোকানে ঢুকে আমাকে দাঁড়ালো চাপাতি দিয়ে জিম্মি করে মাত্র ২ থেকে ৩ মিনিটে দোকানের স্বর্ন লুট করে মোটরবাইক যোগে পালিয়ে যায়। দোকানে ডাকাতির জন্য প্রবেশ করে ৪ জন হেলমেট পরিহিত লোক আর বাহিরে থাকে ২ জন মোট ৬ জন মিলে এ ডাকাতির ঘটনা ঘটায়।
আরেক প্রত্যক্ষদর্শী নাসির উদ্দিন ভবনের মালিক গোলাম মোস্তফা জানান, ডাকাতদল ডাকাতি শেষে বেশ কয়েকটি হাতবোমা ফাঁটিয়ে পুরো রাস্তা ধোঁয়ায় অন্ধকার করে দেয়। অন্যদিক থেকে কয়েকজন ব্যবসায়ী ডাকাতদলকে ধাওয়া দিলে তখন তারা আবার ফাঁকা গুলি করে। এছাড়াও জনগনের রোষানল এড়াতে ডাকাতদল পালিয়ে যাওয়ার সময় বেশ কিছু স্বর্ন সাধারন জনগনের মাঝে ছুঁড়ে দেয়। আমরা এঘটনায় জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
এব্যাপারে কেরানীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাবুদ্দিন কবীর বলেন, দিনে-দুপুরে গুলি ও ককটেল ফাঁটিয়ে ডাকাতির ঘটনায় আমরা বিচলিত। এটি একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা, তবে আমরা আশ-পাশের সিসি টিভির ফুটেজসহ বেশ কিছু আলামত সংগ্রহ করেছি। আশা করছি অতি দ্রুতই আসামীদের সনাক্ত করে গ্রেপ্তার করতে পারবো।
তিনি আরো বলেন, ডাকাতি করে পালিয়ে যাওয়ার সময় স্বর্ণালংকার ছুঁড়ে মারা তাদের একটি কৌশল। সাধারন জনগন যাতে তাদের গতিপথ রোধ করতে না পারে সে জন্যই স্বর্ণালংকার ছুড়ে মেরেছে। পুলিশ রাস্তা রাস্তা থেকে বেশ কিছু স্বর্ণ উদ্ধার করেছে। তবে লুট হওয়ার স্বর্ণ ও উদ্ধার হওয়া স্বর্ণের পরিমান এখনই নিরুপন করা সম্ভব নয়।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.