পথ হারিয়ে রাজধানী ঢাকা থেকে নবাবগঞ্জে চলে আসার চারদিন পর বাবা-মাকে ফিরে পেল দশ বছর বয়সী শিশু জান্নাতুল ফেরদৌস।
বুধবার দুপুরে শিশুটিকে তার প্রকৃত বাবা-মায়ের কাছে হস্তান্তর করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ এইচ এম সালাউদ্দিন মনজু।
দুইদিন আগে শিশুটি জানিয়েছিল, তার বাড়ি কাঁচপুর। বাবার নাম সোহেল ও মায়ের নাম ইয়াসমিন। একটা বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করতো সে। সেখান থেকে দাদুর সঙ্গে যাবার সময় গুলিস্তানে হারিয়ে যায় সে। পরে গুলিস্তান থেকে এক সিএনজি চালক গত শনিবার সকালে তাকে নবাবগঞ্জের একটি বাসে উঠিয়ে দিলে মাঝিরকান্দায় এসে নামে সে।
এরপর চারদিন শিশুটি ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার বান্দুরা ইউনিয়নের মাঝিরকান্দা গ্রামের বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন জামে মসজিদের বিপরীত পাশের স্বপনের বাড়িতে ছিল। স্বপনের স্ত্রী তার দেখভাল করেছেন।
৭ সেপ্টেম্বর বিভিন্ন গণমাধ্যমে ‘বাবা-মায়ের কাছে ফিরে যেতে চায় জান্নাতুল’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হলে পরদিন সন্ধায় নবাবগঞ্জের এক সাাংবাদিকের কাছে ফোন করেন শিশুটির নানা মো: জালাল উদ্দিন। পরে রাতেই বাবা-মায়ের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলে জান্নাতুল।
এরপর বুধবার সকালে নবাবগঞ্জের মাঝিরকান্দায় স্বপনের বাড়িতে শিশুটিকে নিতে আসে তার বাবা-মা ও নানা। দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জান্নাতুলকে তার বাবা-মায়ের কাছে বুঝিয়ে দেন।
এসময় শিশুটিকে আশ্রয় দেওয়া স্বপনের বড় ছেলে মো: রিফাত বলেন, এই চারদিনে জান্নাতুল আমাদের পরিবারের একজন সদস্য হয়ে গিয়েছিলেন। আমাদের আপন করে নিয়েছিল। তাকে যে তার পরিবার খুঁজে পেয়েছেন এটা ভেবে খুব ভালো লাগছে। ওর প্রতি সবসময়ের জন্য শুভ কামনা রইলো। সারা জীবন ভালো থাকুক জান্নাত এই কামনাই করি।
জান্নাতের বাবা মো: সোহেল বলেন, যারা আমার মেয়েকে আশ্রয় দিয়েছে, খুঁজে পেতে সাহায্য করেছে আল্লাহ তাদের মঙ্গল করুক।
জান্নাতের মা ইয়াসমিন আক্তার কান্নার শুরে বলেন, আমার কলিজা আমার মেয়েকে যারা যতœ নিছে তাগো লিগা দুয়া করি। আমার সন্তানকে আমি ফিরে পেয়েছি আল্লাহর সবার সন্তানকে ভালো রাখুন। আমার মত কষ্ট যেনো কোনো মা না পায়।
জান্নাতের নানা মো: জালাল উদ্দিন বলেন, জান্নাতকে হারিয়ে আমরা পাগল হয়ে গিয়েছিলাম। থানা পুলিশ, হ্যান্ডবিল, পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তিও দিয়েছি। আপনাদের ধন্যবাদ আমার নাতিনিকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য।
নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ এইচ এম সালাউদ্দিন মনজু বলেন, শিশুটিকে আমরা তার প্রকৃত অভিভাবকের কাছে হন্তান্তর করেছি।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.