এক বছরেও সন্ধান মেলেনি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হাসানুল আলম নয়ন (২৮) নামে এক যুবকের। একমাত্র ছেলের সন্ধান না পেয়ে অপেক্ষার প্রহর যেন কোনভাবেই শেষ হচ্ছে না পরিবারের! উৎকন্ঠায় কাটছে মা হাসিনা বেগমের দিনরাত।
গেল বছরের ২৪ মে নয়ন রাজধানী ঢাকার আগারগাঁও থেকে মায়ের সাথে ঈদ করতে দোহার উপজেলার লক্ষ্মীপ্রসাদে মামা মোতালেব মুন্সীর বাড়িতে বেড়াতে আসেন। ২৯ মে এশারের নামাজ পড়ার জন্য নয়নের মামাতো ভাই সাব্বির ডাক দিয়ে নিয়ে যায়। সাব্বির নামাজ শেষে বাড়িতে আসলেও ফিরে আসেনি নয়ন। ঘটনার পর থেকে নয়নের মা হাসিনা বেগম সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজাখুজি করেও ছেলের সন্ধান না পেয়ে দোহার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। এ ঘটনায় দোহার থানা পুলিশ মোতালেব মুন্সীর ছেলে সাব্বিরকে (২৮) ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দেয়। এদিকে নিখোঁজের একবছর অতিবাহিত হওয়ার পরও ছেলের সন্ধান না পেয়ে উৎকন্ঠার মধ্যে সময় পার করছেন নয়নের মা হাসিনা বেগম। বাংলাদেশ বেতারের একজন কর্মকর্তা ছিলেন তিনি। গত বছর চাকরি থেকে অবসর নিয়েছেন। ছেলের চিন্তায় মানসিকভাবে অনেকটাই ভেঙে পড়েছেন। বয়সের কারনে এখন দৌড়ঝাঁপ করাও সম্ভব হচ্ছে না।
হাসিনা বেগম জানান, গত বছর ওই দিনটিতে আমার ছেলে আমার সাথেই ঘরেই ছিল। নামাজের কথা বলে আমার ভাতিজা সাব্বির নয়নকে ডেকে নিয়ে যায়। নামাজ শেষে সাব্বির বাসায় ফিরে আসলেও আমার ছেলে নয়ন আসেনি। আমি সাব্বিরকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘তুই আসলি নয়ন কোথায়’। সাব্বির এ ব্যাপারে তেমন কোন কিছুই না জানিয়ে উল্টো আমাকে হুমকি-ধামকি দেয়। দেখতে দেখতে একটি বছর কেটে গেল। কিন্তু আমার নয়নকে আমার কাছে ফিরে পেলাম না। এখন শুধু পৃথিবীর বোঝা হয়ে কোন রকম বেঁচে আছি। ও যদি বেঁচে থাকে তাহলে বুকে বুকে ফিরে আসবে এটাই বিশ্বাস করি।
হাসিনা বেগম জানান, লন্ডনে স্কলারশিপের জন্য আবেদন করেছিল আমার ছেলে। পড়াশোনায় মেধাবী ছিল। সবসময় আমাকে ভালবাসায় জড়িয়ে রাখত। কিভাবে কি হয়ে গেল কিছু বুঝতে পারছি না।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.