1. news@priyobanglanews24.com : PRIYOBANGLANEWS24 :
রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৫:১৪ পূর্বাহ্ন

স্বপ্নের পদ্মা সেতু দেখে ফেরা হলো না দুই বন্ধুর

রির্পোটারের নাম :
  • আপডেটের সময় : সোমবার, ২৭ জুন, ২০২২
  • ১৯৬৩ বার দেখা হয়েছে।

পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ঢাকার নবাবগঞ্জের দুই যুবকের বাড়িতে এখন শোকের মাতম। রবিবার বিকেলে ৬ বন্ধু মিলে দেখতে যান স্বপ্নের পদ্মা সেতু। জাজিরা থেকে রাত আনমানিক ৮টার দিকে বাড়ি ফেরার পথে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মারা যান মো. আলমগীর ও মো. ফজলু নামে দুই বন্ধু।

নবাবগঞ্জ উপজেলা সমসাবাদ এলাকার চিনু বেপারীর ছেলে মো. আলমগীর মোটর মেকানিকের কাজ করে অন্ধ বাবা ও অসুস্থ মাকে নিয়ে কোন মতে সংসার চালাচ্ছিলেন। রবিবার বিকেলে হঠাৎ বন্ধুদের সাথে দেখতে যান পদ্মা সেতু। কিন্ত সড়ক দুর্ঘটনায় নিভে যায় তার জীবন প্রদীপ। প্রিয়জনকে হারিয়ে দিশেহারা আলমগীরের পরিবারের সদস্যরা। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিতে হারিয়ে ভবিষ্যত নিয়ে অনিশ্চয়তায় পরিবারের সদস্যরা।

আলমগীরের বোন কহিনুর আক্তার জানান, উপজেলার বাগমারা নিজের গ্যারেজে মোটর মেকানিকের কাজ করতো আলমগীর। অন্ধ বাবা ও অসুস্থ মা ওর উপরই নির্ভরশীল। তিনি কান্নাজনিত কণ্ঠে বলেন, ও সব সময় বলতো, মোটর সাইকেল দুর্ঘটনায় ওর কিছু হবে না। আজ সেই মোটর সাইকেল দুর্ঘটনায়ই না ফেরার দেশে চলে গেল আমার ভাইটি। আমার বৃদ্ধ বাবা-মার এখন কি হবে ভাবতে পারছি না।

আলমগীরের দুলা ভাই সালাউদ্দিন জানান, রাত আনুমানিক সোয়া আটটার দিকে আলমগীরের বন্ধু আলী আমাকে ফোনে জানায় আলমগীর ও ফজলু এক্সিডেন্ট করেছে। আমরা ঢাকা হাসপাতালে যাওয়ায় আগেই সংবাদ পাই ওরা আর নেই।

সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের অপরজন উপজেলা যন্ত্রাইল ইউনিয়নের হরিষকুলের মৃত আবু মিয়ার ছেলে মো. ফজলু। সদ্য বিয়ে করা ফজলু রবিবারই কিনেছিলেন নতুন মোটর সাইকেল। সেই মোটর সাইকেল নিয়ে ঘুরতে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হন তিনি। অভাবের সংসারের বড় হওয়া ফজলুকে হারিয়ে দিশেহারা স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যরা।

নিহত ফজলু’র মামাতো ভাই আবদুল ও বোন কহিনুর বেগম জানান, ফজলু ইরাকে ছিলেন। সাড়ে তিন বছর পর রমজান মাসে সে দেশে এলে গত মাসের ২০ তারিখে বিয়ে করেন সে। মার ইচ্ছা অনুযায়ী ঘোড়ার গাড়িতে বিয়ে করেছিল ফজলু। রবিবার কিনে এনেছিলেন নতুন মোটর সাইকেল। সেই মোটর সাইকেল নিয়েই বিকেলে বন্ধুদের নিয়ে ঘুরতে যায় পদ্মা সেতুতে। রাতে টিভিতে ফজলু ও আলমগীরের মৃত্যুর খবর পাই আমরা।

কহিনুর বেগম আরো বলেন, যাওয়ার সময় ও মাকে বলে মা, আমি যাই। আমি তখন বলি যাই বলিস কেন ভাই, বল আসি। ওকে মোটর সাইকেলের ব্যাপারে প্রশ্ন করলে ও দুষ্টামী করে বলে, মোটর সাইকেল আমাকে জান্নাতে নিয়ে যাবে। আমরা বুঝতে পারি নাই। ও এভাবে জান্নাতে চলে যাবে।

এলাকাবাসী জানান, ফজলু ছোট থাকতেই মারা যায় তার বাবা। ফজলুর মা অন্যের বাড়িতে কাজ করে বড় করেছে ফজলুকে। বিদেশ যাওয়ার পর আর্থিক অবস্থা পরিবর্তন হয় পরিবারের। কিন্ত একটি দুর্ঘটনায় আবারো নিঃস্ব করে দিল পরিবারটিকে।

ফজলু ও আলমগীরের মৃত্যুকে মেনে নিতে পারছেন না এলাকাবাসীও। দুই যুবকের এমন মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে তাদের নিজ নিজ এলাকায়।

এখান থেকে আপনার সোস্যাল নেটওয়ার্কে শেয়ার করুন

Leave a Reply

ক্যাটাগরির আরো খবর