1. news@priyobanglanews24.com : PRIYOBANGLANEWS24 :
রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০১:৫৮ পূর্বাহ্ন

প্রস্তুতি নিয়েও অবশেষে এসএসসির স্বপ্নভঙ্গ শাওনের!

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেটের সময় : শনিবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৩
  • ৩৪০৬ বার দেখা হয়েছে।

আজ সারাদেশে একযোগে শুরু হচ্ছে এসএসসি পরীক্ষা। একজন শিক্ষার্থীর টানা দশ বছরের শিক্ষা জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ। প্রতিটি শিক্ষার্থী জীবনের স্বপ্ন বুনে পাবলিক এই পরীক্ষাকে ঘিরে, যে কারণে থাকে ব্যাপক প্রস্তুতি। তবে প্রস্তুতি নিয়েও অবশেষে আজ শুরু হওয়া ২০২৩ সালের এসএসসি পরীক্ষায় বসতে পারছে না শাওন মন্ডল নামে এক শিক্ষার্থী। ঘটনাটি ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার কৈলাইল ইউনিয়ন টেকনিক্যাল হাই স্কুলের।

অভিযোগ উঠেছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভুলে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে শাওনের। পরীক্ষার যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়েও চারদিন আগে জানতে পারে, বোর্ডে তার নিবন্ধনই করেনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এমন ঘটনায় শুধু হতবাক নয় রীতিমতো ক্ষুব্ধ ছেলেটির পরিবার। জানা যায়, কৈলাইল গ্রামের প্রাণতুষ্ট মন্ডলের ছেলে শাওন। ২০২৩ সালের এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের কথা ছিল তার।

শাওন মÐল বলেন, আমার সকল সহপাঠীদের মতো আমি স্কুলের বেতন, সেমিষ্টার, রেজিষ্ট্রেশন ফি সহ সকল ধরণের ফি পরিশোধ করেছি। তাহলে আমি কেন পরীক্ষা দিতে পারব না। আমার সব বন্ধুরা এসএসসি পরীক্ষা দিবে। আমি কি দোষ করলাম। আমার ১০ বছরের স্বপ্ন এ বছর এসএসসি পরীক্ষা দিব।

শাওন আরো বলেন, চলতি বছরের মার্চ মাসের ২২ তারিখে আমাদের এসএসসি ব্যাচের বিদায় অনুষ্ঠান করা হয়। ঈদের ছুটির পর গত ২৬ এপ্রিল সহপাঠীদের সাথে আমি প্রবেশ পত্র আনতে স্কুলে গেলে জানতে পারি আমার প্রবেশ পত্র আসেনি। পরে আমাকে জানানো হয় আমার নাকি রেজিষ্ট্রেশনই হয়নি।

শাওনের বাবা প্রাণতুষ্ট মন্ডল বলেন, ছেলের মুখে ঘটনা শুনে আমি স্কুলের প্রধান শিক্ষককে ফোন দিলে তিনি আমাকে আশ্বাস দেন বিষয়টি সমাধান করার। কিন্তু পরদিন আবার আমি ফোন দিলে আমাকে জানান, এ বছর শাওনের পরীক্ষা দেয়া সম্ভব নয়। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আগামী বছর বিনা খরচে শাওনের পরীক্ষার ব্যবস্থা করে দিবেন তিনি।

শাওনের বাবা বলেন, দুঃখ প্রকাশ করে কি হবে। ওই স্যার কি আমার ছেলের জীবনের দুই বছর ফিরিয়ে দিতে পারবে।

কৈলাইল টেকনিক্যাল হাই স্কুলের নবম শ্রেণির শ্রেণিশিক্ষক আব্দুল আজিজ বলেন, করোনাকালীন সময়ে এই রেজিষ্ট্রেশনগুলো হয়েছে। এটা যে কোনোভাবে ভুলক্রমে হতে পারে। এই বিষয়ে প্রধান শিক্ষক বিস্তারিত বলতে পারবেন।

প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন খান বলেন, নবম শ্রেণিতে যখন ছাত্র-ছাত্রীদের রেজিষ্ট্রেশন প্রক্রিয়া শুরু হয় তখন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শাওন মন্ডল তার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও রেজিষ্ট্রেশন ফি জমা দেয়নি। তাকে সময় দেয়া হয়েছিল, যোগাযোগ করেনি সে। স্কুল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি ভুলে গেলে আর নিবন্ধন করা হয়নি। চুড়ান্তভাবে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের তালিকা আসলে শাওন মন্ডলের নাম না থাকার বিষয়টি আমরা জানতে পারি। আমি বোর্ডে যোগাযোগ করেছিলাম, তবে এ বছর আর পরীক্ষা দিবার সুযোগ নেই। আগামী বছর শাওন পরীক্ষা দিতে পারবে।

প্রধান শিক্ষকের এমন বক্তব্যের প্রেক্ষিতে শাওন মন্ডল বলেন, আমি ও আমার কয়েক বন্ধু একসাথেই রেজিষ্ট্রেশন ফি ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়েছি। তবে কয়েকদিন দেরি হয়েছিল। এর জন্য মল্লিক স্যারের থাপ্পড়ও খেয়েছি। টাকা ও কাগজপত্র যেহেতু জমা নিয়েছে সেহেতু আমি তো নিশ্চিত ছিলাম আমার রেজিষ্ট্রেশন হয়েছে। আমার সাথে টাকা ও কাগজপত্র জমা দেয়া অন্য বন্ধুদের তো সমস্যা হয়নি। তাহলে আমার রেজিষ্ট্রেশন কেন হলো না। আর সমস্যা হলেও দীর্ঘদিনে কেন আমাকে বিষয়টি জানানো হলো না স্কুল থেকে।

এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. শাহজালাল লিটন বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমি একবারেই অবগত নই। এখানে একটি ছেলের ভবিষ্যতের বিষয়। আগে জানালে আমি বোর্ডে কথা বলে রেজিষ্ট্রেশনের বিষয়ে চেষ্টা করতে পারতাম। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।

এখান থেকে আপনার সোস্যাল নেটওয়ার্কে শেয়ার করুন

Leave a Reply

ক্যাটাগরির আরো খবর