1. news@priyobanglanews24.com : PRIYOBANGLANEWS24 :
সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০১:৩৭ অপরাহ্ন

নবাবগঞ্জে নদীর বুকে ধান চাষ

শামীম হোসেন সামন.
  • আপডেটের সময় : বুধবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২২
  • ৯৯৩ বার দেখা হয়েছে।

এক সময়ের খরস্রোতা ইছামতী নদীতে এখন চলছে বোরো ধানের বীজতলাসহ ইরিবোরো ফসলের চাষ। নদীটি এখন সমতল ভূমিতে পরিণত হয়েছে। শুকনো মৌসুমের আগেই নদী শুকিয়ে যাওয়ায় হারিয়েছে অনেক দেশীয় প্রজাতির মাছ ও জলজ প্রাণী। এতে জেলেরা পেশা বদল করে চলে যাচ্ছে ভিন্ন পেশায়। এখন যে কেউ দেখলে এটা নদী বলে বিশ্বাস করতে চায় না। কারণ পানি না থাকলেও নদীর বুক জুড়ে সমতল ভূমিতে রয়েছে সবুজের ক্ষেতে ফসলের চাষ।

জানা গেছে, ইছামতি নদীকে কেন্দ্র করে জেলারা একসময় মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করতো। নদীতে এখন পানি না থাকায় দৈন্যদশায় বেকার হয়ে পড়েছেন প্রায় শতাধিক জেলে পরিবার। তারা বাপ-দাদার আদি পেশা ছেড়ে ভ্যান রিকশা চালাচ্ছেন। আর পানিশূন্য মরা নদীতে ধান চাষ করছে অনেকে।

উপজেলার বারুয়াখালী নবগ্রাম এলাকার অমিত হালদার জানান, আগে বাবার সঙ্গে নদীতে মাছ ধরতে যেতেন, এখন নদীতে পানি না থাকায় অন্যকাজ করেন। সুনিরাম হালদার, নিধন হালদার, নরেশ হালদারও একই কথা বলেন। তবে তারা এখনো পুরানো পেশায় ফিরে যেতে চায়। তাদের দাবি, খনন করে আবারও নদীকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হোক।

দাউদপুর এলাকায় নদী পাড়ের মো.বাবুল জানান, এই নদীর পানি দিয়ে সারা বছর নিত্য প্রয়োজনীয় কাজ করা যেত। বোরো ফসলের মাঠে সেচ দেয়ার জন্য পানির কোনো চিন্তাই করতে হতো না। কিন্তু এখন আর নদীর বুকে সেচ দেয়ার মতো পানি নেই। নদীর বুকে চাষ করা হচ্ছে বোরো ধান।

একই এলাকার সুবল মন্ডল বলেন, এই নদীতে সারা বছর এলাকার জেলেরা মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতো। কিন্তু এখন নদীতে পানি না থাকায় তারা আর নদীতে মাছ ধরতে পারে না। ফলে প্রকৃত মৎস্যজীবীরা এখন বাপ দাদার পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে গেছে। এছাড়া নদীতে ময়লা-আবর্জনা ফেলে নদীতে স্রোত কমে পলি পড়ে নদী ভরাট হয়ে গেছে। তাই থেমে গেছে নৌকা চলাচলও। তিনিও নদী খনন করার দাবি জানান।

নৌকা বাইচ ঐতিহ্য রক্ষা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক রাশিম মোল্লা বলেন, এক সময় ইছামতি খরাস্রোত নদী ছিল। নদীতে প্রচুর পানি ছিল। স্রোতও ছিল প্রচুর। ভাদ্র মাস এলেই ইছামতি নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে মাসব্যাপী নৌকা বাইচ অনুষ্ঠিত হতো। কিন্তু এখন বর্ষা মৌসুমেও তেমন একটা পানি থাকে না। যার কারণে এখন আর নৌকা বাইচ হয়না বললেই চলে। দ্রুত সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কাছে দাবী জানাই, দ্রুত ইছামতী নদী খনন এবং স্লুইচ গেট নির্মাণ করে পদ্মা নদীর সাথে ইছামতি নদীর সংযোগ করার আহ্বান জানাই।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাহিদুজ্জামান বলেন, নদীমাতৃক দেশ আমাদের এ বাংলাদেশ। অসংখ্য নদীনালা রয়েছে আমাদের দেশে। তবে বর্তমান সময়ে নদীর তলদেশ ভরাট হওয়ার কারণে নদীগুলো তার রূপ হারিয়ে ফেলেছে। আর সেই সুযোগে কৃষকরা সেখানে আবাদ শুরু করেছেন। এতে কৃষকরা উপকৃত হচ্ছে।

এখান থেকে আপনার সোস্যাল নেটওয়ার্কে শেয়ার করুন

Leave a Reply

ক্যাটাগরির আরো খবর