1. news@priyobanglanews24.com : PRIYOBANGLANEWS24 :
সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ০৬:৫৫ অপরাহ্ন

নতুন প্রজন্মের গঠনের দায় আমাদেরই

আব্দুস সামাদ সোহাগ .
  • আপডেটের সময় : বুধবার, ২ নভেম্বর, ২০২২
  • ৯১২ বার দেখা হয়েছে।

এই সময়ে এসে একটা বিষয় লক্ষ্য করছি নতুন প্রজন্মের ভিতরে মূল্যবোধ বিষয়টি লোপ পেয়েছে। নিজেকে জানার প্রতি আগ্রহ নেই তেমন একটা। বিচারবোধ খুব একটা নেই। শিক্ষকতা পেশাতে না আসলে হয়তো এগুলো খুব একটা বুঝতে পারতাম না। আমি সব সময় মনে করি একজন শিশু যখন জন্মগ্রহণ করে তখন তার মন থাকে একটা অলিখিত সাদা কাগজের মত। একটা শিশু জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়ার মধ্যে থাকে। শিশুর প্রথম সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়া শুরু হয় তার পরিবার থেকে। অর্থাৎ ঐ মনের অলিখিত সাদা কাগজে প্রথম যে লেখা শুরু হয় তা পরিবার থেকেই। সুতরাং আপনার সন্তান ভবিষ্যতে কেমন হবে তা আপনার পরিবারের পরিবেশের উপর অনেকখানি নির্ভর করে। আপনার পরিবেশ কিন্তু আপনাকে তৈরি করতে হবে। এই পরিবেশ কোনো শিক্ষক, মৌলভি, পুরোহিত বা কোন ধর্মগুরু তৈরি করে না। এই পরিবেশ পিতা-মাতা, চাচা-চাচি, দাদা-দাদি সহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা তৈরি করে। তাই বলা যায়, একটা সন্তানের অনাগত ভবিষ্যতের প্রথম নির্মাতা হলো তার পরিবার। সুতরাং জন্মের পরেই তার মনে এমন কোনো বিষয় প্রবেশ করানো যাবেনা যা তার মূল্যবোধ গঠনে বাধা দিবে প্রাচীরের মত।

এরপর শিশুর আশে পাশের পরিবেশ শিশুর সামাজিকীকরণে ব্যপক প্রভাব রাখে। আশেপাশের পরিবেশ ভালো হলে ভালো প্রভাব পড়বে আর খারাপ হলে খারাপ প্রভাব পড়বে। এরপর যাদের ভূমিকা রয়েছেন তারা হলো এই সমাজের সবচেয়ে অবহেলিত, নিপীড়িত বঞ্চিত ব্যক্তি অর্থাৎ শিক্ষক সমাজ। যদিও বলা হয় শিক্ষক জাতি গড়ার কারিগর কিন্তু দিনশেষে নিজের সন্তানকে পড়াশোনা করানোর টাকা থাকে না। থাক আমি সেদিকে গেলাম না। এই শিক্ষক সমাজের হাতে যখন আপনার শিশু আসে তখন ঐ যে তার জন্মের পরেই মনের অলিখিত সাদা কাগজে অনেককিছু আগেই লেখা হয়ে গেছে সেগুলো ডাস্টার দিয়ে শত চেষ্টা করেও মুছতে পারবেনা। যদি ভালো কিছু সেখানে লিপিবদ্ধ হয় তাহলে শিক্ষক তাকে সঠিক পথ দেখাতে গিয়ে কোনো হিমসিম খাবে না কিন্তু ঐখানে যদি আবর্জনা থাকে তাহলে শিক্ষক শত চেষ্টা করেও সেই আবর্জনা সহজেই দূরীভূত করতে পারবে না। আমাদের উচিত আগে থেকেই পরিবারের পরিবেশ আশেপাশের পরিবেশ এমনভাবে তৈরি করা যাতে একজন শিশু সঠিকভাবে বেড়ে উঠতে পারে। তাহলেই শিক্ষক সমাজ শিশুদের মানবিক মূল্যবোধ বিচারবোধ জাগ্রত করতে পারবে এবং তাদের প্রচেষ্টা সফল হবে।

তবে বর্তমান সময় তথ্যপ্রযুক্তির সময়। এই তথ্যপ্রযুক্তির বদৌলতে শিশু কিশোররা অনেক অগ্রসর হচ্ছে। তারা আগে থেকেই অনেককিছু জেনে যাচ্ছে। কিন্তু সঠিক ব্যবহার করতে না পারার কারণে নৈতিক অবক্ষয় ঘটছে। তাহলে তথ্যপ্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহার শেখাবে কারা? এই শেখানোর দায় অনেকটা পড়ে যায় শিক্ষকদের উপর। কিন্তু একজন শিক্ষক যদি নিজেকে তথ্যপ্রযুক্তির জ্ঞানে দক্ষ না করেন তাহলে এই সমাজ অনেক পিছিয়ে যায়। বর্তমান পৃথিবীর চাহিদা অনুযায়ী নিজেকে আপগ্রেড করতে না পারলে কিন্তু তাদের চোখে সেলিব্রিটি ঐ চোর সিদ্দিক, অভিনয় না পারা হিরো আলমরাই হবে। এখন কিন্তু সাদা ধুতি বা লুঙ্গি, ঢিলাঢালা আলখাল্লা পোশাকের যুগ নেই। তাই যুগের সাথে তাল মিলিয়ে মার্জিত পোশাক পরতে হবে শিক্ষকদের। যেগুলো শিক্ষার্থীরা অনুসরণ করবে এবং তাদের রুচিসম্মত করে তুলবে। নিজেকে নতুন নতুন পদ্ধতির সাথে যোগ্য করে তুলতে হবে, প্রচুর পড়াশোনা করতে হবে। বাংলার শিক্ষকদের শুদ্ধ, সাবলীল ও মাধুর্যপূর্ণ বাংলা ভাষায় কথা বলতে হবে। ইংরেজি শিক্ষকদের ইংরেজিতে কথা বলার প্র্যাকটিস করতে হবে, বিজ্ঞানের শিক্ষকদের ছোট ছোট আবিষ্কার থাকতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে আজকে শিশু আগামী দিনে দেশ পরিচালনা করবে সুতরাং তাদের দেশ পরিচালনার উপযোগী করে আমাদের গড়ে তুলতে হবে। তা নাহলে এই দেশ একসময় বর্বর কিছু দেখতে পাবে। সেজন্য পরিবার, সমাজ, শিক্ষক ও রাষ্ট্র সকলকেই একত্রে কাজ করতে হবে আগামীর নেতৃত্ব গঠনে। কোন একটা পাশ অবহেলা করলে আগামীর বাংলাদেশ হবে ধ্বংসের নগরী।

এখান থেকে আপনার সোস্যাল নেটওয়ার্কে শেয়ার করুন

Leave a Reply

ক্যাটাগরির আরো খবর