1. news@priyobanglanews24.com : PRIYOBANGLANEWS24 :
রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০১:৫৮ পূর্বাহ্ন

আজ বাংলা নববর্ষ: ‘আপনা-মাঝে শক্তি ধরো, নিজেরে করো জয়’

প্রিয়বাংলা নিউজ২৪
  • আপডেটের সময় : মঙ্গলবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২০
  • ৮৯১ বার দেখা হয়েছে।

‘মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা/অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা।’ বৈশাখকে এভাবে ধরাতলে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। বছরের আবর্জনা ধুয়ে, দুঃখ-হতাশা-গ্লানিময় অতীতকে মুছে নতুনের আবাহনে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ে এসেছে ১৪২৭ বঙ্গাব্দ। আজ মঙ্গলবার পহেলা বৈশাখ। একটি নতুন ভোরের সূচনার সঙ্গে শুরু হয়েছে নতুন বছর।

বারো মাসে তেরো পার্বণ উদ্যাপন করা বাংলায় বৈশাখ আসে উৎসবের রং ছড়িয়ে। পহেলা বৈশাখে জাতি-ধর্ম-বয়স, ধনী-দরিদ্র-নির্বিশেষে সব মানুষ মেতে ওঠে বর্ষবরণের সর্বজনীন উৎসবে। কিন্তু এবার নতুনকে আবাহনের কোনো আনুষ্ঠানিক আয়োজন নেই, নেই উৎসবের উত্তাপ। বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে সংকটের আবর্তে বিশ্বমানব। লকডাউন চলছে দেশে দেশে। মানুষকে ঘরে থাকার নির্দেশ জারি হয়েছে সর্বত্র। বাতিল হয়েছে সব ধরনের অনুষ্ঠান, জনসমাগম। বাংলাদেশেও তাই এবার বর্ষবরণের কোনো আয়োজন নেই।

বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক শুভেচ্ছাবার্তায় দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

বাংলা বর্ষবরণ উদ্যাপন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অসাম্প্রদায়িক উৎসব। এটি এই ভূখ-ের সব মানুষের প্রাণের উৎসব। এ উৎসবের প্রধান বৈশিষ্ট্য এর সর্বজনীনতা।

বাংলা নববর্ষের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক কৃষির। ইতিহাস থেকে জানা যায়, এ সম্পর্কের সূত্রেই বাংলা সাল প্রবর্তন করেন মোগল সম্রাট আকবর। গত শতকের ষাটের দশকে ঢাকার রমনা বটমূলে ছায়ানট সূচনা করে বাংলা বর্ষবরণ উৎসব। এই উৎসব বাঙালির আত্মপরিচয় প্রতিষ্ঠার আন্দোলন-সংগ্রামকে বেগবান করে।

পহেলা বৈশাখের ভোরে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর আয়োজনে মেতে ওঠে বাংলাদেশ আর পার্শ্ববর্তী ভারতের বাঙালি অধ্যুষিত জনপদগুলো। অনুষ্ঠানমঞ্চে শিল্পীরা সমবেত কণ্ঠে গেয়ে ওঠেন, ‘এসো হে বৈশাখ এসো এসো…। মুমূর্ষুরে দাও উড়ায়ে, বৎসরের আবর্জনা দূর হয়ে যাক যাক যাক…।’ গ্রীষ্মের খরতাপ উপেক্ষা করে বাঙালি মিলিত হয় সর্বজনীন এই অসাম্প্রদায়িক উৎসবে। দেশের পথে-ঘাটে-মাঠে, মেলায়-অনুষ্ঠানে, বিনোদনকেন্দ্র, গলি থেকে রাজপথে থাকে কোটি মানুষের প্রাণের চাঞ্চল্য। এবার এসবের কিছু থাকছে না।

নাগরিক জীবনে বর্ষবরণের অনুষ্ঠান ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে পুরোধা সংগঠন ছায়ানট। ছায়ানট সভাপতি সন্জীদা খাতুন বলেন, “বর্তমান মহামারিতে বিশ্বজুড়ে অগণ্য মানুষের জীবনাবসান ও জীবনশঙ্কার ক্রান্তিলগ্নে ছায়ানট এবার ‘উৎসব নয়, সময় এখন দুর্যোগ প্রতিরোধের’ এই অঙ্গীকার নিয়ে সীমিত আকারে অনুষ্ঠান উপস্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। বাংলাদেশ টেলিভিশন আজ মঙ্গলবার সকাল ৭টায় এ অনুষ্ঠানটি সম্প্রচার করবে।’

বাংলা বর্ষবরণের আরেক ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠান ১৯৮৯ সালে শুরু হওয়া ইউনেসকোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের মঙ্গল শোভাযাত্রাও বাতিল করা হয়েছে। তবে রীতি অনুসারে প্রতিবছরের মতো এবারও বাংলা বর্ষবরণের পোস্টার প্রকাশ করা হয়েছে। এটি ভার্চুয়ালি প্রকাশিত হয়েছে। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আপনা-মাঝে শক্তি ধরো, নিজেরে করো জয়’ বাণীকে এবারের বর্ষবরণের মূল প্রতিপাদ্য হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন বলেন, ‘প্রতিবছরই আমরা পোস্টার করি। এবারও করলাম। তবে এবার এটা করা হয়েছে প্রতিপাদ্যের ব্যাখ্যাসহ। প্রতিবার প্রতিপাদ্যটি আমরা নানা মোটিভের মাধ্যমে তুলে ধরি। এবার সেটি হবে না বলে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’

সব অনুষ্ঠান বাতিল করা হলেও টেলিভিশন চ্যানেলগুলো এ উপলক্ষে ধারণ করা বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করবে। সংবাদপত্রগুলো প্রকাশ করেছে ক্রোড়পত্র ও বিশেষ নিবন্ধ। দিনটি সরকারি ছুটির দিন।

এখান থেকে আপনার সোস্যাল নেটওয়ার্কে শেয়ার করুন

Leave a Reply

ক্যাটাগরির আরো খবর