1. news@priyobanglanews24.com : PRIYOBANGLANEWS24 :
সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ০৮:৪১ পূর্বাহ্ন

আজ পবিত্র হজ

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেটের সময় : মঙ্গলবার, ২৭ জুন, ২০২৩
  • ২৭৮ বার দেখা হয়েছে।

পবিত্র হজ আজ। এদিন সৌদি আরবের মক্কা নগরীর ঐতিহাসিক আরাফাত ময়দানে অনুষ্ঠিত হবে হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা। সেলাইবিহীন সাদা কাপড়ে সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সারাবিশ্ব থেকে সমবেত ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা আজ সেখানে হাজির হবেন। বিশ্বের নানা প্রান্তের লাখ লাখ মুসলমান আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে হাজির হয়েছেন মক্কায়। ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখরিত হচ্ছে পবিত্র আরাফাতের ময়দান।

এদিন তালবিয়া তথা ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হাম্‌দা, ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা শারিকা লাক’ (আমি উপস্থিত হয়েছি হে আল্লাহ, আমি উপস্থিত হয়েছি তোমার সমীপে, তোমার কোনো শরিক নেই, পুনরায় আমি উপস্থিত হয়েছি, নিশ্চয়ই সব প্রশংসা ও সকল নিয়ামত শুধু তোমারই জন্য, সব সাম্রাজ্যও তোমার এবং তোমার কোনো শরিক নেই) ধ্বনিতে গোটা আরাফাত ময়দান প্রকম্পিত হতে থাকবে।

আজ মহান আল্লাহর দরবারে হাজিরা দিতে আসা মুসলমানরা হজের দ্বিতীয় রুকন আদায়ের জন্য সূর্যোদয়ের পর মিনা থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে আরাফাতের ময়দানে সমবেত হবেন। সূর্যাস্ত পর্যন্ত বিদায় হজের স্মৃতিবিজড়িত এই ময়দানের চারদিকে হলুদ বোর্ড দিয়ে চিহ্নিত এলাকার ভেতরে অবস্থান করবেন হাজিরা। এখানেই হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হবে। এ নিয়ে হজযাত্রীদের মধ্যে এক ধরনের ধর্মীয় আবেগ ও অনুভূতি তৈরি হয়েছে। তাঁরা প্রায় সার্বক্ষণিক জিকিরে মশগুল রয়েছেন। তালবিয়া পড়ছেন।

তিন দিক থেকে পাহাড় পরিবেষ্টিত ঐতিহাসিক আরাফাত ময়দানে রয়েছে রহমতের পাহাড় (জাবালে রহমত)। এই পাহাড়টি দোয়া কবুলের স্থান। এ কারণে কোনো কোনো হজযাত্রী জাবালে রহমতে উঠেও ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল থাকবেন। এই ময়দানে একটি উঁচু পিলার রয়েছে। এই পিলারটিও দোয়া কবুলের স্থান। আদি পিতা প্রথম নবী হজরত আদম (আ.) এবং আদি মাতা হাওয়া (আ.) আরাফাতের ময়দানে এসে পুনর্মিলনের সুযোগ পেয়েছিলেন। এ জন্য তাঁরা এই ময়দানেই মহান আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছিলেন।

হিজরি সন অনুয়ায়ী ১৪৩৪ বছর আগে (১০ম হিজরি) ঐতিহাসিক এই আরাফাত ময়দানেই বিদায় হজের খুতবা দিয়েছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী, বিশ্বমানবতার মুক্তির দূত হজরত মুহাম্মদ (সা.)। এ কারণে আরাফাত ময়দানে উপস্থিত না হলে হজের আনুষ্ঠানিকতা পূর্ণাঙ্গ হয় না।

আরাফাত ময়দানের মসজিদে নামিরা থেকে জোহরের নামাজের আগে মিম্বরে দাঁড়িয়ে আরবি ভাষায় হজের খুতবা পাঠ করা হবে। এবার খুতবা দেবেন শায়খ ড. ইউসুফ বিন মোহাম্মদ। তিনি নামাজের ইমামতিও করবেন। হজের খুতবা বাংলাসহ প্রায় ১৪টি ভাষায় অনুবাদ করে শোনানোর প্রস্তুতি রয়েছে। হজযাত্রীরা হজের খুতবা শুনবেন। পবিত্র হজের খুতবার পর মসজিদে নামিরায় সমবেত মুসলমানরা এক আজান এবং দুই ইকামতে জোহর ও আসরের নামাজ একসঙ্গে জামাতে আদায় করবেন। কারও অবস্থান মসজিদে নামিরা থেকে দূরে থাকলে তিনি নিজের তাঁবুতে আলাদাভাবে আদায় করবেন জোহর ও আসরের নামাজ। সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্তের পর কিছু সময় পর্যন্ত হজযাত্রীরা আরাফাতের ময়দানেই অবস্থান করবেন।

হাজিরা সূর্য অস্ত যাওয়ার কিছু সময় পর মাগরিবের নামাজ আদায় না করেই আরাফাত ময়দান থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দূরে মুজদালিফার উদ্দেশে রওনা দেবেন। মুজদালিফায় গিয়ে এশার নামাজের সময় একসঙ্গে মাগরিব ও এশার নামাজ আদায়ের পর তাঁরা সেখানেই বিস্তীর্ণ খোলা মাঠে রাত যাপন করবেন। রাতে প্রতীকী শয়তানের উদ্দেশে নিক্ষেপের জন্য সেখান থেকে ৭০টি পাথর সংগ্রহ করবেন। সুবহে সাদিক পর্যন্ত মুজদালিফায় অবস্থান করা সুন্নাতে মুআক্কাদাহ।

হাজিরা আগামীকাল ১০ জিলহজ ফজরের নামাজ আদায়ের পর সূর্যোদয়ের আগে কিছু সময় অবশ্যই মুজদালিফায় অবস্থান করবেন। এর পর তাঁরা মুজদালিফা থেকে মিনায় যাবেন। সেখানে মিনার জামারায় (শয়তানের উদ্দেশে পাথর ছোড়ার স্থান) বড় শয়তানের উদ্দেশে প্রতীকী সাতটি পাথর নিক্ষেপ শেষে পশু কোরবানি এবং রাসুলুল্লাহর (সা.) আদর্শ অনুসরণে পুরুষরা মাথা মুণ্ডন করে গোসল করবেন। নারীরা চুলের অগ্রভাগ থেকে প্রায় এক ইঞ্চি পরিমাণ চুল কাটবেন। এর পর হাজিরা সেলাইবিহীন ইহরাম খুলবেন; পশু কোরবানি দেবেন। এর পর হাজিরা হজের তৃতীয় অর্থাৎ শেষ রুকন আদায়ের জন্য মিনা থেকে মক্কায় গিয়ে সুবহে সাদিকের পর থেকে কাবা শরিফ তাওয়াফ করবেন।

কাবা শরিফের সামনের দুই পাহাড় সাফা ও মারওয়ায় সাতবার ‘সাঈ’ (দৌড়ানো) করবেন। সেখান থেকে তাঁরা আবার ফিরে যাবেন মিনায়, নিজেদের তাঁবুতে। হজযাত্রীরা ১১ জিলহজ আবার মিনার জামারায় গিয়ে জোহরের নামাজের পর থেকে পর্যায়ক্রমে ছোট, মধ্যম ও বড় শয়তানকে সাতটি করে ২১টি পাথর নিক্ষেপ করবেন। একইভাবে ১২ জিলহজ আবারও ছোট, মধ্যম ও বড় শয়তানকে ২১টি পাথর নিক্ষেপের পর সন্ধ্যার আগে তাঁরা মিনা ত্যাগ করবেন। ১০ জিলহজ থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্তের আগ পর্যন্ত যে কোনো সময়ে কাবা শরিফকে ফরজ তাওয়াফের মধ্য দিয়ে শেষ হবে পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা।

এখান থেকে আপনার সোস্যাল নেটওয়ার্কে শেয়ার করুন

Leave a Reply

ক্যাটাগরির আরো খবর