ঢাকার দক্ষিন কেরানীগঞ্জে নিজ বাসায় খুন হওয়া মারুফ কাজী (৩০) হত্যায় জড়িত স্ত্রী রিনা আক্তার উর্মি ও তার পরকীয়া প্রেমিক ইমরান (২৬) কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সে সাথে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত হাতুড়ি ও রক্তমাখা কাপড়ও উদ্ধার করেছে। রোববার আদালতে স্বীকারউক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে গ্রেপ্তারকৃত স্ত্রী ও প্রেমিক।
পুলিশ জানিয়েছে, পরকীয়ার জেরে স্বামী মারুফকে তার স্ত্রী উর্মি ও প্রেমিক ইমরান মিলে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করেছে। হত্যার আগে উর্মি শরবতের সাথে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দেয় আর প্রেমিক ইমরান হাতুড়ি দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যা করে।
কেরানীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাবুদ্দিন কবির জানান, স্ত্রী উর্মির সাথে প্রেমিক ইমরানের দীর্ঘদিনের অবৈধ সম্পর্ক ছিল। একারণে উর্মি ও ইমরান পরিকল্পনা করে স্বামী মারুফকে হত্যা করে। সেই পরিকল্পনা মাফিক গত ২১ মে শনিবার রাতে ইমরান ও মারুফ বাহিরে গিয়ে একত্রে মদপান করে। মারুফ রাত দুইটার দিকে ঘরে ফিরে। ঘরে ফিরার পর উর্মি মারুফকে শরবতের সাথে ঘুমের ওষুধ খাওয়ায়। মারুফ অচেতন হয়ে পরলে উর্মি প্রেমিক ইমরানকে খবর দেয়। ভোররাতে ইমরান এসে হাতুড়ি দিয়ে মারুফের মাথার পিছনে আঘাত করে। এতে মারুফ সঙ্গে সঙ্গে মারা যায়। মারার জন্য ব্যবহৃত হাতুড়ি ও রক্তমাখা জামা কাপড় পাশের ডোবায় ফেলে দেয়। এ ঘটনার অনেক কিছুই জানতো মারুফ ও উর্মি দম্পতির একমাত্র ৮ বছরের কন্যা সুকন্যা, সেও আদালতে জবানবন্দী দিয়েছে।
সকালে খবর পেয়ে দক্ষিন কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে এবং সুরতহাল রিপোর্ট শেষে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মিটফোর্ড হাসপাতাল মর্গে প্রেরন করে। এসময় পুলিশের সন্দেহ হলে স্ত্রী রিনা আক্তার ওরফে উর্মি (২৭) সহ নয়জনকে আটক করে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এতে স্ত্রী উর্মি স্বীকার করেন যে তার প্রেমিককে নিয়ে স্বামী মারুফকে হত্যা করেছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নির্দেশে দক্ষিন কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ ও ডিবি দক্ষিণের যৌথ অভিযান পরিচালনা করে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের শুভাঢ্যা ডাকপাড়া জোড়া পুকুরপাড় এলাকা থেকে ঘাতক ইমরান’কে গ্রেপ্তার করা হয়। ইমরানের পিতার নাম আমানউল্লাহ। হত্যার ঘটনায় নিহতের বড় ভাই মারুফ কাজী বাদী হয়ে দক্ষিন কেরানীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.