1. news@priyobanglanews24.com : PRIYOBANGLANEWS24 :
বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ০১:২৯ পূর্বাহ্ন

বাস চালক ও হেলপারকে পিটিয়ে হত্যা, জড়িত যাত্রী ও সন্ত্রাসীরা দ্রুত গ্রেপ্তার হোক

রাশিম মোল্লা
  • আপডেটের সময় : মঙ্গলবার, ৯ এপ্রিল, ২০২৪
  • ৮৯ বার দেখা হয়েছে।

আশুলিয়ায় অতিরিক্ত ভাড়া চাওয়ায় এক যাত্রী ও তার ডাকে আশা কয়েকজন সন্ত্রাসীরা বাস চালক ও তার সহকারীকে পিটিয়ে হত্যা করেছে।

পালিয়ে বেঁচে যাওয়া বাসের হেলপার পুলিশকে জানান, তর্কাতর্কিতে চলন্ত বাসে এক যাত্রী প্রথমে হুমকি দেন। পরে বাস আশুলিয়ার ইপিজেড এলাকায় পৌঁছালে বেশ কয়েকজন যুবক বাসে উঠে বাসচালক ও সুপারভাইজারকে মারধর করে।
এরা কি আসলে মানুষ? আমারতো মনে হয় ওরা মানুষ নামের জানোয়ার, হায়েনা। প্রতিদিনই বাসে চলাচল করি। প্রায়ই দেখি এক শ্রেণীর কুলাঙ্গার যাত্রী তার গন্তব্যস্থলের অর্ধেক যাওয়ার পরেও কন্টাকটার ভাড়া চাইলে রেগে যান, গালমন্দও করেন। মা বাপ তুলেও বকা দেয়। শত শত যাত্রী। কে ভাড়া দিয়েছে, আর কে দেয়নি সেটা মনে রাখা অনেকের পক্ষেই খুব কঠিন। একজন ভাড়া দিয়েছেন, ভুলক্রমে তার কাছে ভাড়া চাওয়ার কারণে কন্টাকটারকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করা যেন নিত্য নৈমিতিক ব্যাপার। বহু যাত্রী আছেন যারা ড্রাইভার -হেলপারদের সঙ্গে কুকুরের মত ব্যবহার করেন। এসব বন্ধ হওয়া উচিত। ড্রাইভার হেলপারদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহারের করলে যাত্রীদের বিরুদ্ধেও শাস্তিমূলক বিধান করার দাবি জানাই। আমার বহু আত্মীয়-স্বজন রয়েছে যারা প্রবাসে ড্রাইভিং করেন। অথচ তারা বাংলাদেশে ড্রাইভিং করতে সাহস পান না। তাদের ভাষ্য বাংলাদেশের রোড ড্রাইভিং উপযোগী নয়। নিজের কোনও আত্মীয়-স্বজন ড্রাইভিং এর সঙ্গে জড়িত থাকলে তার সঙ্গে একটু কথা বইলেন- ড্রাইভিং কাকে বলে কত প্রকার, তখন বুঝবেন।

ড্রাইভার, হেল্পাররাও যে বাড়াবাড়ি করে না তা কিন্তু নয়। তবে সামান্য বাড়তি ভাড়ার জন্য মানুষ হয়ে আরেকটা মানুষকে হত্যা করা কোনভাবেই মানা যায় না। দুই টাকা ভাড়া বেশি নিলে আমরা যাত্রীরা ড্রাইভার হেলপারদের মারতে উদ্যত হই।

আপনি আমি সবাই জানি, রাস্তায় গাড়ি বের হলেই ট্রাফিক পুলিশকে টাকা দিতে হয়, রাজনৈতিক নেতাদেরকে চাঁদা দিতে হয়, বিভিন্ন সমিতিকে টাকা দিতে হয়, জ্যামের কারণে ১০ মিনিটের রাস্তা কখনো কখনো দুই ঘন্টা- তিন ঘন্টাও লেগে যায়। সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর কি এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে ভাড়া নির্ধারণ করেন? আসুন আমরা যাত্রীরা আগে রাস্তার চাঁদাবাজি, জ্যাম বন্ধ করি । সরকার নির্ধারিত ১৫০০ টাকার নামজারি কখনো কখনো ১৫ লাখ টাকাও দিয়ে থাকি।তাদেরকে মারা তো দূরের কথা উল্টো স্যার স্যার বলে ফেনা তুলে ফেলি।

আমিও একসময় মনে করতাম ড্রাইভার হেল্পাররা সব সময় যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে। একদিন আমার এক আত্মীয়ের (বাসের হেলপার) সঙ্গে এ নিয়ে কথা হলো, তিনি আমাকে বললেন রাস্তায় বের হলেই কাগজপত্র ঠিক থাকা সত্ত্বেও নানা অজুহাতে ট্রাফিক পুলিশ মামলা দেয়, টাকা নেয়, রাজনৈতিক নেতাদেরকে চাঁদা দিতে হয়, মালিক সমিতি, অমুক সমিতি- তমুক সমিতিকে টাকা দিতে হয়। এসব টাকা কিন্তু সরকার নির্ধারিত ভাড়ায় যুক্ত থাকে না। যে কারণে আমাদেরকে এসব খরচ তুলতে অতিরিক্ত লোক তুলতে হয়। কেউ কেউ ২/৪ টাকা বেশি ভাড়া নেয়। ঈদের সময় নামে বেনামে চাঁদার হার আরো বেড়ে যায়। যে কারণে ঈদের সময় যাত্রীদের কাছ থেকে আমাদেরকে একটু বেশি টাকা নিতে হয়। তআমাদেরওতো ছেলে-মেয়ে আছে। আমাদেরও তো ঈদ করতে হয়। মাসের ৩০ দিন কারো পক্ষে গাড়ি চালানো সম্ভব না। সর্বোচ্চ একজন ড্রাইভার- হেল্পার ১৫ থেকে ২০ দিন গাড়ি চালাতে পারেন। বাকি দিনগুলো বসে থাকতে হয়। এছাড়া কখনো কখনো বাসমালিক হঠাৎ করে বাসের ভাড়া বাড়িয়ে দেয়। ঈদ উপলক্ষেও বাসের ভাড়া বাড়ানো হয়। আমরা তো আর চাকরিজীবী নই। চাকরিজীবীদের ঈদ বোনাস আছে। আমাদের কোন ঈদ বোনাস নেইl আমাদেরওতো সন্তান আছে। ঈদ উপলক্ষে ওদের জামা কাপড় কিনে দিতে হয়। ঈদ উপলক্ষে একটু ভাড়া বেশি না নিলে কিভাবে আমরা পরিবার-পরিজন্যে ঈদ করব?

রাশিম মোল্লা
সিনিয়র সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী

এখান থেকে আপনার সোস্যাল নেটওয়ার্কে শেয়ার করুন

Leave a Reply

ক্যাটাগরির আরো খবর