1. news@priyobanglanews24.com : PRIYOBANGLANEWS24 :
শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০৪:৫৭ পূর্বাহ্ন

নবাবগঞ্জে আরএফকিউ প্রকল্পের তালিকা ফাঁস, সমালোচনার ঝড়

সিনিয়র প্রতিবেদক:
  • আপডেটের সময় : শনিবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২৩
  • ৭০৬ বার দেখা হয়েছে।

ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সিলমোহরকৃত আরএফকিউ (রিকুয়েষ্ট ফর কোটেশন) ১৫টি প্রকল্প কাজের একটি তালিকা যোগাযোগ মাধ্যেেম ফাঁস হয়েছে। তালিকাটি ইতিমধ্যে যোগাযোগ মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ায় শুরু হয়েছে সমালোচনা। নিয়ম না মেনে নবাবগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাসিরউদ্দিন আহমেদ ঝিলুর ঘনিষ্টদের তালিকায় রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে উপজেলা চেয়ারম্যানের দাবি তালিকাটি ব্যাপারে তিনি অবগত না। নিয়ম মেনেই সকল প্রক্রিয়া শেষে তালিকা করা হবে বলে জানান তিনি।

উপজেলা চেয়ারম্যানের কার্যালয়ের সিলমোহর দেওয়া ঐ তালিকা দেখা গেছে ১৫টি কাজের প্রকল্পের বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ ও যে ব্যক্তির নামে অনুমোদন করা হয়েছে তাদের নাম ও মোবাইল নাম্বার দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি কোন এলাকায় কি কাজের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে সেটাও সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে। তালিকায় দেখা যায়, শিকারীপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি টিপু সুলতান এর বাড়ি সংলগ্ন রাস্তা উন্নয়ন (ইউসুফ হারুন টিপু), জয়কৃষ্ণপুর বামুয়াহাটি রাজার বাড়ি মোড় হইতে বামুয়াহাটি জামে মসজিদ পর্যন্ত রাস্তা মাটি ও ইট সলিং দ্বারা উন্নয়ন (ভাইস চেয়ারম্যান), নয়নশ্রী ভাওয়াডুবি হুমায়ন এর বাড়ি হতে সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরীর বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা ইট সলিং দ্বারা উন্নয়ন (পলাশ চেয়ারম্যান), শোল্লা সিংজোর কৃষি ভূমিতে জলবদ্ধতা নিরশনের জন্য ড্রেন নির্মাণ (দেলোয়ার), যন্ত্রাইল মোহাম্মদ আলীর বাড়ি হতে পেশকার বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা সি.সি দ্বারা উন্নয়ন ও যন্ত্রাইল পশ্চিমপাড়া খালের রাস্তায় ড্রেনেজ সংস্কার (চেয়ারম্যান গং), যন্ত্রইল হরিস্কুল ক্লাব মাঠ সংলগ্ন রাস্তার ড্রেনের বাকী অংশ নিমার্ণ (চেয়ারমান গং), যন্ত্রাইল অপূর্ব সংসদ মাঠ হতে যন্ত্রাইল ভূইয়া বাড়ি মসজিদ পর্যন্ত রাস্তা আর.সি.সি দ্বারা উন্নয়ন (চেয়ারম্যান গং), বান্দুরা ইউপি’র কাঠালীঘাটা উচ্চ বিদ্যালয়ের মেইন গেট নির্মাণ (মুকলেস), কলাকোপা দোহার-নবাবগঞ্জ কলেজের ছাত্র সংসদের ওযুখানা মেরামত ও টয়লেট নির্মাণ (নাসির, ছাত্রলীগ), বক্সনগর অপুর রাস্তা সি.সি দ্বারা উন্নয়ন (হিরন), বাহ্রা উড়ারচর ব্রিজ হতে কাহুর যন্ত্রাইল সংযোগ ব্রিজ (বাগবাড়ি) পর্যন্ত রাস্তা ইট দ্বারা উন্নয়ন (সোহান ও শাকিল), কৈলাইল কবি নজরুল স্কুলের গেইট নির্মাণ (পাবেল/বাবুল), গালিমপুর মিজার মেম্বারের বাড়ির রাস্তার অসম্পূর্ণ অংশ উন্নয়ন (মিজার মেম্বার), চূড়াইন বাজারের লক্ষী মন্দিরের পাশে ঘাটলা নির্মাণ (কাউছার ও হৃদয়, ছাত্রলীগ) ও উপজেলা চেয়ারম্যানের অফিস রুম সংস্কার (অংশ-২) ( ফয়েজ আল মাসুদ টুটুল) এর নাম রয়েছে। এদের সবাই উপজেলার চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ট হিসেবে পরিচিত। এছাড়া তিনটি কাজে চেয়ারম্যান গং লেখায় এ নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। ‘চেয়ারম্যান গং’ বলতে কি বুঝানো হয়েছে প্রশ্ন অনেকের। ১৫টি প্রকল্পে ৭৬,৪২,৪৬০ টাকারর কাজের বিবরণ দেওয়া হয়েছে। যদি এটি উপজেলা পরিষদ থেকে তালিকা করা হয়ে থাকে তাহলে স্বেচ্ছাচারীতা করা হয়েছে বলে অভিযোগ অনেকের ।

নবাবগঞ্জের সচেতন মহল মনে করেন, তালিকাটি যদি উপজেলা পরিষদ থেকে করা হয়ে থাকে তাহলে সরকারের সুনাম ধরে রাখতে দ্রুত বাতিল করা উচিত। এছাড়া কেউ যদি পরিষদের বদনাম করতে তালিকাটি করে থাকে তাহলে উপজেলা পরিষদের সতর্ক বিজ্ঞপ্তি দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন তারা।

জানা যায়, প্রতিটি কাজের জন্য রিকুয়েষ্ট ফর কোটেশনের আওতায় একাধিক যোগ্য ঠিকাদারকে দর উল্লেখ করে ফরম দেওয়া হয়ে থাকে। সে ফরম পূরণ করে জমা দেওয়া পর আরএফকিউ প্রকল্প কমিটির সভাপতি, সদস্য সচিবসহ অনান্য সদস্যদের উপস্থিতিতে আলোচনা ও সিধান্ত অনুযায়ী প্রতিটি কাজে ১ জন করে ঠিকাদার নির্ধারণ করবেন। সেক্ষেত্রে সবচেয়ে কম দরে যে কাজ করতে পারবে তাকেই সেই কাজ দেওয়া হয়।

নবাবগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী জুলফিকার হক চৌধুরী বলেন, উপজেলা পরিষদ আরএফকিউ এর আওতায় কাজ করার জন্য একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্ত পরবর্তীতে সে বিষয়ে আর কোন প্রদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মতিউর রহমান বলেন, তালিকাটি আমিও পেয়েছি। তবে যেহেতু এটাকে অনুমোদন দেওয়া হয়নি তাই এর মূল্য নেই। প্রতিটি কাজেরই কিছু প্রক্রিয়া থাকে। প্রক্রিয়ার বাহিরে কোন কাজ হবে না। উপজেলা প্রকৌশলীর সাথে কথা বলে আরএফকিউ প্রকল্পের কাজগুলো ওপেন দরপত্র বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এসব উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন করা হবে।

নবাবগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন আহমেদ ঝিলু বলেন, তালিকার ব্যাপারে আমি অবগত নই। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমার অফিসে অনেক সময় অনেকে লোক আসা যাওয়া করেন। ‘কে কিভাবে সিল মেরেছে বা কেউ বাহিরে থেকে সিল বানিয়ে মেরেছে কী না বিষয়টি জানতে হবে। তালিকাটি বের হলো কিভাবে, কোথায় গেলো, কার কাছ থেকে গেলো বিষয়টি আগে আমার জানতে হবে’। তিনি আরো বলেন, অবশ্যই পরিষদের যেকোন কাজ নিয়মের মধ্যে হবে। নিয়মের বাহিরে টেন্ডার ছাড়া কোন কাজ হয় না, হওয়ার সুযোগ নেই এবং আর হলেই তার স্বীকৃতি নেই।

এখান থেকে আপনার সোস্যাল নেটওয়ার্কে শেয়ার করুন

Leave a Reply

ক্যাটাগরির আরো খবর