বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ঢাকার নবাবগঞ্জের মো. রাকিবের পরিবারকে সেলাই মেশিন দিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার রাকিবের মা সুইটি আক্তারের হাতে সেলাই মেশিন তুলে দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিলরুবা আক্তার।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিলরুবা ইসলাম বলেন, জুলাই বিপ্লবের শহীদ পরিবার এবং আহত সবার পাশে নবাবগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন রয়েছে। ইতোমধ্যে আমরা ২৬ নভেম্বর তাদের স্মরণে সভা করেছি, তখনো স্বল্প পরিসরে রাকিবের মাকে আর্থিক সহায়তা করা হয়েছিল। আজ তাকে একটি সেলাই মেশিন দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি যারা আহত আছেন তাদেরও খোজখবর রাখছি। ভবিষ্যতেও উপজেলা প্রশাসন যেকোনো প্রয়োজনে তাদের পাশে থাকবে।
সহযোগিতা পেয়ে রাকিবের মা সুইটি আক্তার বলেন, প্রায় ২০ বছর আগে স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করে অন্যত্র চলে যান। সন্তানদের আঁকড়ে ধরেই জীবন চলছিল তার। রাকিবের উপার্জনেই সংসার চলত তার। ছেলের অনুরোধেই কয়েক বছর আগে চাকরি ছেড়ে দেন তিনি। ছেলেকে হারিয়ে দিশেহারা পুরো পরিবার। উপজেলা প্রশাসন তার পাশে দাড়ানোর জন্য কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।
জানা যায়, ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার কামারখোলা গ্রামে মো. রাকিব পরিবার নিয়ে গাজিপুর থাকতেন। সে সাভার নর্দা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় একটি গ্রিল কারখানায় নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। ১৯ জুলাই বিকালে কাজ শেষে সহকর্মীদের সঙ্গে ভাড়া বাসা সখীপুরে ফেরার সময় মিছিল থেকে ছোড়া গুলিতে মুহূর্তেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন রাকিব। সহকর্মীরা তাকে উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে নিয়ে গেলে ডাক্তার মৃত ঘোষনা করেন। সেখানে তার লাশ ফেলে রাখা হয়। পরের দিন ২০ জুলাই সন্ধ্যায় ক্যান্টনমেন্ট থানায় সুরতহাল রিপোর্ট শেষে ময়নাতদন্ত করে। এর দুই দিন পর ২২ জুলাই পরিবারের কাছে লাশ স্থানান্তর করা হয়। এ সময় পুলিশ তার পরিবারকে লাশ নিয়ে দ্রুত সরে যেতে বলে। ৩০ মিনিটের মধ্যে লাশ দাফনের জন্য বলা হয়। নিরুপায় হয়ে লাশ আর নবাবগঞ্জ আনতে পারেনি রাকিবের পরিবার। পরে গাজীপুরের সখীপুরেই তাড়াহুড়া করে লাশ দাফন করা হয়।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.