1. news@priyobanglanews24.com : PRIYOBANGLANEWS24 :
বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ০৩:৩৯ অপরাহ্ন

শ্রী পঞ্চমীতে নবাবগঞ্জে গরুর রশি ছেঁড়া প্রতিযোগিতা

আলীনূর ইসলাম মিশু.
  • আপডেটের সময় : বৃহস্পতিবার, ২৬ জানুয়ারী, ২০২৩
  • ৪৫৫ বার দেখা হয়েছে।

লাঠি খেলা, ঘোড়া দৌড়, গরু দৌড় বা গরুর রশি ছেঁড়া আবহমান বাংলার ঐতিহ্যবাহী কিছু খেলার নাম। গরুর রশি ছেঁড়া প্রতিযোগিতা গ্রামবাংলার একেক অঞ্চলে ভিন্ন ভিন্ন নামে পরিচিত। কোথাও গরু দৌড়, গরুর রশি ছেঁড়া, আড়ং নামেও এ প্রতিযোগিতা বাঙালির ইতিহাসকে মনে করিয়ে দেয়। শ্রী পঞ্চমী ও সরস্বতী পূজা উপলক্ষে এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়ে গেল নবাবগঞ্জ উপজেলার শোল্লা ইউনিয়নে। অন্য দিকে বিল পল্লী যুব সংঘ ও চুড়াইন সাংস্কৃতিক সংঘও এই প্রতিযোগিতা আয়োজন করে এই দিনে।

শ্রী পঞ্চমী ও সরস্বতী পূজা উপলক্ষে বৃহস্পতিবার বিকালে শোল্লা মিলেনিয়াম বয়েজ ক্লাব গরুর রশি ছেঁড়ার প্রতিযোগিতা ও তিনদিন ব্যাপী বৈঠকী গান, বিচার গান ও লালন গীতি আয়োজন করে শোল্লা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠ প্রাঙ্গনে। হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী এই খেলা দেখতে ভিড় করেছিলেন হাজার হাজার মানুষ।

শোল্লা মিলেনিয়াম বয়েজ ক্লাবের সভাপতি নিখিল চন্দ্র মন্ডলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নবাবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের আহবায়ক ও শোল্লা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান ভূঁইয়া কিসমত।

বিকাল ৩টার পর থেকে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য গরু আসতে থাকে দ্যিালয়ের মাঠে। বিশাল মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে ওঠে উৎসুক জনতার ভিড়ে। নবাবগঞ্জ উপজেলা ছাড়াও লোকজন আসে দোহার, মানিকগঞ্জের হরিরামপুর, সিংগাইর উপজেলা থেকে। এ উপলক্ষে মাঠের চারপাশে বসে গ্রামীণ মেলা। মেলায় বিভিন্ন ধরনের মুখরোচক খাবার ও শিশুদের খেলনার পসরা সাজিয়ে থাকেন দোকানিরা। শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে সব বয়সের শৌখিন লোকজন কেনাকাটায় ব্যস্ত হয়ে পরেন। বিকিকিনিতেও ধুম পরে এদিন। তবে গরুর কাছি ছেঁড়ার মূল প্রতিযোগিতা শুরু হয় বিকাল ৪টার দিকে। এবারের আয়োজনে ছোট-বড় মিলিয়ে ২০টি গরু আসে বিভিন্ন এলাকা থেকে। এদের অধিকাংশ গরু ছিল বড় আকৃতির। গরুকে আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য গলায় মালা এবং গায়ে রঙ মাখিয়ে নিয়ে আসে।

কাছি ছেঁড়া প্রতিযোগিতা শুরু থেকে একই নিয়মে চলে আসছে এখানে। মাঠের মাঝখানে একটি শক্ত খুঁটি গাঁড়া হয়। খুঁটির সঙ্গে গরুর গলার দুই প্রান্তে কাছি দিয়ে ভালোভাবে বেঁধে দেওয়া হয়। এরপর আয়োজক ও গরুর মালিকপক্ষের লোকজন আতশবাজি ও ঢোল- তবলা বাজিয়ে গরুকে উত্তেজিত করতে পিছন থেকে হৈচৈ করে ধাওয়া দিলে গরু দৌড় দিয়ে গলার কাছি ছিড়ে ফেলে। যে গরু মোটা কাঁছি ছিঁড়তে পারবে সেই গরুর মালিককে সম্মানিত করা হয়। আর যদি কোনো গরু কাছি ছিঁড়তে না পারে, সেই গরু প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে পড়ে।

শোল্লা মিলেনিয়াম বয়েজ ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক রায়হান আহম্মেদ বলেন, অনুষ্ঠানটি আমাকে মুগ্ধ করে। এখানে সব বয়সের হাজার হাজার নারী-পুরুষ এসে আনন্দ উপভোগ করছেন। আমাদের যুবসমাজ বর্তমানে মাদকের ভয়াল ছোবলের শিকার। আমি মনে করি, গ্রামবাংলার এ ঐতিহ্যবাহী খেলা প্রতিটি উপজেলায় আয়োজন করা উচিত, যাতে যুবসমাজ লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলায় মনোনিবেশ করে মাদকের ভয়াল থাবা থেকে মুক্ত হতে পারে।’

প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ীদের মধ্যে টেলিভিশন ও দশটি মোবাইল সেট পুরষ্কার দেওয়া হয়।

এখান থেকে আপনার সোস্যাল নেটওয়ার্কে শেয়ার করুন

Leave a Reply

ক্যাটাগরির আরো খবর